#সারা বিশ্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনার ঝড় তুলেছেন শেখ হাসিনা: নজরুল ইসলাম বাবু।
#উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শেখ হাসিনা ছাড়া কোন বিকল্প নেই: অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া।
#শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আধুনিক বিশ্বের ছোঁয়ায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে: হুমায়ুন কবির।
প্রকাশ: বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০২০, ১০:১৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বাংলাদেশ, পৃথিবীর মানচিত্রে সত্যিই এক উদাহরণ। এই উদাহরণ অগ্রগতির উদাহরণ। অর্থনীতি ও আর্থ সামাজিক বেশির ভাগ সূচকে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে গেছে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশকে। অবশ্যই বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশ। তা না হলে ১৯৭১-এ রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হতো না। বাংলার কৃষক ও শ্রমিকের শ্রমে-ঘামে, ফসলে তথাকথিত ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ এখন উদ্বৃত্ত খাদ্য ও বৈদেশিক রেমিট্যান্সে ভরে উঠেছে। মাথাপিছু জাতীয় আয় বাড়ছে। চাষাবাদের জমি দিন দিন কমলেও ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানির মতো বাড়তি ফসল উৎপাদন করছে এ দেশের কৃষক। বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন দর্শন ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে আজ সমৃদ্ধির সোপানে বাংলাদেশ।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৪৮ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। বুধবার (৪ নভেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া, ফিনল্যান্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, আজকের বিষয়বস্তু যদি আলোচনা করতে চাই তাহলে বলতে হবে আমাদের জননেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগে থেকেই বলেছিলেন, আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির আলোকে এগিয়ে যেতে হবে। যার দ্বার তিনি উন্মোচিত করেছেন ইতিমধ্যেই। সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকে জাতিকে কৃতজ্ঞতায় আবদ্ধ করে দিয়েছেন। আজকে সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে নিয়ে আলোচনা হয় এবং যার বিষয়বস্তু হলো বাংলাদেশে উন্নয়নের মাইলফলক। সারা বিশ্ব জুড়ে আলোচনার ঝড় তুলে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এগিয়ে যাচ্ছেন এটা কেন? এই বিষয়ে আমি আজ কিছু বলতে চাই। আজকে করোনার কারণে সারা বিশ্ব থেমে রয়েছে। লাশের সারি উপহার পাচ্ছে সেসব দেশগুলো। কেউই যথা সময়ে আমরা এই করোনাকে স্তব্ধ করতে পারিনি। এই দেশে করোনা ভাইরাসের আক্রমণে যে আতঙ্কিত ছিলাম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছিল ২০ লাখ মানুষ মারা যাবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাকে ভয় নয়, সাহস নিয়ে মোকাবিলা করার যে মন্ত্র দিয়েছিলেন, তাতেই আমরা করোনা মোকাবিলায় সফল হয়েছি। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশেও মৃত্যুর মিছিল দেখেছি। সেই অবস্থায় আল্লাহর রহমতে এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেসব দেশের তুলনায় ভালো আছে। এখন করোনার দ্বিতীয় ধাপে বিশ্বের সে সব দেশ আবার নতুন করে ধাক্কা খাচ্ছে সেখানে আমাদের সেই দ্বিতীয় ধাপে সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়ে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার কারণে আজকে আমাদের অর্থমন্ত্রী রিজার্ভ নিয়ে গর্ব করছেন। সারা পৃথিবী যখন করোনা মোকাবেলা সামাল দিতে ব্যস্ত সেখানে আমাদের রিজার্ভ নিয়ে আমরা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে অনেক গর্ব করি। আমরা আসলেই গর্বিত জাতি। মহান রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে আসলেই ভালো রেখেছেন। নিম্ন আয়ের দেশগুলোকে অনেক আগেই ছাড়িয়ে যাওয়া বাংলাদেশ অর্থনীতি ও আর্থসামাজিক বেশির ভাগ সূচকেই ছাড়িয়ে গেছে দক্ষিণ এশিয়াকে। বাংলাদেশ আজ নিজস্ব স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি দেশ। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছাড়িয়েছে বহুগুণে। কমেছে অতিদরিদ্রতার হার। রপ্তানিতেও উচ্চতার শিখর স্পর্শ করতে চলেছে বাংলাদেশ। মানবসম্পদ রপ্তানিও বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি কমছে। অর্থনীতির সূচকগুলো এখন অনেক দেশের তুলনায় ওপরে অবস্থান করছে। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের মতো প্রতিষ্ঠানও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেছে। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।
অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, আমি প্রথমেই আমার বক্তব্যের শুরুতে ভোরের পাতা সংলাপের সঞ্চালক সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ ধন্যবাদ জানাচ্ছি তার প্রাণবন্ত সঞ্চালনার জন্য। আজকে সম্ভাবনার বাংলাদেশকে নিয়ে কোনটা রেখে কোনটা বলবো। গত ১২ বছর ধরে বাংলাদেশকে শেখ হাসিনা কত উচ্চাসনে অধিস্ত করেছেন তার যদি আমি পরিসংখ্যান দেই তাহলে এই পরিসংখ্যান দিয়েই এই আলোচনা শেষ করা সম্ভব। আজকে রেমিটেন্স রিজার্ভে বাংলাদেশ সারা পৃথিবীতে অষ্টম। আজকে রেমিটেন্স যোদ্ধারা গত তিন মাসে ৫১ হাজার কোটি টাকা রেমিটেন্স পাঠিয়েছে দেশে। আজকে বাংলাদেশে গৃহহীনদের জন্য ৯লক্ষ ঘর তৈরি করে দিচ্ছেন শেখ হাসিনা। আজকে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। আজকে সারাদেশে শতভাগ বিদ্যুতয়ানের আওতায় এসে গেছে প্রায়। আমাদের জিডিপি এই করোনাকালেও থেমে নেই। যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি মাইনাসে আছে সেখানে আমাদের ৫ দশমিক ৫ জিডিপি, মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৬৪ মার্কিন ডলার। এই সবকিছুর নেপথ্যের নায়ক আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকে বাংলাদেশে দারিদ্রতার হার ২০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। ১০ বছর আগেও এই হার ছিল ৪০ শতাংশের উপরে। বাংলাদেশের পর্যটন খাতের ব্যাপক প্রসার হয়েছে। বর্তমান বাঙ্গালী জাতীর ভরসার শেষ প্রতীক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশ এখন ডিজিটালাইজেশনের যুগে প্রবেশ করেছে। যার কারণে আজকে প্রায় ১০০% ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, আজকে শিক্ষার হার প্রায় ৭৫%, শিশু শিক্ষার হার প্রায় ১০০%, ২ লাখ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প চলছে। এর সব কিছুর মূলেই রয়েছে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক অনবদ্য নেতৃত্বের অবদান। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতুলনীয়। বাংলাদেশের মতো ষড়ঋতুর প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য পৃথিবীর আর কোথাও নেই। এদেশে রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম নিরবচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক সমুদ্রসৈকত- কক্সবাজার, পৃথিবীর একক বৃহত্তম জীববৈচিত্র্যে ভরপুর ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল- সুন্দরবন, একই সৈকত থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত অবলোকনের স্থান সমুদ্রকন্যা- কুয়াকাটা, দুটি পাতা একটি কুঁড়ির সবুজ রঙের নয়নাভিরাম চারণভূমি- সিলেট, আদিবাসীদের বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি ও কৃষ্টি আচার-অনুষ্ঠান সমৃদ্ধ উচ্চ সবুজ বনভূমি ঘেরা- চট্টগ্রাম পার্বত্যাঞ্চল এবং সমৃদ্ধ অতীতের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা উত্তরাঞ্চলের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো। ফলে স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পের সম্ভাবনা অপরিসীম। সারা বাংলাদেশে করোনাকালীন সময়ে কোন উন্নয়নমূলক কাজ থেমে নেই। দিন রাত ২৪ ঘণ্টা পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে দেড় হাজার কোটি পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়নমূলক কাজ চলছে।
হুমায়ুন কবির বলেন, অসংখ্য ধন্যবাদ দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ড. কাজী এরতেজা হাসান ভাই ও সঞ্চালকসহ আমন্ত্রিত আলোচকবৃন্দদেরকে। আমার পূর্ববর্তী বক্তা ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া ভাই প্রায় সবই বলে গিয়েছেন এই সম্ভাবনার বাংলাদেশকে নিয়ে। একজন কবি বলেছিলেন যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সব কিছুই লিখে গিয়েছেন আমাদের আর লেখার কিছু নেই ঠিক তেমনি বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার নেতৃত্বে সব স্বপ্নের সোপান এঁটে দিয়েছেন। এবং তার রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজ গুলি আল্লাহ্র রহমতে তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা শেষ করে যাচ্ছেন। আমাদের এই আধুনিক বিশ্বের ছোঁয়াই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং অগ্রসরতার প্রতি জনগণের বিশ্বাস, আস্থা এবং ভালোবাসাই আগামী দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এগিয়ে চলার পাথেয়। জনগণ দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলেই আওয়ামী লীগ বারবার জয়ী হয়। দেশের মানুষ বিগত বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলের সঙ্গে তুলনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিশ্বকে বিস্মিত করেছে। এ উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহস, সততা ও দেশের প্রতি দায়বদ্ধতায়। উন্নয়নধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে বঙ্গবন্ধুকন্যার পাশে থাকতে হবে। শেখ হাসিনার সরকার ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে বলেই দেশের অর্থনীতিতে এতো রমরমা অবস্থা। এখন আর কোন মানুষ না খেয়ে থাকে না। পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল প্রকল্প, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষার মানোন্নয়ন থেকে শুরু করে গড় আয়ুও বেড়েছে। বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে ঘরে ঘরে। আমাদের এখানে ফিনল্যান্ডে আমার ছোট ছেলে পড়াশুনা করছে। সে বছরের শুরুতেই সব বই পায়না। কিন্তু বাংলাদেশে দেখেন, সেখানে জননেত্রী শেখ হাসিনার অবদানে আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিবছর ছাত্র-ছাত্রীদেরকে শুরুতেই তরতাজা বই দিচ্ছেন সেটা সত্যিই আমাকে অবাক করে। আমাদের এই সরকার যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে আর্থসামাজিক উন্নয়নে জনগণকে সম্পৃক্ত করে একটি উন্নয়নের ধাড়া অব্যাহত রাখার জন্য অনেক কাজ করে যাচ্ছেন।