প্রকাশ: বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০২০, ৭:৪৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
গত শুক্রবার ঢাকা মেডিকেলে মৃত ঘোষণার পর সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কবরস্থানে দাফন করতে। দাফনের ঠিক আগে কেঁদে ওঠে শিশুটি। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে ৪ দিন বয়সী এই শিশুটি ঢামেকের দ্বিতীয় তলায় এনআইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শিশুটির মা শাহিনুর আক্তারের শরীরের অবস্থা ভালো না হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে আলাদাভাবে উন্নত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন নবজাতকের হৃদযন্ত্রসহ শরীরে একাধিক সমস্যা রয়েছে। অনেকটা নাটকীয়ভাবে বেঁচে ফেরা মারিয়ামকে নিয়ে আশাবাদী তার বাবা মো. ইয়াসিন মোল্লা। পেশায় বিআরটিসি পরিবহন চালক ইয়াসিন মোল্লা বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে। শিশু মারিয়ামের বেঁচে ফেরাটা এখনো আমার কাছে অনেকটা অবিশ্বাস্য। আমার স্বপ্ন মারিয়ামকে গাইনি চিকিৎসক বানাবো।’
তিনি বলেন, ‘বড় মেয়ে ইশরাত জাহানের বয়স ৯ বছর। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাজধানীর তুরাগের ধৌড় এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকি। ওই দিনের ঘটনা আর মনে করতে চাই না। চিকিৎসক জানিয়েছেন নবজাতক এখন ভালো আছে। ওর চিকিৎসা চলছে। গতকাল সকালে গিয়ে মারিয়ামকে দেখে এসেছি। হাত-পা নাড়াচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিঃশ্বাস নিচ্ছে। শিশুর যাবতীয় খরচ আমিই বহন করছি। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে প্রায় এক লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। এত খরচ বহন করা আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়। চিকিৎসার খরচ চালাতে আত্মীয় স্বজন যে যেখানে আছেন তাদের কাছে আর্থিক সহায়তা চাচ্ছি। প্রত্যেকে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী কম বেশি সাহায্য করছে।’
ইয়াসিন বলেন, ‘শিশুটিকে চিকিৎসক কর্তৃক মৃত ঘোষণা করা সম্পর্কে যা শুনেছেন বিষয়টি সত্য। কারণ, চিকিৎসক মৃত ঘোষণা না করলে তো আর নবজাতকের লাশ নিয়ে হাসপাতালের গেটের বাইরে বেরিয়ে আসতে পারতাম না। পরবর্তীতে তাদের কাছে আমরা শিশুটিকে নিয়ে এসেছি। এখন তারা খুব ভালো চিকিৎসা দিচ্ছেন। সবসময় চিকিৎসকরা খোঁজখবর রাখছেন। গাইনি ও শিশু বিভাগের প্রধান মা ও শিশুকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছেন। তারা জানিয়েছেন, ‘আমাদের চিকিৎসা চলছে। আপনারা দুশ্চিন্তা করবেন না। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’
মেয়েটির বাবা বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তা যদি মারিয়ামকে আমার কাছে সুস্থভাবে ফিরিয়ে দেন তাহলে সে যেভাবে এখানে মৃত্যুর দরজা থেকে ফিরে এসেছে আমি তাকে ঢামেকের ওই বিভাগের চিকিৎসক বানাতে চাই। এটাই এখন আমার একমাত্র স্বপ্ন এবং আশা। আমার স্ত্রীকে ইতিমধ্যে জানিয়েছি। যাতে করে এভাবে আর কোনো শিশুকে মৃত ঘোষণা না করা হয়। মারিয়াম বড় হয়ে ঢামেকের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক হতে পারলে হয়তো সে সাধারণ মানুষের সুচিকিৎসা করবে।’
ভোরের পাতা/এএম