সাতক্ষীরা জেলার সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু আলতাফ হোসেন কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধাকে প্রাণনাশের হুমকি
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ২:১৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া গ্রামের ভূমিদস্যু আলতাফ হোসেন ও সাফায়েত হোসেনের হয়রানির হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন একজন মুক্তিযোদ্ধা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে এসকল বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ তুলে ধরেন মৃত এজাহার আলী সরদারের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আতিয়ার রহমান সরদার।
সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা চাকরির সুবাদে আমার তিন ছেলে বাইরে থাকে আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমার ভাইপো ভূমিদস্যু আলতাফ হোসেন ও সাফায়েত হোসেন আমার সম্পত্তি জবর দখলের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। আমার বড় ভাই মৃত লুৎফর রহমান সরদার জীবিত থাকা অবস্থায় ভিটাবাড়ি ও কিছু বিলান সম্পত্তি ভাগ করে শান্তিপূর্ন ভোগ দখলে আছি। আমার বড় ভাইয়ের ছয় সন্তানের মধ্যে ভূমিদস্যু আলতাফ হোসেন ও সাফায়েত হোসেন আমার স্বাক্ষর জাল করে সম্পত্তি মটগেজ দেখিয়ে সখিপুর অগ্রনী ব্যাংক শাখা থেকে ১০,০০০০০/-(দশ লক্ষ) টাকা লোন নেওয়ার পায়তারা করে। উক্ত বিষয়টি অবগত হয়ে আমি তা বন্ধ করি। এরপর থেকে তারা দুই ভাই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং আমার ও আমার তিন সন্তানের প্রাণহানিসহ বিভিন্নভাবে ক্ষতি করার চক্রান্ত শুরু করে। চলতি বছরে আলতাফের কাছে ৫ বিঘা জমির ইজারা বাবদ ৯৫,০০০/-(পঁচানব্বই হাজার) টাকা এবং সাফায়েতের কাছে ২০ বিঘা জমির ইজারা বাবদ ১,৫৮০০০/-(একলক্ষ আটান্ন হাজার) টাকা আমার পাওনা রয়েছে। উক্ত পাওনা টাকা চাইতে গেলে আমার ভাইপো ভূমিদস্যু আলতাফ হোসেন আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে। মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আতিয়ার রহমান আরও বলেন আমি ও তাদের বড় ভাই সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোশাররফ হোসেন মশু মিলে আমাদের পারিবারিক সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারার উদ্দেশ্যে বন্টন নামার জন্য স্থানীয়ভাবে পারিবারিক ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে শালিসি বৈঠক করি কিন্তু আলতাফ ও সাফায়েত কোন প্রকার শালিস মানেনি। বরং তারা স্থানীয় প্রশাসনকে আমাদের বিরুদ্ধে উল্টা অভিযোগ করে। ফলে আমি গত ২৬ আগষ্ট পুলিশের উদ্ধর্তন কর্তপক্ষের কাছে আমার জীবনের নিরাপত্তা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি নিস্পত্তির জন্য আবেদন করি। যার প্রেক্ষাপটে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিষয়টি অনুসন্ধান ও নিষ্পত্তির জন্য সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মহোদয় সহকারী পুলিশ সুপার দেবহাটা সার্কেল বিষয়টি সুরাহার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। সেই লক্ষ্যে ১১ অক্টোবর ২০২০ খ্রিঃ তারিখে বাদী এবং বিবাদী পক্ষকে হাজির হওয়ার জন্য বলা হলেও আলতাফ হোসেন সরকারী আদেশ অমান্য করে হাজির হয়নি। সেখানে আলোচনার ভিত্তিতে ৮৭ শতক সম্পত্তি দক্ষিণ পার্শ্বের অর্ধেক অংশ উপস্থিত সকলের সম্মতিতে আমাকে বুঝে নেওয়ার জন্য অনুমতি দেওয়া হয় এবং আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তাদের দুইজনকে আমার ইজারার টাকা পরিশোধের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিকে সাফায়েত হোসেনের কাছ থেকে দেবহাটা থানা পুলিশ কর্তৃক একটি চোরাই মোটর সাইকেল আটক হওয়ায় গ্রেফতার এড়াতে চিকিৎসার অজুহাতে সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন শালিসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সকলের উপস্থিতিতে আমি উক্তি জমির ঘেরাবেড়া সংস্কার করি। আলতাফ এই ঘটনায় ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে গত ১৪ অক্টোবর ২০২০ খ্রিঃ তারিখে সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে আমার তিন সন্তানের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে একটি মিথ্যা, কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন সংবাদ সম্মেলন করে। উক্ত জমির মালিক আমি নিজেই, আমার তিন সন্তান নয়।
আমার সন্তানেরা স্ব স্ব কর্মস্থলে অত্যান্ত সুনামের সাথে চাকুরী করছে। এলাকায়ও তাদের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। আমার মেঝ ছেলে মোঃ সাহাদাত হোসেন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর বান্দরবান জেলার দায়িত্বে আছে। বান্দরবানে তার কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে সরকারী দায়িত্ব পালন কালে তার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ আনা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আতিয়ার রহমান আরও বলেন আমার ভাইপো আলতাফ হোসেন দেবহাটার একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু। সে দেবহাটা উপজেলার যুব দলের সাবেক সহ-সভাপতি। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও হত্যাসহ দেবহাটা থানায় একাধিক অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। আমার ভাইপো সাফায়েত হোসেন বর্তমানে দেবহাটা উপজেলা জাতীয়তাবাদী মৎসজীবি দলের সাধারণ সম্পাদক। আলতাফ হোসেন এবং সাফায়েত হোসেন নিজেদের পরিবারের ভিতরে অবৈধ দখল দারিত্বের পায়তারা চালাচ্ছে। এমনকি তাদের নিজের বড় ভাই সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোশাররফ হোসেন মশুর সম্পত্তিও অবৈধ দখলে রেখেছে। মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আতিয়ার রহমান ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী আলতাফ হোসেন ও সাফায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মহোদয়, পুলিশ সুপার মহোদয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে আলতাফ হোসেন ও সাফায়েত হোসেনের সহোদর বড় ভাই সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোশাররফ হোসেন মশুও উপস্থিত থেকে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ তুলে ধরেন।