প্রকাশ: সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম | প্রিন্ট সংস্করণ
ভোটের ময়দানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সংখ্যার নিরিখে পিছিয়ে থাকলেও দৈনিক করোনা সংক্রমণ হারের তালিকায় শীর্ষেই রইল তাঁর দেশ আমেরিকা। এই নিয়ে লাগাতার তিন দিন! তার মধ্যেই গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ তথা ট্রাম্পের অন্যতম প্রধান উপদেষ্টা মার্ক মেডোস-এর সংক্রমিত হওয়ার খবর ‘ফাঁস’ ভাঁজ ফেলেছে অনেকের কপালেই।
আমেরিকার জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, গত শুক্রবারও ফের সে দেশে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১ লক্ষ ২৭ হাজার জন। দৈনিক মৃত্যুও হাজার ছাড়িয়েছে। তার মধ্যেই মার্ক মেডোসের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। যদিও কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, হোয়াইট হাউসের এক আধিকারিক নাম না-প্রকাশের শর্তে জানিয়েছেন, তিনি যে সংক্রমিত হয়েছেন তা যেন কেউ না জানতে পারেন, প্রাথমিক ভাবে নাকি সেই চেষ্টাই চালিয়েছিলেন মেডোস।‘কোভিডজয়ী’ ট্রাম্পের মতো মেডোসকেও সংক্রমণ রোধের বিধিনিষেধ পালনের গুরুত্বকে তুচ্ছ করতে দেখা গিয়েছে একাধিকবার। ট্রাম্পের শেষবেলার নির্বাচনী প্রচারে প্রেসিডেন্টের ছায়াসঙ্গী ছিলেন তিনি। এমনকি, নির্বাচনের দিন সন্ধ্যায় হোয়াইট হাউসে আয়োজিত পার্টিতেও উপস্থিত ছিলেন মেডোস। ফলে তাঁর থেকে সংক্রমণ আরও ছড়ানোর আশঙ্কা এখনই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এ দিনই ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের অন্যতম প্রধান সহকারী নিকট্রেনারের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবরও মিলেছে।আশঙ্কা, আমেরিকায় মোট সংক্রমিতের সংখ্যা খুব তাড়াতাড়িই এক কোটি ছাড়াবে। ইতিমধ্যেই সে দেশে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২,৩৬,০০০ জন। আসন্ন শীতে তা আরও বড় থাবা বসাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতে ভাইরাস দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ দিকে সামনেই উৎসবের মরসুম। বাইরে বেরিয়ে হুল্লোড়ের সুযোগ এ বার না মিললেও বাড়িতে উদ্যাপন চলবেই। ফলে এই সময়ে সংক্রমণের গতি যে বাড়বেই তা নিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত তাঁরা।
এ দিকে করোনা সংক্রমণের নয়া ভরকেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে ইউরোপ। তড়তড়িয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। বেশ কয়েকটি দেশে দ্বিতীয় দফার লকডাউন শুরু বা বহু দেশে বিধিনিষেধের কড়াকড়ির হিড়িক তা আদৌ সামাল দিতে পারছে কি? প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ইউরোপে সংক্রমিতের সংখ্যা ১ কোটি ২০ লক্ষ পেরিয়েছে। এসব দেশে প্রাণ হারিয়েছেন তিন লক্ষের উপরে। সাম্প্রতিককালে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেখেছে ব্রিটেন, ইটালি, ফ্রান্স, স্পেন এবং রাশিয়া।বাড়তে থাকা সংক্রমণের গতিবেগ নিম্নমুখী করতে গত শনিবার থেকে মাসখানেকের জন্য আংশিক লকডাউনে গেছে জার্মানি। বন্ধ থাকবে সিনেমা, থিয়েটার, রেস্তরাঁ ইত্যাদি। তবে স্কুল, অত্যাবশ্যক পরিষেবা এবং সুপারমার্কেট খোলা থাকবে এই দফায়।অন্য দিকে, সাধারণ সর্দি-কাশির প্রতিরোধে শরীরে তৈরি হওয়া কয়েক ধরনের অ্যাটিবডিও নাকি রক্ষা করতে পারে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসকে। ইউরোপীয় বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন এমনটাই। অনেক সময়ে রক্ষা কবচের মতো কাজ করতে পারে এই অ্যান্টিবডিগুলি। এই সংক্রান্ত এক পরীক্ষায় অনেকের, বিশেষত শিশুদের শরীরে এমন অ্যাটিবডির সন্ধান মিলেছে যা অনায়াসে নোভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণকে টেক্কা দিতে সক্ষম। অথচ তাঁরা কখনই করোনা সংক্রমিত হননি।