প্রকাশ: শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২০, ৪:১৫ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুর মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ৯ জনের বিচার শুরুর সিদ্ধান্ত দিয়েছেন আদালত। তবে এ মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত অন্যতম আসামি প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হককে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ গতকাল বৃহস্পতিবার দশ আসামির মধ্যে নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য ১৪ ডিসেম্বর তারিখ রেখেছেন। অভিযুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক মহিতুল আলম, প্রথম আলোর হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহপরান তুষার ও শুভাশীষ প্রামাণিক, অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ সরবরাহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জসীম উদ্দিন, মোশাররফ হোসেন, সুজন ও কামরুল হাওলাদার। দ-বিধির ৩০৪ এ ধারার এ মামরায় আসামিদের অবহেলার ফলে নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুর অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদ- অথবা অর্থদ- অথবা উভয়দ- হতে পারে। মোহাম্মদপুরে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে গতবছর ১ নভেম্বর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় নবম শ্রেণির ছাত্র আবরার রাহাত। মহাখালীর ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল প্রথম আলোর কিশোর সাময়িকী কিশোর আলো। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান কিশোর আলোর প্রকাশক; আর কিশোর আলোর সম্পাদক হলেন আনিসুল হক। অভিযোগপত্রের দশ আসামির মধ্যে কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হক কেন অব্যাহতি পেলেন, সে বিষয়ে বাদী বা আসামিপক্ষের আইনজীবীদের কেউ কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী গণমাধ্যমকে বলেন, মৌখিক আদেশে বিচারক এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি। আর বাদীর আইনজীবী ওমর ফারুক আসিফ বলেন, আদালতের লিখিত আদেশ পেলে সেখানে হয়তো কারণ জানা যাবে। আনিসুল হকের অব্যাহতিতে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে নাইমুল আবরারের বাবা মো. মুজিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘যিনি অবহেলার জন্য প্রধান দায়ী, তিনিই অব্যাহতি পেলেন। এটা কেমন হল! আদেশ বিস্তারিত দেখে সিদ্ধান্ত নেব উচ্চ আদালতে যাব কিনা। আবরারের বাবা মো. মুজিবুর রহমান গত ৬ নভেম্বর প্রথম আলো সম্পাদকসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে এ মামলা করেন। তদন্ত শেষে গত ১৬ জানুয়ারি প্রতিবেদন জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল আলিম। সেখানে মোট দশজনকে আসামি করে বলা হয়, নাইমুল আবরারের মৃত্যুর পেছনে কিশোর আলো কর্তৃপক্ষের ‘অবহেলার প্রমাণ’ পাওয়া গেছে। অভিযোগে বলা হয়, অনুষ্ঠানের জন্য যে বিদ্যুৎসংযোগ স্থাপন করা হয়েছিল, তা ‘অরক্ষিত’ ছিল। ঘটনাস্থলের খুব কাছে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থাকলেও আবরারকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক কায়সারুল ইসলাম সেদিনই অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে তাদের সবাই আদালত থেকে জামিন নেন। মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হলে গত ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা সিএমএম আদালত থেকে নথিপত্র মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়।