প্রকাশ: শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২০, ৬:১৯ পিএম আপডেট: ৩০.১০.২০২০ ৬:২৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ওভারলোড ট্রাকের মামলা না দিয়ে ড্রাইভারদের নিকট থেকে বকশিশের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার এ সংক্রান্ত একটি ঘটনা হাতেনাতে ধরা পড়লে এক চালকের কাছ থেকে নেয়া ১ হাজার টাকা ফেরত দেন হাইওয়ে পুলিশের এএসআাই সোহাগ রানা।
জানা গেছে, দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে ফেরি পার হওয়া দক্ষিণাঞ্চল হতে আসা মালবাহী যানবাহনের ওজন পরিমাপের জন্য বিআইডব্লিউটিসি কর্তর্ৃপক্ষ গোয়ালন্দ উপজেলা কোর্ট চত্ত্বর এলাকায় ওয়েস্কেল স্থাপন করেছে। ওখান থেকে যানবাহন পরিমাপের পর স্কেল স্লিপ নিয়ে ফেরির টিকেট কাটতে পারেন চালকরা। কোন যানবাহনে নিধার্রিত পরিমাপের চেয়ে অতিরিক্ত ওজন হলে তার জন্য বাড়তি ভাড়া প্রদান করতে হয়। তারপরও এ সকল যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এখানে বিআইডব্লিউটিসি’র কমর্ীদের পাশাপাশি নিয়মিত দায়িত্ব পালন করেন গোয়ালন্দ মোড় আহলাদীপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ।
ওয়েস্কেল সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার বেলা ১২টা পর্যন্ত ৭০টি অতিরিক্ত ওজনের গাড়ী স্কেলিং করা হয়। এর মধ্যে ৩টি গাড়ীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এবং আরো ৩টি গাড়ীর স্কেল স্লিপ জব্দ করে রেখে ফেরত পাঠিয়েছেন কর্তব্যরত হাইওয়ে পুলিশের এএসআই সোহাগ রানা। ৬৪টি গাড়ীর বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেননি তিনি।
অভিযোগ রয়েছে এ সকল গাড়ী থেকে তিনি অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে এ স্কেলে অসাধু পুলিশ সদস্যরা এভাবে অতিরিক্ত মাল বোঝাই গাড়ী থেকে টাকা আদায় করে বলে অনেকেই অভিযোগ করেন।
ওয়েস্কেল সংলগ্ন গোয়ালন্দ উপজেলা ভূমি অফিসের নাজির মো. আতিয়ার রহমান জানান, শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে তিনি স্কেলে গিয়ে দেখতে পান এএসআই সোহাগ রানা কুষ্টিয়া থেকে আসা অতিরিক্ত ওজনের ট্রাক চালক সানু মিয়ার কাছ থেকে ১ হাজার টাকা নেন। আমি বিষয়টি জানতে চাইলে পরে টাকাটা ফেরত দেন। অথচ এ সকল ক্ষেত্রে মামলা দায়ের অথবা চালককে এসিল্যান্ড স্যারের ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করার কথা।
ট্রাক চালক সানু মিয়া জানান, ট্রাকে ৮৯০ কেজি ওজন বেশী হওয়ায় এএসআই সোহাগ আমার কাছ থেকে ১ হাজার টাকা আদায় করে ফেরি ঘাটের দিকে যাওয়া সুযোগ দেয়। এর কিছু আগে তিনি আরো কয়েকটি ট্রাককে এভাবে স্কেল থেকে পার করে দেন।
এ বিষয়ে এএসআই সোহাগ মিয়া চালকের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, চালক সানু মিয়া খুশি হয়ে তাকে টাকাটা দেয়। পরে অবশ্য ফেরত দিয়ে দিয়েছি। ৬৪টি গাড়ীর বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।
এ প্রসঙ্গে আহলাদীপুর হাইওয়ে থানার ইন্সেপেক্টর নারায়ণ দেব জানান, থানায় কিছুদিন হলো ওসি স্যার নেই। আমি অল্প কয়েকদিন হলো চার্জে আছি। এ বিষয়গুলো আমার জানা ছিল না। এএসআই সোহাগ রানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া স্কেল দিয়ে অনৈতিকভাবে যানবাহন পার হওয়া বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।