#প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণ নেতৃত্বে দেশ আজ করোনা সংকট মোকাবিলায় সফল : আফজালুর রহমান বাবু
#শেখ হাসিনা করোনার সকল ধাক্কা সামলিয়ে দেশের মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন : উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার
#বাংলাদেশের সকল উন্নয়ন ধাপে ধাপে শেষ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা :রহমান খলিলুর মামুন
অবশ্যই বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশ। তা না হলে ১৯৭১-এ রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হতো না। বাংলার কৃষক ও শ্রমিকের শ্রমে-ঘামে, ফসলে তথাকথিত ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ এখন উদ্বৃত্ত খাদ্য ও বৈদেশিক রেমিট্যান্সে ভরে উঠেছে। মাথাপিছু জাতীয় আয় বাড়ছে। চাষাবাদের জমি দিন দিন কমলেও ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানির মতো বাড়তি ফসল উৎপাদন করছে এ দেশের কৃষক। সামাজিক উন্নয়নে ভারতকেও পেছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশ গড়ছেন শেখ হাসিনা। এমন তৎপরতাই বাংলাদেশের সামনে অফুরন্ত সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচিত হয়েছে। শেখ হাসিনার গুণে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে সারা বিশ্বে। বাংলাদেশের সমৃদ্ধির গল্প আজ বিশ্বজুড়ে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৫২ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। রবিবার (৮ নভেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, খ্রিষ্টান এসোসিয়েশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার, ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর সেকুলার বাংলাদেশ, জেনেভা, সুইজারল্যান্ড এর সভাপতি এবং সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা রহমান খলিলুর মামুন। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
আফজালুর রহমান বাবু বলেন, ধন্যবাদ আমাকে আজকের ভোরের পাতা সংলাপে কথা বলার সুযোগ দেওয়ার জন্য। আসলেই এটি বিড়ল ঘটনা যে, সারা পৃথিবী যখন এই করোনা সময়ে বিপর্যস্ত হয়ে আছে, সবাই যখন এক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, মানুষ চাকরী হারাচ্ছে, তখন সেই মুহূর্তে আমাদের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চাকাকে সক্রিয় রেখে আমাদের জননেত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাকাকে যেভাবে শক্ত হাতে ধরে রেখে তা বেগবান রাখছেন তা আসলেই অতুলনীয়। করোনা মহামারি বিশ্ব অর্থনীতিতে রীতিমতো ধস নামিয়েছে। অনেক দেশেরই জিডিপির প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক ধারায় চলে গেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও করোনা আঘাত হেনেছে। রফতানি আয় কমে গিয়েছিল। রাজস্ব আদায়ের হার কমেছে। মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি কমেছে। চাকরি হারিয়েছে লাখো মানুষ। দারিদ্র্যের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কি পারবে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে যেতে- সৃষ্টি হয়েছিল এমন প্রশ্ন বা সন্দেহের। তা কেটেছে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) এবং সরকারের যৌথ পর্যবেক্ষণে। পৃথিবীতে অল্প কয়েকটি দেশের মধ্যে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। আজকে শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের কারনেই এটা সম্ভব হয়েছে। অনেক দেশেরই জিডিপির প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক ধারায় চলে গেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও করোনা আঘাত হেনেছে। রফতানি আয় কমে গিয়েছিল। রাজস্ব আদায়ের হার কমেছে। মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি কমেছে।। দারিদ্র্যের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আশা করা যায়, ২০২৪ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে চলে যাবে। কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে চলেছে। অবকাঠামো খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান বাস্তবতা। বিদ্যুতে দেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ। মাথাপিছু আয় দুই হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। করোনার মধ্যেও বর্তমান অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রফতানি আয়ে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তৈরি পোশাক রফতানি ছাড়া অন্যান্য খাতেও রফতানি বাড়ছে। বাংলাদেশের ওষুধ যাচ্ছে ১৬৬টি দেশে। ‘করোনার কারণে রফতানি প্রক্রিয়ায় কিছুটা ব্যাঘাত ঘটলেও গত দুই মাসে আমাদের আশাব্যঞ্জক রফতানি হয়েছে। আমরা কিন্তু কামব্যাক করতে শুরু করেছি। সব খাতে আমাদের এইযে সামগ্রিক উন্নয়ন হয়েছে, এই যে প্রান্তিক লেভেলে এভাবে দেশের গরীব মানুষদের যেভাবে সাহায্য করা হয়েছে এটা শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব বলেই সম্ভব হয়েছ। করোনা পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার একক বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী দিকনির্দেশনায় কাজ করে যাচ্ছে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা। করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাব শুরু হওয়ার পর থেকেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার এই সংকট মোকাবিলায় বিভিন্ন বাস্তবমুখি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে অগ্রসর হচ্ছে। আর এই সব পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের একক কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার বলেন, আমরা একটা অনিশ্চিত পৃথিবীর মধ্যে অনিশ্চিত সময় পার করছি এখন। যখন সারা পৃথিবীতে একটা অচেনা অদেখা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে সময় পার করছি আমরা। এতো বড় একটা মহামারীর মধ্যেও কিন্তু আমরা একটা সুখের অবস্থায় বিরাজমান আছি। আমাদের সাম্প্রতিক সময়ে বেস কিছু অর্জন এই মহামারি সময়ে নতুন করে বাচার আশা যোগাচ্ছে। যেখানে সারা পৃথিবী হতাশায় ঝুলছে, এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের এই ভয়াবহ হারের পিছনেও এই মহামারি করোনাকে দায়ী করা হচ্ছে, সেখানে আমরা অনেক ভালো অবস্থানে আছি। ঠিক সেই পরিস্থিতিতে দাড়িয়ে পৃথিবীর অন্নতম একটা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কাজ চালিয়ে আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে চমক দেখিয়ে যাচ্ছেন। সারা পৃথিবীতে যে যে মহামারি চলছে যা কিনা সারা বিশ্বের সবচে শক্তিশালী দেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপটকে উলট-পালট করে দিয়েছে সেখানের আমাদের মত দেশে আমদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনার সকল ধাক্কা সামলিয়ে সবার মুখে হাসি ফুটিয়ে দিচ্ছে। অতি সম্প্রতি আমাদের উন্নয়ন সূচক নিয়ে অনেক কথা বলা হচ্ছে, তা কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে পউছাচ্ছে না। সাধারণ মানুষ শুধু এটা দেখেছে যে, তারা চাল-ডাল পাচ্ছে কিনা, খাবারের অভাবে কেউ মারা যাচ্ছে কিনা, চিকিৎসার অভাব হচ্ছে কিনা। আমাদের যে অর্থনৈতিক কাঠামোর যে শক্তি রয়েছে এটার মধ্য থেকে এই মহামারি মোকাবেলায় এই সমস্যা গুলো বাংলাদেস সম্মুখীন হয়নাই। পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ করে স্বাধীন করা এ দেশটার মানুষ আগে থেকেই দুঃসাহসী। ঝুঁকি নিয়ে সাহসিকতার সাথে দেশে যেমন মানুষ থেমে ছিল না, যার যার কাজ করেছে, প্রবাসীরাও হাত পা গুটিয়ে বসে ছিলোনা বলেই আজ রেমিট্যান্স, রিজাভ, রাজস্ব বাড়ছে। দুঃসময়ে পোশাক কারখানা গুলো আশার আলো দেখাচ্ছে। বায়ারগণ ঝুঁকছেন বাংলাদেশের দিকে। আমাদের সাহসিকতা, সব পরিস্থিতিতে কাজ করার ইচ্ছা শক্তি আমাদের এগিয়ে নিচ্ছে, এগিয়ে নিবে গোটা দেশকে। বাংলাদেশ এখন আর হেনরি কিসিঞ্জারের 'তলাবিহীন ঝুড়ি' নয়। ইতোমধ্যে সরকার ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চল কিছু কিছু পণ্যের জন্য ডেডিকেটেড করা হচ্ছে। আমাদের রয়েছে প্রতিযোগিতামূলক শ্রম বাজার। এছাড়া কর্পোরেট ট্যাক্স, ভ্যাট কমানোসহ কর অব্যাহতি; দ্রুত ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু; ভূমি অধিগ্রহণ সুবিধা ও ব্যাংকিং জটিলতা নিরসনসহ একগুচ্ছ প্রস্তাবনা সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে দেয়া আছে। সেগুলোর বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে বিদেশিরা খুবই আত্মবিশ্বাসী হবেন। সুতরাং যে সম্ভাবনার বাংলাদেশে বা উন্নয়নের বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে এটা শুধু উন্নয়ন নয়, একটি দুঃখের, কষ্টের এবং একটি অনিশ্চিত সময়েও বাংলাদেশের কোন দুরবস্থার মধ্য দিয়ে যায়নি।
রহমান খলিলুর মামুন বলেন, আজকের সংলাপের সঞ্চালক ও অতিথি সহ সকল দর্শকবৃন্দদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি আর ভোরের পাতার প্রতি আমার আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো এই জন্য যে আজ ভোরের পাতা এতো সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে সংলাপের আয়োজন করে আমাকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আজ থেকে আড়ায় দশক আগে ১৯৯৩ সালের অক্টোবর মাসে আমি ইউরোপের সুইজারল্যান্ডে এসেছিলাম। তখন আমার পেশা ছিল সাংবাদিকতা। পরবর্তীতে আমি এখানে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে আমি এখানে থাকা শুরু করি। আজকে সাংবাদিকতা পেশায় যে উন্নতি হয়েছে তখনকার সময়ে এতো উৎকর্ষতা ছিলোনা। আমি যখন এই সুইজারল্যান্ডে এসেছিলাম তখন এখানে আমদেরকে রিফিউজি হিসেবে ধরা হতো। কারণ আমরা একটি রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে এখানে চাকরী পাওয়ার জন্য এখানে হন্য হয়ে ঘুরতে হয়েছিল তখন। সেই জায়গা থেকে আজকের এই একবিংশ শতকে এখানকার প্রেক্ষাপট অনেক ভিন্ন। আজকে এখানে অনেক বাংলাদেশীরা বেবসা প্রতিষ্ঠান করেছে, আমার নিজেরও এখানে একটা রেস্টুরেন্ট আছে। এখানে তারা ব্যবসা করে বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে। যে সমস্ত যুবকেরা এখানে রিফিউজি হিসেবে বসবাস করতো তারা অনেকেই আজ স্থায়ীভাবে বসবাস করছে, অনেকেই আজ এখানে নাগরিকত্ব করে নিয়েছে, এবং তারা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ভালো অবস্থানে আছে। আমি এইসব কথা এইকারনেই বলছি যে, আজ থেকে ২৫ বছর আগে বাংলাদেশিদের এখানে যে অবস্থান ছিল তার থেকে এখন অনেক পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশীরা ইউরোপের মতো এই একটি রাষ্ট্রে উন্নয়নের অংশীদার। আমরা এখন এখনাে রিফিউজি না এখানে। বৈশ্বিক করোনাভাইরাস (কোভিড- ১৯) মহামারির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক বিপর্যয় বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশকেও বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বিশাল অঙ্কের বিদেশি বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনা কিছুটা হলেও আশার আলো দেখাচ্ছে। মূলত, মার্কিন-চীন সম্পর্কের উত্তেজনার প্রভাবে বৈশ্বিক বাণিজ্যে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থায় বৈচিত্র্য আনায়নে ব্যাপক তৎপরতা চলছে। এমন তৎপরতাই বাংলাদেশের সামনে অফুরন্ত সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচিত করেছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, সম্ভাবনার এমন সুযোগ কাজে লাগাতে লক্ষ্যভিত্তিক, সময়োপযোগী এবং কেন্দ্রীভূত বিনিয়োগ আকৃষ্টকরণে প্রতিবন্ধকতা দূর করার যেসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে সেগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন।