প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২০, ৪:০৯ পিএম আপডেট: ০৫.১১.২০২০ ৪:১১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির তৈরি তিন কোটি ডোজ করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন পেতে একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ সরকার। সই শেষে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট প্রথম পর্যায়ে বাংলাদেশকে করোনার ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেবে। ভ্যাকসিনটি মানবদেহের জন্য নিরাপদ হবে। এছাড়াও এটি ইতোমধ্যে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন পেতে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মার সঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এ সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
বেক্সিমকো ফার্মার পক্ষে চিফ অপারেটিং অফিসার রাব্বুর রেজা, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের পক্ষে অতিরিক্ত পরিচালক সন্দীপ মলয় এবং বাংলাদেশের পক্ষে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মোস্তফা কামাল সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে বেক্সিমকো ও ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে বাংলাদেশে করোনার ভ্যাকসিন আনা হচ্ছে। আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে এ ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আসা শুরু হতে পারে। প্রথমে ৩ কোটি ডোজ আনা হবে। ভ্যাকসিন রাখা হবে বেক্সিমকোর গোডাউনে। ভারত যে দামে ভ্যাকসিন পাবে সিরাম ইনস্টিটিউট বাংলাদেশকেও একই দামে তা দেবে বলে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
‘এ ভ্যাকসিন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছে। ইংল্যান্ডের বিভিন্ন স্থানে এটি পরীক্ষামূলক প্রয়োগে ইতোমধ্যে সফলও হয়েছে। বর্তমানে এটি তৃতীয় ধাপে প্রয়োগ শুরু হয়েছে, যার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলে প্রমাণিত হয়েছে। এটি প্রতিটি মানুষের জন্য দুটি করে ডোজ দেয়া হবে। দেড় কোটি মানুষকে ২৮ দিন পর পর এ ডোজ দেয়া হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন সাপেক্ষে বাংলাদেশে আমদানি করতে চুক্তিতে শর্ত রয়েছে। প্রতিটি ডোজের জন্য সরকারিভাবে ৫ ডলার (৪৫০ টাকা) মতো ব্যয় হবে’ বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
‘প্রথম ধাপে ভ্যাকসিন প্রদানে কাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে?’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনাকালীন কর্মরত সম্মুখসারির যোদ্ধা, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা, পুলিশ, করোনা আক্রান্ত রোগী, গণমাধ্যমকর্মী ও বয়স্ক ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। তবে পর্যায়ক্রমে এটি দেশের সব মানুষের কাছে পৌছে দেয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, মহামারি করোনায় বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে প্রতিদিনই বাড়ছে শনাক্ত আর মৃত্যু। এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে করোনায় সংক্রমিত হয়ে একদিনে সর্বোচ্চ প্রায় ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
এ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা ৪ কোটি ৮৪ লাখ ২২ হাজার ছাড়িয়েছে। আর এ মহামারিতে সংক্রমিত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১২ লাখ ৩০ হাজার। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৭১ হাজার ৪৮৩ জন।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৫টি দেশে ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯। আসন্ন শীতে এ ভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে পারে বলে ইতোমধ্যে সতর্ক করে দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিশেষজ্ঞরা।