প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২০, ৫:২৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বাগেরহাটের ইবতেদায়ী মাদ্রাসার আলোচিত শিশু শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলায় একমাত্র আসামি মাদ্রাসা সুপার মাও. ইলিয়াস জোমার্দ্দারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক নুরে আলম বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
এদিকে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে মামলার বাদী, এলাকাবাসী ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। তবে উচ্চ আদালতে যাবেন বিবাদীপক্ষ।
রায় ঘোষণার পর মামলার বাদী ভ্যানচালক রফিক হাওলাদার, মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রনজিৎ কুমার মন্ডল ও ওই এলাকার সাধারণ মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেন। সেইসাথে এই রায়ের সাজা বহাল রাখার দাবি জানান। তবে আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে যাবেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট মাদ্রাসা সুপার ইলিয়াস হোসেনের কাছে ৪ জন শিশু শিক্ষার্থী পড়তে যায়। মাদ্রাসা সুপার কৌশলে তিনজনকে ছুটি দিয়ে ৫ম শ্রেণি এক শিশুছাত্রীকে লাইব্রেরিতে নিয়ে ধর্ষণ করে। ওই শিশু বাড়ি যাবার পথে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার এক সহপাঠী তাকে বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়িতে গিয়ে ওই শিশু বিষয়টি তার মাকে বলে। ততক্ষণে মাদ্রসা সুপার ওই শিশু শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়ে জানান, ওর গায়ে বাতাস লেগেছে, এজন্য রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এসব বলে পানিপড়াও দেয়। পরে পরিবারের লোকজন রক্তক্ষরণ অবস্থায় শিশুটিকে মোড়েলগঞ্জ রাইসা ক্লিনিকে ভর্তি করে।
মামলার বিবরণে আরও জানা যায়, ১৯ আগস্ট রাতে শিশুটির বাবা ভ্যানচালক রফিক হাওলাদার বাদী হয়ে মাদ্রাসার সুপার গফ্ফার জমাদ্দারের ছেলে ইলিয়াস হোসেনকে একমাত্র আসামি করে শরণখোলা থানায় মামলা দায়ের করে। ২২ আগস্ট ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি পিবিআইকে তদন্তভার দেয়া হয়। ১৭ অক্টোবর মামলার একমাত্র আসামিকে ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২০ অক্টোবর মাদ্রাসা সুপার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট প্রদান করেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পিবিআইয়ের এসআই আবু সাইয়্যেদ। ২০২০ সালের ৯ মার্চ বিচারকার্জ শুরু হয়। করোনার কারণে একটু বিলম্বে ২৮ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। বাদীপক্ষের ১৫ জন ও আসামিপক্ষে ২ জন সাফাই সাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। ২৯ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত উভয়পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষে আজ মামলাটি রায়ের জন্য কার্যতালিকায় রাখা ছিল।
মামলায় সরকারপক্ষে রনজিত কুমার মন্ডল ও আসামিপক্ষে আলী আকবর আইনজীবী হিসেবে ছিলেন।