প্রকাশ: রোববার, ৮ নভেম্বর, ২০২০, ৮:১২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
পাওনা পাঁচশ' টাকা ফেরত চাওয়ায় আট বন্ধু মিলে তাসিনকে নির্মমভাবে খুন করে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের ১৮ মাস পর পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা।
শুক্রবার পিবিআই-এর নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার এসপি মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, ২০১৯ সালের ১ মে রূপগঞ্জের পূর্বাচলের কাঞ্চন এলাকায় লেকের পানিতে ডুবিয়ে তাসিন নামের এক যুবককে আট বন্ধু মিলে হত্যা করেছিল। পিবিআই তাদের পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের পর আসামিদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নিহত তাসিন হত্যা মামলার সন্দেহজনক আসামি মো.নজরুল ইসলামকে ৪ নভেম্বর ভোরে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পিবিআইয়ের একটি বিশেষ টিম। নজরুল ভোলা জেলার ভেদুরিয়া থানার আবদুল মালেকের ছেলে। পরে নজরুলের দেয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরো চার আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে আসামী নজরুল পুলিশ ও আদালতে জবানবন্দি দেয় যে, ঘটনার আনুমানিক ২ মাস আগে তার কিছু টাকার প্রয়োজন হলে সে প্রতিবেশী বন্ধু তাসিন এর কাছ থেকে ৫০০ টাকা ধার নেয়। এর আটদিন পর তাসিন তার পাওনা টাকা ফেরত চাইলে নজরুল ৪/৫ দিন সময় চাইলে তাসিন তাকে গালাগালি করে এবং হুমকি দেয়। তাসিনের আচরণে ক্ষিপ্ত হয়ে নজরুল এর দুইদিন পর তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু শুক্কুর এর সঙ্গে পরামর্শ করে এ পরিকল্পনা করে।
সেই পরিকল্পনা অনুসারে ২০১৯ সালের ১মে বেলা আনুমানিক এগারোটার সময় নজরুল, তার আরো সাত বন্ধু শাওন, ইমরান, শামীম, আব্বাস, তাহের, নাদিম ও শুক্কুর আলী মিলে তাসিনকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে দুইটি অটোরিকশা যোগে রূপগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে তারা রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল ৩০০ ফুট সড়কের কাঞ্চন এলাকার নির্জন লেকের পাড়ে গিয়ে পৌঁছায়। একটি হোটেলে একসঙ্গে নাশতা করে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাসিনকে নিয়ে ইমরান, আব্বাস, শুক্কুর, তাহের, নাদিম, শাওন ও নজরুল লেকের পানিতে নামে।
শামীম লেকের পাড়ে দাঁড়িয়ে পাহারা দিতে থাকে। কোন লোকজন দেখলে সে সবাইকে সতর্ক করবে। এক পর্যায়ে নজরুল ও শুক্কুর অন্যান্যদের বলে ওঠে তাসিনকে ধর। তখন শাওন তাসিনের হাত জাপটে ধরে, শুক্কুর তাসিনের গলায় চেপে ধরে, ইমরান তাসিনের পা জাপটে ধরে এবং নজরুল তাসিনের ঘাড় ধরে মাথা ও মুখ পানিতে ডুবিয়ে রাখে। কিছুক্ষন পর তাসিন পানির নীচে তলিয়ে যায়। তাসিনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে লাশ লেকের পানিতে ডুবিয়ে গুম করে তারা নিজ নিজ বাসায় চলে আসে।
পিবিআই এর জেলা এসপি মো: মনিরুল ইসলাম জানান, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।