প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২০, ৭:৩৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
মোংলা বন্দরের কর্মচারী সংঘ (সিবিএ)’র সাধারন সম্পাদক ফিরোজ’র হাতে সভাপতি সাইজদ্দিন মাষ্টর লাঞ্চিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বন্দরের সিবিএ ভবনের অফিস কক্ষে কার্য নির্বাহী কমিটির অন্য নেতৃবৃন্দ ও সদস্যদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে বন্দর বভন ও সিবিএ অফিস এলাকায় দু’গ্রæপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সম্পাদক ফিরোজের অনৈতিক কর্মকান্ড ও সিবিএর গঠনতন্ত্র বহিঃভুত কার্যক্রমের কারনে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানায় সংঘের সভাপতি। তবে অপর একটি পক্ষ দাবী করেছে, বন্দরের নিয়োগ সংক্রান্ত লেনদেন নিয়ে তাদের অভ্যান্তরিন কোন্দোলের কারনে এঘটনা ঘটতে পারে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মোংলা বন্দর কর্মচারী সংঘের খুলনাস্থ একটি শাখা কমিটি গঠন নিয়ে বেশ কয়েকদিন যাবত কথাবার্তা চলে আসছিল। বন্দরের বর্তমান সাধারন সম্পাদক ফিরোজ সভাপতিকে না জানিয়ে তার নিজেস্ব প্যানেলের লোক দিয়ে গোপনে কমিটি গঠন করে এবং সে কমিটিকে অনুমোদন করার জন্য সভাপতিকে চাপ প্রয়োগ করে আসছে। ২ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিবিএ অফিস কক্ষে ফিরোজ ওই শাখা কমিটি অনুমোদন দেয়ার জন্য সংঘের সভাপতি সাইজদ্দিন মাষ্টরকে চাপ প্রয়োগ করে। এতে সে রাজি না হয়ে কার্যনির্বাহী অন্য সদস্যদের সাথে আলোচনা করার পরামর্শ দেন সভাপতি। এতে সম্পাদক ফিরোজ উত্তেজিত হয়ে সভাপতি আলহাজ্ব সাইজুদ্দিন মাষ্টরকে আক্রোমনাক্তকভাবে মারধর করার চেষ্টা এবং উপস্থিত সকলের সামনে তাকে লাঞ্চিত করে। এসময় সম্পাদক ফিরোজের সাথে থাকা তার লোকজনও সভাপতিকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। এহেন পরিস্থিতিতে ১৩ সদস্য কমিটির কার্য নির্বাহী পরিষদের সভাপতিসহ ১২জন সদস্য একাত্রিত হয়ে সিবিএ অফিস থেকে বের হয়ে যায়। এদিন সন্ধ্যায় সভাপতির নেতৃত্বে সিবিএ অফিসে জরুরী বৈঠক ও উদ্বোধ্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় বসে নেতৃবৃন্দরা।
এ সময় সম্পাদক ফিরোজসহ তার ভাই শাহিন, জুনিয়ার ক্রেন ড্রাইভার নাজিম, ভান্ডারী নাইম, ও লস্কর আমিরুলসহ ২০/২৫ জন লোক সন্ত্রাসী ভাবে পুনরায় সিবিএ অফিস ঘেড়াও করে উপস্থিত নেতৃবৃন্দরে উপর হামলা চালায় এবং সিবিএ অফিস থেকে সভাপতিসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে বের করে দেয় সম্পাদক ফিরোজসহ তার লোকজন। এঘটনার পর পরই সিবিএ অফিস ছেড়ে ইপিজেড’র শপিং মলে জরুরী বৈঠক করেন তারা। গতকাল সকালে বিষয়টি বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল এম শাহাজাহানকে অবহিত করেন সংঘের নেতৃবৃন্দ। তবে বিষয়টি নিজেদের মধ্যে সিমাবদ্ধ রেখে দ্রæত সমাধানের আশ্বাস বন্দর চেয়ারম্যানের।
এব্যাপারে বন্দরের কর্মচারী সংঘের (সিবিএ) সাধারন সম্পাদক মোঃ ফিরোজ বলেন, সভাপতির সাথে থাকা অন্য নেতৃবৃন্দরা বন্দরের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় লেনদেন করেন যা আইন পরিপন্থী। সভাপতি এতে কর্নপাত না করায়, আমি বাধা হয়ে প্রতিবাদ করেছি। এছাড়া আমাদের অফিস কার্যলয় ওইদিন আলোচনার একটি এজেন্ডায় খুলনা শাখা কমিটি নিয়ে কথা বলায় সভাপতি আমার উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং টেবিল থাপরিয়ে তার ইচ্ছে মাফিক শাখা কমিটি গঠন হবে বলে জানায় তিনি। এসময় সভাপতির সাথে থাকা কমিটির অন্য নেতৃবৃন্দও আমার উপর চড়াও হয়। যার কারনে দু’পক্ষে বাক বিতান্ডার সৃষ্টি হয়।
বন্দরের সিবিএ’র সভাপতি আলহাজ্ব সাইজুদ্দিন মাষ্টর বলেন, বন্দর কর্মচারী সংঘের (সিবিএ)’র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সাধারন সম্পাদক তার কার্যক্রম সংগঠন বহিঃভুত। এ ব্যাপারে তাকে বহুদনি সতর্ক করা হয়েছিল কিন্ত সম্পাদক তার নিজের ইচ্ছায় কার্যক্রম চলিয়ে আসছে। খুলনা একটি শাখা কমিটি সংঘের অন্য নেতৃবৃন্দকে না জানিয়ে গোপনে সুবিধা গ্রহন করে নিজের লোকদের কমিটিতে স্থান দেয়। যা সংঘের অন্য নেতৃবৃন্দ মেনে না নেয়ায় ওই কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়নী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সম্পাদক ফিরোজ অফিস কার্যলয় অন্যায় ভাবে লোকজন দিয়ে এমন কর্মকান্ড চালিয়েছে। বিষয়টি খুলনা সিটি মেয়রকে জানানো হয়েছে। তার নিদের্শনা পেলেই সাংগঠনিক ভাবে সম্পাদক ফিরোজের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।