প্রকাশ: শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২০, ১০:৩৬ এএম | অনলাইন সংস্করণ
নাব্য সংকটের কারণে শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) পদ্মা সেতুতে বসছে না ৩৫তম স্প্যান "টু-বি"। তবে নাব্য সংকট কেটে গেলে ৩১ অক্টোবর অথবা ১নভেম্বর স্প্যানটি বসানো হতে পারে। এটি বসানো হলে সেতুর পাঁচ হাজার ২৫০ মিটার অর্থাৎ সোয়া পাঁচ কিলোমিটার দৃশ্যমান হবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের এ তথ্য জানান।
সেতু সংশ্লিষ্ট এক প্রকৌশলী জানান, পূর্ব নির্ধারিত সিডিউল অনুযায়ী সেতুর মাওয়া প্রান্তে ৮ও৯নং পিয়ারে ৩৫তম স্প্যানটি ৩০অক্টোবর শুক্রবার বসানোর পরিকল্পনা ছিলো। এতে দৃশ্যমান হতে সেতুর পাঁচ হাজার ২৫০মিটার। তবে নির্ধারিত পিয়ার দুটির এলাকায় নদীতে পলি জমেছে। সাধারণ সময় সেখানে ৭০-৮০ফিট গভীরতা থাকলে বর্তমানে গভীর ৬-৭ফুট। পানির এই গভীরতায় তিন হাজার ৬০০টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন স্প্যানবাহী ভাসমান ক্রেন তিয়ানই সেখানে চলাচল করা সম্ভব না। তাই ড্রেজিং করে পলি অপসারণের পর ক্রেন চলার উপযোগী হলেই স্প্যানটি বসানো হবে। এখনো সময় নির্ধারণ হয়নি। তবে পরিকল্পনা রয়েছে ৩১ অক্টোবর অথবা ১ নভেম্বর বসানো হতে পারে স্প্যান।
এদিকে ৩৫তম স্প্যানসহ সেতুতে বাকি থাকা ৭টি স্প্যান মাওয়া প্রান্তে বসানো হবে। ইতিমধ্যেই জাজিরা প্রান্তে সবগুলো স্প্যান বসানোর কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ৩৫তম স্প্যান বসানো হলে, আগামী ৪ নভেম্বর সেতুর ২ ও ৩ নং পিয়ারে ৩৬তম স্প্যান ‘১-বি’, ১১ নভেম্বর ৯ ও ১০নং পিয়ারে ৩৭তম স্প্যান ‘২-সি’, ১৬ নভেম্বর ১ ও ২নং পিয়ারে ৩৮তম স্প্যান ‘১-এ’, ২৩শে নভেম্বর ১০ ও ১১নং পিয়ারে ৩৯তম স্প্যান ‘২-ডি’, ২ ডিসেম্বর ১১ ও ১২ নং পিয়ারে ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ ও ১০ ডিসেম্বর ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারে ৪১তম স্প্যান স্প্যান ‘২-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
এছাড়া সেতুর দুই হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে এক হাজার ৪১টির বেশি রোড স্ল্যাব বসানো হয়েছে। আর দুই হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে এখন পর্যন্ত বসানো হয়েছে এক হাজার ৫০০টির বেশি।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩৪টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৫ হাজার ২৫০মিটার অংশ।
৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সব কটি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। নির্মাণ শেষে ২০২১ সালেই সেতুটি জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগ।