প্রকাশ: শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২০, ১০:৩৭ পিএম আপডেট: ৩০.১০.২০২০ ১০:৪২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ইসলাম মানবতা ও শান্তির ধর্ম। ইসলাম সকল ধর্মের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখার কথা বলেছে। একই সাথে প্রতিবেশী হিসাবে কে মুসলিম, কে হিন্দু, কে খ্রিষ্টান-বৌদ্ধ, এটা না দেখে মানুষ হিসাবে সহায়তা করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ইসলামে। ইসলামই সকল ধর্মের মানুষকে তাদের ধর্ম পালনের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে। ইসলাম শুধু মুসলমানদের জন্য নয় অমুসলিমদের জন্যও স্বার্থ সংরক্ষণের কথা বলে দাবি করেছেন আলোচকরা। দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৪৩ তম পর্বে ইসলাম ও মানবতা বিষয়ে শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক স্কলার্স ফোরাম বাংলাদেশের চেয়ারম্যান , বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির যুগ্ম-মহাসচিব, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সূফীজম এর সহকারী অধ্যাপক, লেখক, গবেষক, কলামিস্ট ও ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতী শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী, সেন্ট্রাল শরীয়াহ বোর্ডের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আবুল কাসেম মোঃ ছফিউল্লাহ, ইতালী আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রসুল কিটন। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও সম্পাদক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানের সঞ্চলনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
মুফতী শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী বলেন, সম্মানিত অতিথিবৃন্দ, সঞ্চালক ও দর্শকবৃন্দ যারা যেখান থেকে আজকের এই আলোচনা অনুষ্ঠান দেখছেন সবাইকে জানাচ্ছি আন্তরিক মোবারকবাদ। পবিত্র মাহে রবিউল আউয়াল ইসলামের ইতিহাসে প্রত্যেকটি মুসলমানের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। এই মাসেই রাসুলে আকরাম (সাঃ) দুনিয়াতে এসেছিলেন, এই মাসেই রাসুলে আকরাম (সাঃ) এর জীবনে হিজরত সংঘটিত হয়েছিল এবং এই মাসেই রাসুলে আকরাম (সাঃ) দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়ে গেছেন। ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম মানবতার ধর্ম, ইসলাম প্রকৃতির ধর্ম। সকল নবী রাসুলগণ মানুষের মনোজগৎকে পরিবর্তন করার জন্য দাওয়াতি কাজ করেছিলেন। একজন মানুষের মনোজগৎে যদি পরিবর্তন আসে তাহলে তার মধ্যে ভালো কাজের উৎকর্ষ সাধিত হয়। মানুষের দেহের মধ্যে এমন একটি অঙ্গ রয়েছে যেটি পরিশুদ্ধ হলে মানুষের সকল কার্য শুদ্ধ হয়। আর সেই অঙ্গটি যদি বিনষ্ট হয় তাহলে তার সকল কর্মকাণ্ড ক্ষতি বা অকল্যাণকর কাজের দিকে ধাবিত হয়। এবং সেটি হলো মানুষের কলপ বা অন্তর। সকল নবী রাসুলগণ এই কলপের শুদ্ধির চেষ্টা করেছিলেন দাওয়াতি কাজের মাধ্যমে। এবং এইজন্যই ইসলামকে শান্তির ধর্ম বলা হয়। ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম’ কথাটি অতি সত্য ও বাস্তব কথা। আমাদের ধর্ম ইসলামের নামকরণ সিলম ও সালাম তথা শান্তি শব্দ থেকে এসেছে। সালামই এ ধর্মের পরিচয় ও নিদর্শন। শান্তিই এর আহ্বান ও পথ-পন্থা। সালামের এ ধর্মই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদের জন্য মনোনীত করেছেন। ‘আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।’ [সূরা মায়িদা : ০৩] যে কেউ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবন পর্যালোচনা করলে দেখতে পাবেন, তাঁর দাওয়াতই ছিল শান্তি ও সালামের প্রতি। নবুয়তের আগে-পরে সর্বদাই তাঁর জীবনের প্রধান ও মুখ্য চাওয়া ছিল শান্তি ও সালাম। তিনি জীবনের প্রাথমিক সময়গুলোতেই অংশগ্রহণ করেছিলেন উত্তম চরিত্র, মানুষে মানুষে সম্পর্ক জুড়ে দেওয়া এবং মজলুমের সাহায্যের মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায়। অংশ নিয়েছেন হিলফুল ফুজুল প্রতিষ্ঠায়। হাদিস শরীফে রাসুলে আকরাম (সাঃ) আরও বলেছেন, প্রকৃত মুসলিম সেই ব্যক্তি যে ব্যক্তির কথায় এবং কাজে অন্য মানুষ শান্তি পাবে, নিরাপত্তা পাবে। মুসলিম মানেই হল শান্তি বিধানকারী শান্তি রক্ষাকারী, আর মুমিন মানে হচ্ছে নিরাপত্তা বিধানকারী। ইসলাম একজন মানুষের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে তাকে মুমিন করে তুলে।