প্রধানমন্ত্রীর "নো মাস্ক, নো সার্ভিস" পদক্ষেপটি অনন্য সাধারণ উদ্যোগ: অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল
প্রকাশ: সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০২০, ১০:৩৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
এটা খুবই উদ্বেগজনক যে, অনেক দিন পার হওয়ার পরও করোনা মহামারিতে মৃত্যুর মিছিল থামছেই না। বরং শীতকালে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার যে আশঙ্কা ছিল তার লক্ষণ ইতিমধ্যেই দেখা গেছে। বাড়ছে মৃত্যু, সংক্রমণ এবং শনাক্তের সংখ্যাও। এ অবস্থায় করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই। বাঁচতে হলে স্বাস্থ্য নির্দেশনা মানতে হবে। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৫৩ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। সোমবার (৯ নভেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, শেরপুর সদরের সেন্ট্রাল কাউন্সিলর, বি এম এ, মেডিকেল অফিসার (এমসিএইচ-এফ পি) ডা. শারমিন রহমান অমি, দেশ ফাউন্ডেশন যুক্তরাজ্যের চেয়ারম্যান এবং যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মিসবাহ-উর-রহমান। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, করোনার যে দ্বিতীয় ঢেউ আসতে যাচ্ছে সেটা মোটামুটি অবধারিত। এখন এটা কতখানি কঠিন বা সহজ হবে সেটা নির্ভর করে আমাদের উপর, আমাদেরকে এটা প্রতিরোধের কথা চিন্তা করতে হবে। আমার কাছে মোটা দাগে মনে হয়, মানুষের মধ্যে তিন ধরনের শ্রেণি আছে যারা করোনাকে তিনভাবে দেখে। একদল মানুষ মনে করে করোনা এসেছে এটা থেকে যাবে দীর্ঘকাল। তারা করোনার ব্যাপারে অত্যন্ত সংবেদশীল। তারা সবসময় মাস্ক পরে থাকে এবং তারা সর্বদা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে। আরেকদল মানুষ মনে করে, করোনা থাকতে আসছে, এটা যেতে আসেনি এবং তারা তাদের নিয়তি স্রষ্টার উপর ছেড়ে দিয়েছেন। তারা ধরে নিয়েছেন যে, মরলে মরবো, বাঁচলে বাঁচবো; এটা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে লাভ নাই। এদের কাছেও মাস্ক থাকে, কিন্তু সেটা পকেটে থাকে। বেশি বিপদে পড়লে ঐটা নাকের উপর আনে। আবার তৃতীয় শ্রেণীর লোক আছে যারা ধরেই নিয়েছেন করোনা একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, এটা যদি বাংলাদেশে এসেও থাকে এখন ভারতে চলে গেছে, বাংলাদেশে এটা নাই। এখন করোনার বিরুদ্ধে আমাদের জিততে হলে আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে হবে না, আমাদেরকে শতভাগ হতে হবে। এটাই হচ্ছে করোনার ক্ষেত্রে আমাদের মূল সমস্যা। বাস্তবতা হচ্ছে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থামছে না। থেমে নেই মৃত্যুও। শনাক্তের সংখ্যাও অনেক। তবুও বাড়ছে না সচেতনতা। ছোঁয়াচে এ রোগের কোনো প্রতিষেধক নেই। কবে ভ্যাকসিন আসবে তারও নেই কোনো নিশ্চয়তা। এজন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার উপায়। মাস্ক পরা, সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, উপসর্গ দেখা দিয়ে হোমকোয়ারেন্টিনে থাকার মধ্য দিয়ে ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। বাঁচতে হলে এসব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। যদি আইন প্রণয়নের কথা বলে যেটা খুলনাতে আজ দেখলাম, আমার কাছে মনে হয় আইন প্রয়োগ করে সবাইকে মাস্ক পড়াতে পারবেন না। কারণ যারা আইন প্রয়োগ করবে তাদের মধ্যে আবার তিন ধরনের লোক আছে। কেউ বলে মাস্কের জন্য ফাইন করে লাভ নেই, কেউ বলে মাস্ক পরে নাই; পারলে এখনি জেলে ভরে দেও আবার কেউ বলে আচ্ছা এখন ছেড়ে দেও, পরের বার থেকে সাবধানে থেকো। যারা আইন প্রয়োগ করবে তারাও তো বাংলাদেশের মানুষ। আর যদি আইন কড়াকড়িভাবে প্রয়োগ করা হয় তাহলে এতো লোককে আপনি কোন কারাগারে নিয়ে ভরবেন? এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর যে উদ্যোগ, নো মাস্ক, নো সার্ভিস। এটা কিন্তু অনন্য সাধারণ উদ্যোগ। এই ঘোষণা আসার পর আমি বিস্তর ঘাটাঘাটি করে দেখেছি, আজকে পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাড়া এই নীতি বিশ্বের কোন রাষ্ট্র গ্রহণ করেননি।