ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে গোবরাকুড়া ও কড়াইতলী স্থল বন্দরের মাধ্যমে বহুল প্রতীক্ষিত ভারতীয় পাথর কয়লা আমদানি শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ই নভেম্বর) বেলা তিনটায় গোবরাকুড়া ও সারে তিনটা নাগাদ কড়াইতলী স্থলবন্দর দিয়ে পাথর কয়লা বোঝাই ভারতীয় ট্রাক সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে কয়লা আমদানি শুরু হলো। এই কয়লা আমদানিতে উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন কয়লা আমদানি ও রপ্তানি ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত হালুয়াঘাটের সকল কয়লা ব্যবসায়ী ও বন্দর শ্রমিকরা। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আজ কয়লা আমদানি শুরু হওয়ায় দুটি স্থলবন্দরে খুশির বন্যা বয়ে গেছে।
এ পর্যন্ত আমদানিকারকদের এলসি বাবদ প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ কোটি টাকা নানান জটিলতায় কয়লা আমদানি বন্ধ থাকায় হালুয়াঘাটের কয়লা ব্যবসায়ীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। কেউ কেউ ব্যাংক ঋণের চাপে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। তাই বহুল প্রতীক্ষিত এ কয়লা আমদানি আবারও শুরু হওয়ায় উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন অনেক ব্যবসায়ী।
জানতে চাইলে কয়লা আমদানিকারক মোঃ আওলাদ হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা এই ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম। কিন্তু ভারতীয় পরিবেশবাদীদের করা মামলায় এবং তাদের অভ্যন্তরীণ জটিলতায় এই ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। আল্লাহর অশেষ কৃপায় আবার ব্যবসা শুরু হয়েছে। আমরা আমাদের সকল ক্ষতি পুষিয়ে আবারো পূর্ণ উদ্যোমে ব্যবসা শুরু করতে পারবো বলে আশা রাখি।
স্থলবন্দরের কয়লা শ্রমিক কালা মিয়া জানান, দীর্ঘদিন বন্দর বন্ধ থাকায় খুব কষ্টে ছিলাম। আজ কয়লা আমদানি এবং পোর্ট খুলে দেওয়ায় বাঁচার আশা পেলাম।
জানা যায়, বিগত ২০১৪ সালের পর থেকেই কয়লা আমদানির নিয়ে টানাপোড়ান চলছিলো। ভারতীয় মামলা জটিলতা কাটিয়ে এবার মোটামুটি বানিজ্যিক সুযোগ সুবিধা পাবেন হালুয়াঘাটের গোবরাকুড়ার ব্যাবসায়ীরা, সেই সাথে বাড়বে শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ আর সরকার পাবে বাড়তি রাজস্ব এমনটায় আশা করেন হালুয়াঘাট স্থল বন্দর সি এন্ড এফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের কাস্টমস ও বন্দর বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ করিম শান্ত।
জানতে চাইলে কড়াইতলী কোল এন্ড কোক এসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ্ব এম. সুরুজ মিয়া জানান, হালুয়াঘাটে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা বহুল প্রতীক্ষিত ভারতীয় পাথর কয়লা ব্যবসা আবারো শুরু হলো। এ-ই কয়লা আমদানীর মধ্য দিয়ে অর্থনীতির উদ্ধার আবারো উন্মোচিত হবে। সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।
এ সময় ভারতীয় রপ্তানিকারকদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন জর্জ মারাক, বরুণ মারাক ও কার্তুষ মারাক, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এবং ভারতীয় কাস্টমসের প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশের আমদানিকারকদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক অশোক কুমার অপু, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সালেহ আহমেদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুর্শিদ আনোয়ার খোকন, হালুয়াঘাট ধান ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি হুমায়ুন কবির মানিক, হালুয়াঘাট-আমদানি রপ্তানি কারক গ্রুপের সহসভাপতি স্টিফেন স্টেনসন রংদী, গোবরাকুড়া কয়লা আমদানিকারক সমিতির সভাপতি নুর মোহাম্মদ ও সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী, হালুয়াঘাট স্থল বন্দর সি এন্ড এফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি আক্তার হোসেন প্রমুখ।
এ কয়লা আমদানির মধ্য দিয়ে হালুয়াঘাটের কয়লা ব্যবসায়ীরা আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন এবং হালুয়াঘাটের অর্থনীতিকে পুনরায় সচল করতে পারবেন এমনটি আশা প্রকাশ করছেন আমদানিকারক।