মানুষের নৈতিক বিকাশের উন্নয়নে শেখ হাসিনা ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছেন: অধ্যাপক ড. নূর মুহাম্মদ
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর, ২০২০, ১০:১৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
অবশ্যই বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশ। তা না হলে ১৯৭১-এ রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হতো না। বাংলার কৃষক ও শ্রমিকের শ্রমে-ঘামে, ফসলে তথাকথিত ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ এখন উদ্বৃত্ত খাদ্য ও বৈদেশিক রেমিট্যান্সে ভরে উঠেছে। মাথাপিছু জাতীয় আয় বাড়ছে। চাষাবাদের জমি দিন দিন কমলেও ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানির মতো বাড়তি ফসল উৎপাদন করছে এ দেশের কৃষক। সামাজিক উন্নয়নে ভারতকেও পেছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৩৩ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক, সাবেক সচিব, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় নির্বাহী চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান এবং সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. নূর মুহাম্মদ, ইতালি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ রব মিন্টু। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
অধ্যাপক ড. নূর মুহাম্মদ বলেন, আজকের দৈনিক ভোরের পাতা সংলাপে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আমি আপনাদেরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। এইযে আমার পূর্ববর্তী বক্তা উনি বললেন, ৪ কোটি তরুণরা কর্মক্ষেত্রে যোগ দিবে তারা দেশকে আসলেই দেশকে সামনের দিকে দিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কিন্তু বলেছিলেন, সোনার বাংলা চায়, সোনার মানুষ চায়। বঙ্গবন্ধুর সেই কথায় যদি আমরা আলোকপাত করি তাহলে দেখতে পায় উনি কিন্তু আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি যে মানবিক উন্নয়নের গুণাবলী বা নৈতিক উন্নয়নের গুণাবলীর উপর বেশি গুরত্ত দিয়েছেন। আমি অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের একটি আর্টিকেল পড়েছি সেখানে উনি লিখেছেন যে, বঙ্গবন্ধু কিন্তু টাকা-পয়শায় ভরপুর একটি উন্নত দেশ হবে এটা কিন্তু প্রত্যাশা করেননি তিনি, পাশাপাশি আমাদের যে মানবিক বিকাশ, সামাজিক নৈতিকতার বিকাশ, ধর্মের বিকাশ এটা চেয়েছিলেন তিনি। ক্ষুদ্র আয়তনের একটি উন্নয়নশীল দেশ হয়েও বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সারা বিশ্বের নিকট প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিবিড় সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবহার এবং দারিদ্র দূরীকরণে তার ভূমিকা, জনবহুল দেশে নির্বাচন পরিচালনায় স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুতা আনয়ন, বৃক্ষরোপণ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকের ইতিবাচক পরিবর্তন প্রভৃতি ক্ষেত্রে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে জন্ম নেওয়া এই বাংলাদেশকে আজকের অবস্থানে আসতে অতিক্রম করতে হয়েছে হাজারো প্রতিবন্ধকতা। যুদ্ধ বিধ্বস্ত, প্রায় সর্বক্ষেত্রে অবকাঠামোবিহীন সেদিনের সেই সদ্যজাত জাতির ৪৩ বছরের অর্জনের পরিসংখ্যানও নিতান্ত অপ্রতুল নয়। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৮টি লক্ষ্যের মধ্যে শিক্ষা, শিশুমৃত্যুহার কমানো এবং দারিদ্র হ্রাসকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে। নোবেল বিজয়ী ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের করা মন্তব্য এক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য। তাঁর মতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশ্বকে চমকে দেবার মতো সাফল্য আছে বাংলাদেশের। বিশেষত শিক্ষা সুবিধা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার ও জন্মহার কমানো, গরিব মানুষের জন্য শৌচাগার ও স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান এবং শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম অন্যতম। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রি শেখ হাসিনা মানুষের নৈতিক বিকাশের উন্নয়নে ব্যাপক গুরুত্ব আরোপ করেছেন।