প্রকাশ: বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০২০, ৭:২৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
যশোরের ঝিকরগাছায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে অন্তঃসত্ত্বা পুতুলরাণী দাস (১৫)’র করুণ মৃত্যু ঘটেছে। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে নিহতের স্বামী আল আমিন ওরফে প্রদীপ দাস (১৮) কে হরিজন সম্প্রদায়ের (সুইপার) লোকেরা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে ঝিকরগাছা পৌরসভার পুরন্দরপুর-কাউরিয়া ঋষিপাড়া গ্রামে।
জানাগেছে, ঘটনার সন্ধ্যা রাতে উভয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। এটা ছিলো তাদের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। রাতের খাওয়া-দাওয়া করে ঘরের দরজার ভেতর থেকে দুটি তালা লাগিয়ে এ দম্পতি ঘুমাতে যায়। রাত আনুমানিক ১২টার দিকে প্রতিবেশীরা ডাকচিৎকার শুনতে পেয়ে তালাবদ্ধ ঘরের দরজা ভেঙ্গে মারাত্বক দগ্ধ কিশোরী বধূ পুতুলরাণী দাসকে মুমূমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে খুলনা ২৫০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর রাতে সে মারা যায়।
নিহত পুতুলরাণী দাস মৃত. সাধন দাসের মেয়ে। তার প্রথম বিয়ে হয় যশোরের কেশবপুর উপজেলায়। কিন্তু প্রতিবেশীর মেয়ে সুদর্শনা পুতুলরাণী দাসের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে আল আমিন ওরফে প্রদীপ দাস। গত একবছর আগে আল আমিন ওরফে প্রদীপ দাস পুতুলরাণী দাসকে বিয়ে করে। তার পরিবারের দাবী পুতুল রাণী চারমাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলো। এদিকে প্রতিবেশী ও নিহতের স্বজনরা অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় পরস্পর বিরোধী তথ্য জানিয়েছে। একটি পক্ষের দাবী, পুতুলকে তার স্বামী আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে। অন্যপক্ষের দাবী পুতুল নিজেই শরীরে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এই পরিবারটিকে ঘিরে চকমপ্রদ ও চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
জানাগেছে, ঝিকরগাছা বাজারের ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ী দু’পুত্র সন্তানের জনক আলী আহম্মদ মারা যাবার পর তার স্ত্রী সালমা বেগমের সাথে প্রতিবেশী নীলকুমার দাসের ছেলে দু’সন্তানের জনক কিশোর কুমার দাসের প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই জের ধরে ২০১০সালে কিশোর কুমার তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী সন্তান ফেলে সালমা বেগমকে নিয়ে ভারতে পাড়ি জমাই। পরে দেশে ফিরে এসে সীতারাণী দাস নাম ধারণ করে কিশোর দাসের সংসার করতে থাকে। এখন তাদের আরও দু’টি সন্তান হয়েছে। এরা সবাই ঝিকরগাছা বাজারে পরিচ্ছন্নতা (সুইপার) কাজ করে।
থানা পুলিশ বলছে অভিযোগের তদন্ত চলছে। মৃতের লাশ যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত) মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ জানিয়েছেন, আটক আল আমিন ওরফে প্রদীপ দাসকে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন রয়েছে।