প্রকাশ: শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২০, ৩:১৫ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদকবিরোধী দলের অংশগ্রহণ, সমান আচরণবিধি প্রতিপালন ও প্রার্থীদের এজেন্ট উপস্থিতি বিবেচনায় ঢাকা-১৮ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন মানের দিক থেকে ‘আরও নিচে নেমে গেছে’ বলে মনে করছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্বাচন ভবনে নিজের কার্যালয় থেকে ‘ঢাকা-১৮ উপনির্বাচন সম্পর্কে আমার বক্তব্য’ শীর্ষক এক লিখিত বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহন হয়। এ দুই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়েছে ইভিএমে। ঢাকায় ভোটের পরিবেশ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগের কোনো সত্যতা তারা পাননি। উপনির্বাচনের পরিবেশ মোটামুটি নিরুত্তাপ থাকলেও উত্তরায় একটি কেন্দ্রের বাইরে বোমাবাজি হয়েছে। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন সময়ে কমিশনের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করে আলোচিত মাহবুব তালুকদার ঢাকার এই উপনির্বাচন নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘গতকাল সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আমি ঢাকা-১৮ নির্বাচনী এলাকার নিকুঞ্জ, খিলক্ষেত ও উত্তরার ১৪টি কেন্দ্রের ৭০টি বুথ পরিদর্শন করি। নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আমার ধারণা হয়েছে, গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে এই নির্বাচন আরও নিচে নেমে গেছে। এ নির্বাচন ‘মোটেই অংশগ্রহণমূলক হয়নি’ মন্তব্য করে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমি বিরোধী দলের কোনো পোলিং এজেন্ট কোনো কেন্দ্রে দেখিনি, কেবল কুর্মিটোলা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খিলক্ষেতের ভোটকেন্দ্রে একটি বুথে মহিলা পোলিং এজেন্টের উপস্থিতি দেখতে পাই।’ মাহবুব তালুকদার বলেন, পুরো নির্বাচনী এলাকায় কেবল ‘একটি দলের’ পোস্টার, প্ল্যাকার্ড ও বিলবোর্ড তিনি দেখেছেন, যা আচরণ-বিধি অনুযায়ী নির্বাচনের আগে তুলে ফেলা উচিত ছিল। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কেবল প্রার্থীর বা দলের জয়-পরাজয় নয়। নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রে উত্তরণের একমাত্র অবলম্বন। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশীদারিত্বমূলক ও গ্রহণযোগ্য না হলে ক্ষমতার হস্তান্তর স্বাভাবিক হতে পারে না।’ এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য না হলে দেশে অস্থিতিশীলতা, সামাজিক অস্থিরতা ও ব্যক্তির নৈরাজ্য বৃদ্ধি পায়। তাতে নৈরাজ্য সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা বাড়ে। তিনি বলেন, ‘নৈরাজ্য প্রবণতা কোনো গণতান্ত্রিক দেশের জন্য মোটেই কাম্য নয়। আমি নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার প্রত্যাশা করি, তা না হলে দেশ অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে অগ্রসর হতে পারে।’