প্রকাশ: শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২০, ১০:৩৫ এএম | অনলাইন সংস্করণ
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে একের পর এক মাইলফলক গড়ে চলছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের অর্থের ওপর ভর করে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪১ বিলিয়ন বা চার হাজার ১০০ কোটি ডলার অতিক্রম করেছে। এ পরিমাণ অর্থ দিয়ে ৯ মাসের আমদানি দায় মেটানো সম্ভব।
বুধবার (২৮ অক্টোবর) রিজার্ভের এ মাইলফলক হয় বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে গত ৮ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৪০ বিলিয়ন বা চার হাজার কোটি ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে।
গত মার্চে বাংলাদেশে করোনা মহামারির প্রভাব শুরুর পর থেকে এই নিয়ে রিজার্ভে যুক্ত হলো ৮৬৫ কোটি ডলার। মূলত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের তুলনায় আয় বৃদ্ধির ফলে করোনা সঙ্কটের মধ্যেও রিজার্ভে একের পর এক রেকর্ড হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আমদানি কমলেও রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়ছে। আবার করোনা সঙ্কটের মধ্যে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবিসহ বিভিন্ন বিদেশি সংস্থা থেকে প্রচুর ঋণ পাচ্ছে সরকার। আবার করোনার কারণে বেসরকারি খাতে আগে নেওয়া বিদেশি ঋণ পরিশোধের সময় বাড়ানো হয়েছে। সব মিলিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেড়েছে। ফলে রিজার্ভ হু হু করে বাড়ছে।
এছাড়াও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হুন্ডির চাহিদা একেবারে কমে যাওয়াকে চিহ্নিত করছেন সংশ্লিষ্টরা। আবার সরকারের ২ শতাংশ হারে প্রণোদনার কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে ভালো দাম মিলছে। এর বাইরে একটা শ্রেণি জমানো টাকা দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। আবার বিমান চলাচল সীমিত হয়ে যাওয়ায় সঙ্গে ডলার আনার প্রবণতা কমেছে। এসব কারণে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়ের বেশিরভাগই এখন ব্যাংকিং চ্যানেলে আসছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে প্রবাসী আয় কমেছিল। এরপর থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স ব্যাপকভাবে বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে প্রবাসীরা ৬৭১ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ২১৯ কোটি ডলার বা ৪৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেশি।
এছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে মোট এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠান প্রবাসীরা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় যা ১৭৯ কোটি ডলার বা ১০ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে এক হাজার ২৬৯ কোটি ডলারের আমদানি হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১১ দশমিক ৪৩ শতাংশ কম। অথচ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে রপ্তানি আয় ২ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেড়ে ৯৯০ কোটি ডলার হয়েছে। আবার বিদেশ থেকে প্রচুর ঋণও পাচ্ছে সরকার।