প্রকাশ: শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২০, ৩:১৫ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদকপ্রায় ১৬০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় ফারমার্স ব্যাংকের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতীর জামিন স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেল সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ গতকাল বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। রাশেদুল হক চিশতীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহরিয়ার বিপ্লব। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান গণমাধ্যমকে বলেন, আদালত রাশেদুল হক চিশতীর জামিন প্রশ্নে নতুন করে রুল জারি করেছে এবং রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার জামিনও স্থগিত করেছেন। ফলে বিচারিক আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে থাকা অর্থ পাচার তথা মানি লন্ডারিংয়ের এ মামলায় আপাতত রাশেদ চিশতীর কারামুক্তি হচ্ছে না বলেও জানান দুদক আইনজীবী। এর আগে এ মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া জামিন স্থগিত করেছিল চেম্বার আদালত। যা পরে আপিল বিভাগও বহাল রাখে। এরপর দুদক নিয়মিত আপিল করলে হাইকোর্টে শুনানি হয়। রাশেদুল হক চিশতীকে গত ১৯ মে ঢাকার ভার্চুয়াল বিচারিক আদালত জামিন দিয়েছিল। এ জামিন বিষয়ে উচ্চ আদালতে জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে দুদক।
২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর ফারমার্স ব্যাংকের ১৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪২ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় করা মামলায় ব্যাংকটির নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীসহ (বাবুল চিশতী), মাহবুবুল হক চিশতীর স্ত্রী রুজী চিশতী, ছেলে রাশেদুল হক চিশতী, ফারমার্স ব্যাংকের চাকরিচ্যুত এসভিপি জিয়া উদ্দিন আহমেদ ও চাকরিচ্যুত ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয় দুদক। ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল এ মামলাটি রুজু করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়, ব্যাংকিং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মাহবুবুল হক চিশতী ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহায়তায় স্ত্রী, সন্তান ও নিজের নামে এবং নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় ২৫টি হিসাব খোলেন। পরে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকদের সহায়তায় গ্রাহকদের হিসাব থেকে পাঠানো ১৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪২ টাকা ওই ২৫টি হিসাবে স্থানান্তর করেন। এসব টাকা নিজেদের হিসাবে স্থানান্তর, হস্তান্তর ও লেয়ারিংয়ের পাশাপাশি নিজেদের নামে কেনা শেয়ারের দাম পরিশোধ করেছেন। এজাহারে বলা হয়, লেনদেনের একটি বড় অংশই হয়েছে গুলশান শাখা থেকে। ২০১৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত বখশীগঞ্জ জুট স্পিনার্সের চলতি হিসাবে গুলশান প্রায় ১৩৯ কোটি টাকা জমা হয়। এর পুরোটাই নগদে তুলে নেওয়া হয়। বাকি ২১ কোটি টাকা বিভিন্ন হিসাব থেকে লেনদেন হয়। মামলার পরপরই চিশতীসহ চারজনকে রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে দুদক। অন্য তিনজন হলেন চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতী, ব্যাংকের এসভিপি জিয়াউদ্দিন আহমেদ এবং ফার্স্ট প্রেসিডেন্ট মাসুদুর রহমান খান।