নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পিলকুনি এলাকায় জমি দখল করতে ৪ বছর ধরে এক বৃদ্ধসহ তার পরিবারকে পানিবন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে। সাখাওয়াত হোসেন নামের ওই বৃদ্ধের ৫ শতাংশ জমি নিয়ে গিয়েছিলেন হাজী সেলিম। মঙ্গলবার ফতুল্লা রাজস্ব সার্কেলের (ভূমি) সহকারী কমিশনার সেই জমি ফিরিয়ে দিয়েছেন বৃদ্ধকে।
সাড়ে ১৫ শতাংশ জমি কিনে সেখানে গত ৩০ বছর ধরে পরিবার নিয়ে বাস করছেন সাখাওয়াত হোসেন নামের ওই বৃদ্ধ। সেখান থেকে ৫ শতাংশ জায়গা হাজী সেলিম তার নামে নামজারী করেন। পরে এর বিরুদ্ধে ফতুল্লা এসি ল্যান্ড অফিসে মিস কেইস করেন ওই বৃদ্ধ। সেই মামলায় মঙ্গলবার বৃদ্ধ সাখাওয়াত হোসেনের পক্ষে রায় দেন সকারী কমিশনার (ভূমি)।
তবে গত চার বছর ধরে বৃদ্ধকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছেন হাজী সেলিম। ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, লোকজন নিয়ে তার বাড়ি ঘেরাও করে চারদিকের রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়। এখনও তারা ওই বাড়িতে বাস করেন, তবে পানিবন্দি অবস্থায়।
২০১৬ সালের ৩১ মার্চ হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে মিস কেইস দায়ের করেন বৃদ্ধ সাখাওয়াত হোসেন। সেই মোকদ্দমায় হাজী সেলিমকে কয়েকবার হাজির হওয়ার নোটিশ করা হলেও তিনি হাজির হননি। হাজী সেলিমের পক্ষে নিযুক্ত আইনজীবীরা মামলা পরিচালনা করেছেন। চার বছরের বেশি সময়ের পর মঙ্গলবার সেই মিস কেইসের রায় দেন সহকারী কমিশনার।
ভুক্তভোগী সাখায়াত হোসেন বলেন, হাজী সেলিম আমার কেনার ৩ থেকে ৪ বছর পর পাশের একটা জায়গা কিনছে। এরপর তার লোকজন দিয়া আমার বাড়ি ঘেরাও কইরা দখল করতে চাইছে। কিন্তু এলাকার মানুষের জন্য পারেনি। পরে সে আমার চারদিক বন্ধ কইরা দিছে। চারপাশে আমাগো পানিবন্দি কইরা রাখছে। পরে হাজী সেলিম আমার সাড়ে ১৫ শতাংশ জায়গা থেকে সাড়ে ৫ শতাংশ জায়গা মিউটেশন (খতিয়ানভুক্ত) করাইয়া নিয়া গেছে।
ফতুল্লা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আজিজুর রহমান জানান, মিস কেইস মামলাটি কয়েক বছর ধরে চলছিল। সাংসদ হাজী সেলিম পক্ষকে অনেকবার সময় দেয়া হয়েছে। আমরা এই মামলাটির পর্যালোচনাসহ কাজগপত্র যাচাই-বাছাই করে মঙ্গলবার দুপুরে রায় দেয়া হয়েছে।
মিস কেইস সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাল ভূমি অফিসে হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে মোকদ্দমা দায়ের করেন সাখাওয়াত হোসেন। সেই মোকদ্দমায় হাজী সেলিমকে কয়েকবার হাজির হওয়ার নোটিশ করেন ভূমি সহকারী কর্মকর্তারা। তবে তিনি হাজির হননি। হয়েছেন তার লোকজন। মঙ্গলবার ওই মোকদ্দমাটি নিস্পত্তির জন্য শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছিল। শুনানিতে হাজী সেলিম ছিলেন না। তবে তার লোকজন এসেছিলেন। তারা ভূমি সহকারী কমিশনারের কাছে আবার সময় দাবি করেন। তবে তা মঞ্জুর করেননি।
জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন জানান, ওই বৃদ্ধ আমাদের কাছে সহযোগিতা চাইলে আমরা তাকে পানিবন্দি অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে সহযোগিতা করবো।