দেশের মানবিকতা বিকাশে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ পূর্ণ করেছেন শেখ হাসিনা: মোস্তফা চৌধুরী
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২০, ১০:২২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
অবশ্যই বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশ। তা না হলে ১৯৭১-এ রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হতো না। বাংলার কৃষক ও শ্রমিকের শ্রমে-ঘামে, ফসলে তথাকথিত ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ এখন উদ্বৃত্ত খাদ্য ও বৈদেশিক রেমিট্যান্সে ভরে উঠেছে। মাথাপিছু জাতীয় আয় বাড়ছে। চাষাবাদের জমি দিন দিন কমলেও ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানির মতো বাড়তি ফসল উৎপাদন করছে এ দেশের কৃষক। সামাজিক উন্নয়নে ভারতকেও পেছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশ গড়ছেন শেখ হাসিনা।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৪২ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. শ্রী বীরেন শিকদার, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, সিরাজগঞ্জ এর মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ, যুদ্ধশিশু বিষয়ক গবেষক এবং কানাডা প্রবাসী মোস্তফা চৌধুরী। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
মোস্তফা চৌধুরী বলেন, আমি যখন ১৯৭২ সালে কানাডায় আসলাম তখন আমার বয়স ছিল ২২বছর। তখন আমি এখানে বাংলাদেশের পরিচয় দিতাম তখন এখানকার মানুষেরা কিসিঞ্জার এর দেওয়া উপাধি তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ হিসেবেই জানতো। কিন্তু এখন সেটা নেই। এখন সবাই বাংলাদেশকে অন্যভাবে চিনে। ১৯৭২ সালের যুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু যখন দেশে ফিরলেন তখন তার প্রথম কাজ ছিল যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটাকে গড়ে তোলা। একই সাথে তিনি দেখলেন যুদ্ধের সময় যাদের জন্ম হয়েছিল তাদের পরিত্যাগ করা হচ্ছিল তখন তিনি সেটাকেও অগ্রাধিকার দিলেন। সেই অগ্রাধিকার দিয়ে তিনি কাজ শুরু করলেন। তিনি আইএসএস (ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যাল সার্ভিস) সংগঠন আছে সেখানে তিনি লেখলেন, তোমারা আমদেরকে একটা সুপারিশ দেও আমরা এদেরকে নিয়ে কি করবো কারণ তাদেরকে পরিত্যাগ করা হচ্ছে। তখন তারা বাংলাদেশে এসে তিন মাস স্টাডি করে একটা সুপারিশ দিল যে, তোমাদের দেশে যে মূল্যবোধ আছে এই মূল্যবোধে এদেরকে কখনোই গ্রহণ করা হবেনা। তারা এখানে অত্যন্ত নিগৃহীত অবস্থায় থাকবে। তাদেরকে যদি কোন ভাবে বিদেশে পাঠাতে পারো তাহলে দত্তক ব্যবস্থার মাধ্যমে তাহলে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে। তখন দেশে কোন দত্তক আইন ছিলনা। তাই বঙ্গবন্ধু দেশে দত্তক আইন প্রণয়ন করেছিলেন। এই আইনটা বাস্তবায়ন করতে অনেক সময় লেগেছিল। এই আইন করতে গিয়ে অনেক সমস্যা হয়েছিল কিন্তু তিনি এই আইন বাস্তবায়ন করেছিলেন। তখন মিডিয়ার অনেক কাগজেই বলা হয়েছিল তারা শত্রুর সন্তান, জারজ সন্তান। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, তারা মানব সন্তান। তিনি সেভাবেই তাদেরকে ট্রিট করলেন। ক্ষুদ্র আয়তনের একটি উন্নয়নশীল দেশ হয়েও বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সারা বিশ্বের নিকট প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিবিড় সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবহার এবং দারিদ্র দূরীকরণে তার ভূমিকা, জনবহুল দেশে নির্বাচন পরিচালনায় স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুতা আনয়ন, বৃক্ষরোপণ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকের ইতিবাচক পরিবর্তন প্রভৃতি ক্ষেত্রে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে জন্ম নেওয়া এই বাংলাদেশকে আজকের অবস্থানে আসতে অতিক্রম করতে হয়েছে হাজারো প্রতিবন্ধকতা। যুদ্ধ বিধ্বস্ত, প্রায় সর্বক্ষেত্রে অবকাঠামোবিহীন সেদিনের সেই সদ্যজাত জাতির ৪৩ বছরের অর্জনের পরিসংখ্যানও নিতান্ত অপ্রতুল নয়। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৮টি লক্ষ্যের মধ্যে শিক্ষা, শিশুমৃত্যুহার কমানো এবং দারিদ্র হ্রাসকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে।