প্রকাশ: সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০২০, ৯:৩৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
জীবিত পশুর (গরুর) রক্ত, অণ্ডকোষ, কলিজা ভুঁড়ি, নাভি কাঁচা খেয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এক যুবক। সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর এলাকার তারাগনে ব্যতিক্রমী এ ঘটনা ঘটেছে। প্রকাশ্য দিবালোকে আখাউড়া পৌর এলাকার তারেক নামে এক কিশোর মাঠে ঘাস খাওয়া এক গরুর রক্ত, অণ্ডকোষ, ভুঁড়ি, নাভি, কলিজা খেয়ে ফেলেছে। পা বেঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে পায়খানার রাস্তা কেটে ওইসব বের করে খেয়ে ফেলে সে।
এদিকে এ খবর মুহূর্তে এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের শত শত লোক ভিড় করেন। এ ঘটনার পর ওই কিশোরকে স্থানীয় লোকজন আটক করে। আটক তারেক একই এলাকার মো আমাল খাঁর ছেলে।
গরুর মালিক তারাগন পশ্চিম পাড়ার মো. আবু তাহের মিয়া বলেন, কিছুদিন পূর্বে প্রায় ৫০ হাজার টাকায় তিনি এই গরুটি ক্রয় করেন। প্রতিদিনের মতো গরুটিকে বাড়ির সংলগ্ন খোলা মাঠে ঘাস খেতে দেন তিনি। দুপুরে গরুটিকে দেখতে গেলে তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। সেই সঙ্গে গরুর ভুঁড়ি ও নাভি পড়ে আছে। এ অবস্থায় জীবিত গরুর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ খাওয়া ওই যুবক আমাকে দেখতে পেয়ে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ধাওয়া করে তাকে আটক করা হয়। সে গরুর ওইসব খেয়েছে বলে স্বীকার করে।
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় গরুটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পরে গরুটিকে জবাই করা হয়। আক্ষেপ করে গরুর মালিক মো. আবু তাহের আরো জানান, অনেক কষ্ট করে এই গরুটি ক্রয় করেছিলেন। কিন্তু এ ঘটনায় আমার বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আলম মিয়া বলেন, মানুষকে কত কিছু খেতে দেখেছি। কিন্তু জীবিত গরুর শরীর থেকে অঙ্গ প্রত্যঙ্গ খেতে দেখিনি। এখন এলাকার গরু নিয়ে অনেকটাই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন গরুর মালিকরা।
স্থানীয় বাসিন্দা মুর্শেদ মিয়া বলেন, আগে মাঠে গরু দিয়ে নিশ্চিন্তে বাড়িতে গিয়ে অন্যান্য কাজ করেছি। এখন দেখছি সতর্ক ছাড়া উপায় নাই। আমার কখনো এমন ঘটনা দেখিনি।
আখাউড়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মানিক মিয়া বলেন, এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। ধারণা করা হচ্ছে ওই ছেলেটির মানসিক সমস্যা রয়েছে। ওই ছেলের পরিবারকে খবর দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. কামাল বাশার বলেন, ঘটনাটি শুনে দ্রুত খোঁজ-খবর নিতে লোক পাঠিয়েছিলাম। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মানসিক সমস্যার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। তাকে দ্রুত চিকিৎসা দেয়া প্রয়োজন। তা না হলে আরো বড় ধরনের সমস্যা হবে।
এদিকে গরুর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ খাওয়া ছেলেটির বাবা মো. আমাল খাঁ জানান, তার ছেলের কিছুটা মানসিক সমস্যা রয়েছে। তবে সে এমনটা কেন করল তিনি নিজেও বুঝতে পারছেন না। তবে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত গরুর মালিককে ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাস দেন।