দীর্ঘদিন থেকেই স্বাভাবিক হচ্ছে না রাজধানীর কাঁচাবাজার। অধিকাংশ সবজি ১০০ টাকার ওপরে। সেঞ্চুরি করেছে প্রায় আধা ডজন শাক-সবজি। কোনটার দাম ৭০ কোনটা ৮০ আবার কোনটা ৯০। সবজির এমন চড়া বাজারে নতুন করে দাম বেড়েছে ডিম-আলু ও কাঁচা মরিচের।
আজ (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরকার ৩০ টাকা আলুর দাম বেঁধে দিলেও বেশিরভাগ ব্যবসায়ী তা মানছেন না। এদিকে অন্যান্য সবজিগুলো আকাশচুম্বী দামে বিক্রি হচ্ছে।
শেওড়াপাড়া বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি। ১১০ থেকে ১১৫ টাকা ডজন বিক্রি হওয়া ডিমের দাম বেড়ে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর ৪০ থেকে ৫০ টাকা পোয়া (২৫০) বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। অর্থাৎ কেজিতে কাঁচা মরিচের দাম ১২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
এদিকে শিম, পাকা টমেটো, গাজর, বেগুন ও বরবটির সঙ্গে নতুন করে ১০০ টাকা কেজির তালিকায় নাম লিখিয়েছে উস্তা। এর মধ্যে পাকা টমেটো গত কয়েক মাসের মতো এখনো ১২০ থেকে ১৪০ টাকা এবং গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের মতো শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। আর উস্তের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। বরবটির কেজি গত সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা। বেগুনও গত সপ্তাহের মতো ৮০ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
শুধু এই ছয় সবজি নয়, বাজারে অন্য সবজিগুলোও স্বস্তি দিচ্ছে না। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এক হালি কাঁচকলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ঝিঙা, কাঁকরোল, ধুন্দুলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। বাজারে নতুন আসা ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে মুলা ও পেঁপে। এর মধ্যে মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা।
এদিকে স্বস্তি মিলছে না পেঁয়াজের দামেও। দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। আমদানি করা বড় আকারের ভারতীয় পেঁয়াজের কেজির জন্যেও গুনতে হচ্ছে ৮০ টাকা। গত মাসে ভারত রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই এমন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দামের বিষয়ে সেলিম নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজারে এসে মোটেও শান্তি পাই না। সবকিছুর দাম অস্বাভাবিক। ১০০ টাকার সবজি দিয়ে এক বেলাও হয় না। সবজির এত দাম আমার ৫০ বছরের জীবনে আর দেখিনি।
তিনি আরও বলেন, অনেক দিন ধরেই সবজির দাম চড়া। এর মধ্যেই তেল, চিনি, আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম বেড়ে গেল। আগে কখনো পুরাতন আলুর কেজি ৪০ টাকা কিনে খাইনি। এখন পুরাতন আলুর কেজি ৪৫ টাকা কিনে খেতে হচ্ছে। এক পোয়া কাঁচামরিচ কিনতে হচ্ছে ৭০ টাকা দিয়ে। ৫০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। সবকিছুর দাম এমন হলে আমরা চলবো কীভাবে?
সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী সোলাইমান বলেন, বাজারে আগের তুলনায় শিম, গাজরের সরবরাহ বেড়েছে। কিন্তু অন্যান্য সবজির সরবরাহ তুলনামূলক কম। এ কারণে শীতের আগাম সবজি আসার পরও দাম কমছে না। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে শীতের সবজি ভরপুর না আশা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই।