সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশও করোনা মোকাবিলায় যুদ্ধ করে যাচ্ছে। প্রতিদিন আসছে মৃত্যুর খবর। এরপরও থেমে নেই মানুষের কর্মজীবন। করোনাসংকট মোকাবিলায় বিশাল কর্মযজ্ঞে নিয়োজিত রয়েছে সরকার। এ পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মনোবল চাঙ্গা রেখে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনাকালেও সব ক্ষেত্রেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নিয়মিত দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন তিনি। দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় দফা বিস্তার প্রতিরোধে ঘরের বাইরে মাস্ক পরিধানের জন্য আবারও জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইউরোপ ও আমেরিকায় নতুন করে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে তিনি এই আহ্বান জানিয়েছেন।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৩৪ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। বুধবার (২১ অক্টোবর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহার, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর সভাপতি ডা. ইকবাল আর্সেনাল, অষ্ট্রিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদ ভিয়েনা সভাপতি রবিন মোহাম্মদ আলী। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, আমি প্রথমেই শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা জানাই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি যার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। কৃতজ্ঞতা জানাই দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। সম্ভাবনার বাংলাদেশ। কি একটা সুন্দর শব্দ। এই সম্ভাবনার বাংলাদেশে পৌঁছে গিয়েছি আমরা। একটা সময় আমরা হতাশাগ্রস্থ বাঙ্গালি ছিলাম। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখতেন আমরা বাঙ্গালি একসময় পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবো। এই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য তার রাজনৈতিক জীবনে ১৪ বছর জেল খাটতে হয়েছে। কি কষ্টটা না তিনি করেছিলেন আমাদের জন্য যে একদিন বাঙ্গালীরা মাথা উঁচু করে দাড়াতে পারে। তিনিই স্বাধীনতাকে উপলব্ধি করেছেন যে, এই স্বাধীনতা যদি আমরা না পায় তাহলে আমরা কখনোই মাথা উঁচু করে দাড়াতে পারবো না, এই সম্ভাবনার বাংলাদেশ আমরা তৈরি করতে পারবো না। এই সম্ভাবনার বাংলাদেশ হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা, আমাদের প্রিয় নেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪১এর সোনার বাংলাদেশ। তখন আমাদের রাষ্ট্রে সাড়ে সাত কোটি মানুষ ছিল তখন আমাদের বাজেট করা হলো ৪৮৭ কোটি টাকা। তখন তিনি যে কাজটি করেছিলেন সেটা আজ পর্যন্ত কোন রাষ্ট্রের নেতা করে দেখাতে পারেননি। আজ আমরা সেই ধারাবাহিকতায় তারই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০২১ সালের আমরা স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করবো। বর্তমান সরকারের সময়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, ক্রীড়া, পরিবেশ, কৃষি, খাদ্য, টেলিযোগাযোগ, সংস্কৃতি, সামাজিক নিরাপত্তা, মানবসম্পদ উন্নয়ন এমন কোনো খাত নেই যে খাতে অগ্রগতি সাধিত হয়নি। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে গত কয়েক বছরে দেশে অবকাঠামো উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, পুষ্টি, মাতৃত্ব এবং শিশু স্বাস্থ্য, প্রাথমিক শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। যা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রশংসিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলেও। এই করোনাকালেও বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল ছিল। মাত্র ১০ বছরের ব্যবধানে দারিদ্র্যের হার আমরা ৪১ শতাংশ থেকে কমিয়ে মাত্র ২১ শতাংশে এসে পরেছি। আজকে করোনাকালে স্বাস্থ্যখাতে যখন একটু সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল তখন শেখ হাসিনা সরাসরি হস্তক্ষেপ নিলেন তখন করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশের আর কোন সমস্যা হয়নি।
ডা. ইকবাল আর্সেনাল বলেন, আমি প্রথমেই ধন্যবাদ জানাচ্ছি আজকের এই ভোরের পাতা সংলাপের আয়োজনকারী ড. কাজী এরতেজা হাসান এবং সঞ্চালক নাসির উদ্দিন আহমেদকে। আসলে আমি সম্ভাবনার বাংলাদেশ কথাটাকে একটু ঘুরিয়ে বলতে চায়। আমি বলতে চাই অসম্ভবকে সম্ভব করার বাংলাদেশ। সদ্য বিধ্বস্ত অর্থনীতির উপর যে বাংলাদেশ দাঁড়িয়েছিল সেখান থেকে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাইমারি শিক্ষাকে জাতীয়করণ করে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে সুসংঘটিত করে যে সম্ভাবনার বাংলাদেশ তৈরি করে গিয়েছিলেন আজকের তার তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছেন যার অনেক উদাহরণ বাহার ভাই দর্শক শ্রোতাদের বলেছেন। আজকে আমাদের বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পারছি যে, তারা সময় বের করছে কিভাবে এই করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা বা কিভাবে দেশে আনা যায়। যদিও এই ভ্যাকসিন একটি সম্ভাবনার জায়গা একটি ভরসার জায়গা। কিন্তু এই ভ্যাকসিন কবে নাগাদ আমাদের মাঝে আসবে বা এর প্রভাব কতদিন থাকবে সেটা নিয়ে আজও কিন্তু আমরা অনিশ্চিত। আমি মনে করি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় দফার কথা বলছি কিন্তু আমরা এখনো করোনাভাইরাসের প্রথম দফায় রয়ে আছি। এটা শীতের মৌসুমে যে সারস আসতে পারে তার থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ যাতে সংক্রমণ হতে না পারে, একটি স্বাস্থ্যঝুকির মধ্যে যাতে আমরা না পরি তার জন্য আমাদের প্রত্যেকের উচিৎ যে যার অবস্থানে মাস্ক পরিধান করা। এবং সর্বসময় মাস্ক ব্যাবহার করা। তার সাথে সাথে শারীরিক দূরত্ব, সেনিটাইজেশন মেইন্টেইন করা। এই মাস্ক ব্যাবহার, শারীরিক দূরত্ব, সেনিটাইজেশন মেইন্টেইন করতে পারলে এই তিনটা জিনিষ আমাদের ভ্যাকসিনের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে। সব জায়গা থেকেই আমরা দেখছি, ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টিং থেকে দেখছি, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ- সেই সব জায়গায় আবার প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েক দিন থেকে মিটিংয়ে কথাবার্তা বলছেন। প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে নজর দিচ্ছেন যে, সবাই যাতে একটু কেয়ারফুল থাকি, বিশেষ করে আমাদের দিক থেকে আমরা যেন সবাই মাস্ক ব্যবহার করি।'
রবিন মোহাম্মদ আলী বলেন, আমি প্রথমেই শ্রদ্ধা জানাই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি। আমি শুরুতেই বলতে চায় এই মাস্কটা আমাদের কেন পড়তে বলা হয়। এই মাস্কের কারণে যাতে আমরা নিজেরা সুরক্ষায় থাকতে পারি এবং অন্যকেও সুরক্ষা দিতে পারি। মাস্কটা পড়লে আমাকে সুরক্ষা দিতে পারবো, আমার পরিবারকে সুরক্ষা দিতে পারবো এবং বাইরে বের হলে অন্যদেরকেও সুরক্ষায় রাখতে পারবো। আমি পরবর্তী আলোচনায় বলতে চায় বর্তমান সরকারের সময়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, ক্রীড়া, পরিবেশ, কৃষি, খাদ্য, টেলিযোগাযোগ, সংস্কৃতি, সামাজিক নিরাপত্তা, মানবসম্পদ উন্নয়ন এমন কোনো খাত নেই যে খাতে অগ্রগতি সাধিত হয়নি। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে গত কয়েক বছরে দেশে অবকাঠামো উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, পুষ্টি, মাতৃত্ব এবং শিশু স্বাস্থ্য, প্রাথমিক শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। যা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রশংসিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলেও। এই করোনাকালেও বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল ছিল। যেখানে বিশ্বের অনেক দেশের প্রবৃদ্ধি ঋণাত্নক হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই হাঁটছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যতদিন বেঁচে আছেন, ততদিন বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে। আজকে তারই একান্ত নেতৃত্বে স্বাস্থ্য বিভাগের ভূমিকায় দেশে করোনা মোকাবেলায় মৃত্যুর হার অনেক কম পৃথিবীর অন্যান্য দেশে তুলনায়।