প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৪৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
উত্তরবঙ্গের দীর্ঘ দিনের আন্দোলনের ফসল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার একযুগেও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের, এখানকার অনেক শিক্ষার্থীরা নিজ যোগ্যতা বলে বাংলাদেশ বিভিন্ন প্রান্তরে বিশ্ববিদ্যালয়র সুনাম অক্ষুন্ন রাখার করার চেষ্টা করলেও সাবেক ভিসি জলিল মিয়ার পেতাত্নারা এখনো সক্রিয় রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ঘিরে নানামূখী বিতর্ক এবং ষড়যন্ত্র নিয়ে দৈনিক ভোরের পাতার ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ থাকছে চতুর্থ পর্ব।
উত্তরবঙ্গের বাতিঘর খ্যাত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার এক যুগ পার হলেও নানা সংকট ও সমস্যা থেকে উত্তরণ হতে পারেনি আজও। প্রফেসর ড.গাজী মাযহারুল আনোয়ারের মতো কিছু ক্ষমতালোভী শিক্ষকের কারণে পিছেয়ে যাচ্ছে উত্তরাঞ্চালের মানুষের দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রামের স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়টি। দ্বিতীয় উপাচার্য জলিল মিয়া কর্তৃক নিয়োগদানের পর তার সকল অন্যায় অপকর্মের দোসর ছিলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। নিয়োগদানের পর থেকেই ক্ষমতা লোভ পেয়ে বসেছিল তার। তাইতো তিনি তার আপন ভাইরা জলিল মিয়াকে দিয়ে জৈষ্ঠ্যতা লংঘন করে আর এম হাফিজুর রহমানকে টপকায়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন পদটি তিনি তার নিজের কব্জায় নেন। তৎকালীন সময়ে এমন অনেক কাজ তিনি করেছেন গায়ের জোরেই। তিনি তার অনেক আত্মীয় স্বজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দান করিয়েছেন। নিয়োগ বাণিজ্য ছিল তার একচেটিয়া আধিপত্য। শিক্ষক হিসেবে আছেন ইতিহাস বিভাগের আরা তানজিয়া শালিকার মেয়ে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শরিফুল ইসলাম ভগ্নীজামাই, মার্কেটিং বিভাগের শাহজালাল। কর্মকর্তা হিসেবে আছে ভাইরার মেয়ে রুমানা ফেরদৌসি জলিল, ভাইরা রেজাউল করিম শাহ্, সুভেনির সেকশন অফিসার,ভাইরার ভাই মাহবুবুর রহমান। কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন কম্পিউটার অপারেটর সীমা আক্তার, মনিরা খাতুন, তাহমিনা আফরোজ লিপিকে।
এম এল এস হিসেবে আছে আব্দুল মান্নান মন্ডল ও তার স্ত্রী। অফিস সহকারী হিসেবে আছে হুমায়ন কবীর, ওবায়দুর রহমান এরা সবাই উক্ত শিক্ষকের নিকটাত্মীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় উপাচার্য আসার তার সাথে সুবিধা করতে না পারায় লেগে পরেন আন্দোলনে। এজন্য ব্যাহত হয় শিক্ষা কার্যক্রম। তার নেতৃত্বে লাগাতার আন্দোলন চলতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ শিক্ষার্থীদের পড়তে হয় ভয়াবহ সেশনজটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ উপাচার্য যোগদানের পর তিনি কছু বুঝে উঠার আগেই চতুরতার সাথে তার প্রশাসনের সাথে মিশে যান ক্ষমতালোভী এই মানুষটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ নিজের কব্জায় নিয়ে নেন তিনি। উপাচার্য আসার পর শিক্ষার্থীরা দাবি জানায় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা ক্যাফেটেরিয়া নিয়ে শিক্ষার্থীবান্ধব উপাচার্য প্রফেসর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ তাদের কথা আমলে নিয়ে ক্যাফেটেরিয়া চালু করার দায়িত্ব দেন গাজী মাজহারুল আনোয়ারের উপর। উপাচার্য তার উপর আস্থা রেখে দায়িত্ব দিলেও তিনি তার ক্যাটারিং ব্যাবসা থাকার কারণে ক্যাফেটেরিয়া চালু করতে গড়িমসি করতে থাকেন। উপাচার্যের কাছে বিভিন্ন জনের নিয়োগ নিয়ে তদবির করলে উপাচার্য তার কথা আমলে নেননি। সর্বশেষ তার এক নিকটাত্মীয়কে একটি বিভাগের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগদানের জন্য উঠেপড়ে লাগে।পরে সেখানে ব্যর্থ হয়ে তিনি বর্তমান উপাচার্যের প্রশাসনের বিরুদ্ধে কাজ করতে থাকেন।তার নেতৃত্বে আবার উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। তিনি বিভিন্ন জায়গায় উপাচার্য বিরোধী বিভিন্ন কথা বলতে শুরু করেন যদিও প্রথমদিকে তিনি উপাচার্যের জয়গানই করতেন। অর্থাৎ একই মানুষের ভিন্ন রুপ। তার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা করা হয়। এরফলে আবারো সৃষ্টি হয় সেশনজটের।
মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা উন্নয়নের দিকে অধ্যাপক ড. গাজী মাজহারুল আনোয়ারের কোনো দৃষ্টিই নেই। তিনি শুধু বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ’র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি জামায়াত-বিএনপিপন্থী শিক্ষদের সাথেও গোপনে আঁতাত করেই কাজ করছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।