#বঙ্গবন্ধুর সম্ভাবনার বাংলাদেশের পরিকল্পনা অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করেছেন শেখ হাসিনা: অধ্যাপক ড. শাহীনূর রহমান।
#বর্তমান শেখ হাসিনার আমলে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা বেশী প্রাধান্য পেয়েছে: এম এ গনি।
#বাংলাদেশকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের চেয়েও বেশি কাজ করেছেন শেখ হাসিনা: ড. মো. আফজাল হোসেন।
প্রকাশ: সোমবার, ২ নভেম্বর, ২০২০, ১০:২৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য সন্তান হিসাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ পথ হারাবে না। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যেমন লাল সবুজের একটি পতাকা দিয়েছিলেন, তেমনি শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন পূরণের পথে শেখ হাসিনা। দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৪৬ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। সোমবার (০২ নভেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহীনূর রহমান, ইউরোপ-মধ্যপ্রাচ্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এবং সর্ব-ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এম এ গনি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আফজাল হোসেন। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
অধ্যাপক ড. শাহীনূর রহমান বলেন, আজকের এই দিনে আমি আমার বক্তব্যের শুরুতে গভীর শ্রদ্ধা জানায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যে মহামানবের অবদানে আজ আমারা লাল সবুজের পতাকা নিয়ে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করা দাড়িয়ে আছি, গভীর শ্রদ্ধা সাথে স্মরণ করছি ১৫ই আগস্টের সেই কালো রাতে তার পরিবারের যেসব সদস্যরা শাহাদাৎ বরণ করেছিলেন। গভীরভাবে স্মরণ করি জাতীয় ৪ নেতাকে। গভীর শ্রদ্ধা সাথে স্মরণ করছি ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ ইজ্জত হারা মা বোনদের। আজকের সম্ভাবনার বাংলাদেশের পরিকল্পনা করে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সাড়ে তিন বছরের ক্ষমতাকালে এবং এই পরিকল্পনা ধারাবাহিকভাবে অদ্ধবদি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন আমাদের জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দিনে মাত্র কয়েক ঘণ্টা ঘুমিয়ে নিরলস পরিশ্রম করে এই দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে দিয়েছেন তিনি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে আসার পর থেকে দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম করে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। ফিনিক্স পাখির মত বার বার ধ্বংসস্তূপ থেকে তিনি বার বার বেচে গিয়েছেন এই দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামে। তারই ফলশ্রুতিতে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সুস্থ রাখবার জন্য ভালো রাখবার জন্য আমাদেরকে সবসময় সচেতন থাকতে হবে এবং আমাদের বাঙ্গালি জাতির একমাত্র ভরসার স্থল একমাত্রই শুধু তিনি নিজেই। তার সাথে আর কারও তুলনা করা যাবেনা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ১৭ কোটি মানুষের দেশ সমস্যা ও সংকটের সাথে তেমনভাবে পরিচিত নয়। এই করোনাকালে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যেখানে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে শেখ হাসিনা আমাদের সকল সমস্যার সমাধান করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের জেল-জুলুমে থেকে বার বার মৃত্যুর মুখে দাড়িয়ে ১৯৭১ সালে আমাদেরকে এনে দিয়েছিল স্বাধীনতা আর তারই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করছেন। যেখানেই চোখ বুলান না কেন বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখতে পারবেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন তা প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি মহল্লায়, থানায়, ওয়ার্ডে এই ডিজিটালাইজেশনের সুবিধা দেখতে পারছি।
এম এ গনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় চার নেতাকে শুধু শ্রদ্ধা জানাতে পারি। আমি আশ্চর্য হয়ে যাই এই জন্য যে বঙ্গবন্ধু মুজিব বাহিনী করেছিলেন কি জন্য? দেশকে রক্ষা করতে, দেশের মানুষের রক্ষা করতে, দেশের নেতাদের রক্ষা করতে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা 'র' যদি সেদিন সঠিক তথ্য দিতে পারতো তাহলে হয়তো আমরা তাদেরকে হারাতাম না। আমি ভারতের বিরুদ্ধে কিন্তু বলছি না। তারা তাদের নিজের প্রধানমন্ত্রীকেও কিন্তু বাঁচাতে পারেননি। আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার পরিবারসহ ও জাতীয় ৪ নেতাকে যখন হত্যা করা হলো তখন আমাদের দেশের গোয়েন্দা সংস্থা অতটা শক্তিশালী ছিলোনা। এখন জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা নাম্বার ওয়ান প্রাধান্য পেয়েছে। কিছুদিন আগে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে আমাদের যে পেশা গ্রুপ আছে সেখানে সে বলছিল, আমি মাঝে মাঝে চিন্তা করি কিভাবে শেখ হাসিনা তোমাদের দেশকে এইভাবে সামাল দিয়ে যাচ্ছেন, তোমরা ভারতের আগে চলে গেলে, পাকিস্তানকে পিছনে ফেলে দিলে। আমি তখন তাকে বললাম, দেখ, আমাদের দেশের মানুষ অনেক সৎ আর এরা পরিশ্রমী মানুষ। ইউরোপের যেকোনো দোকানে যাবেন আমদের মেইড ইন বাংলাদেশের পোশাক দেখতে পারবেন, আমি এই যে পোশাকটা পড়ে আছি এটাও মেইড ইন বাংলাদেশ। আমাদের এখানে অর্থাৎ ইউরোপে অর্থনৈতিক অবস্থা এখন অনেক খারাপ। এখানে অনেক লোক এখন চাকরি ছাড়া হয়ে গেছে। গত বিশ বছরে আমাদের এখানে ৩০০টির বেশি হাঁসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কারণ আমাদের এখানে তেমন রোগী ছিলোনা। এখন করোনার কারণে তাই অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেছে এখানে কারণ কিডনি রোগীরা, ক্যান্সারের রোগীরা এখানে সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। আমি শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এই জন্য যে, করোনার এই মহামারিতে তিনি বাংলাদেশকে সঠিকভাবে সামাল দিয়ে গেছেন। সেদিন বাংলাদেশের ব্যাপারে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের একজন সদস্য আমাকে বলছিল আমাদের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যদি তোমাদের প্রধানমন্ত্রীর মতো এইরকম একশন নিতো তাহলে হয়তো আমাদের দেশের এতো মানুষ মারা যেতোনা।
ড. মো. আফজাল হোসেন বলেন, আজকের দৈনিক ভোরের পাতা সংলাপে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আমি আপনাদেরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আমি ছোটবেলার বাংলাদেশে আজকের এই বাংলাদেশের মধ্যে অনেক তফাৎ রয়েছে। আমি নিজেও এইরকম স্বপ্ন দেখিনি যে আজকের বাংলাদেশ এই অবস্থানে পৌঁছাবে। তখন সে সময় বাসায় একশ ভিক্ষুক আসতো কিন্তু আজকে সেখানে একটি ভিক্ষুকও গ্রামে নেই। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরের ক্ষমতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই দেশটিকে একটি স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে এসেছিল। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে জন্ম নেওয়া এই বাংলাদেশকে আজকের অবস্থানে আসতে অতিক্রম করতে হয়েছে হাজারো প্রতিবন্ধকতা। যুদ্ধ বিধ্বস্ত, প্রায় সর্বক্ষেত্রে অবকাঠামোবিহীন সেদিনের সেই সদ্যজাত জাতির ৪৩ বছরের অর্জনের পরিসংখ্যানও নিতান্ত অপ্রতুল নয়। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৮টি লক্ষ্যের মধ্যে শিক্ষা, শিশুমৃত্যুহার কমানো এবং দারিদ্র হ্রাসকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য অতুলনীয়। বাংলাদেশের মতো ষড়ঋতুর প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য পৃথিবীর আর কোথাও নেই। আমাদের আছে নদ-নদী, সবুজ-শ্যামল মাঠ, ফসলের ক্ষেত, ছায়াঢাকা গ্রাম, শান বাঁধানো পুকুর। গ্রামবাংলার মানুষের সরল জীবন বিশ্বের যেকোনো মানুষের হৃদয় আকৃষ্ট করে। মনোরম পাহাড়, সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার, বিশ্বখ্যাত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন, সেন্টমার্টিন, টেকনাফ তো আছেই। আরো আছে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার, ময়নামতি বিহার, চট্টগ্রাম ও সিলেটের মনোমুগ্ধকর পাহাড়ের চা বাগান আর আদিবাসীদের বিচিত্র জীবনধারা। পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সরকারেরও আছে নতুন পরিকল্পনা। পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সাথে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বাণিজ্যিক সুবিধা বাড়ালে পাল্টে যাবে অর্থনৈতিক চেহারা।