#বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং অপ্রতিরোধ্যভাবে এগিয়ে যাবে : ড. ওয়ালি-উর রহমান
#দেশের যে প্রশংসনীয় কাজ হচ্ছে তা একমাত্র শেখ হাসিনা বলেই সম্ভব হয়েছে : অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত
#বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আছে বলেই আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে: রফিক খান
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২০, ১০:২৩ পিএম আপডেট: ১৫.১০.২০২০ ১০:৩২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বাংলাদেশ একটি অমিত সম্ভাবনাময় দেশ। বাংলাদেশের জনগণ নিজেদের সাফল্যের জন্য গর্ব করতে পারে। বিশ্বে কেবল অন্যরাই পেরেছে, আমাদের দিয়ে হবে না—সেটা আর সত্য নয়। বরং বাস্তবতা এটাই, আজ আর কোনো আবেগপ্রসূত নিছক অনুমানসিদ্ধ কোনো আশাবাদ নয় যে, বাংলাদেশ আজ একটি অনুসরণীয় উন্নয়ন মডেলে রূপান্তরিত হয়েছে। দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১২৮ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব এবং বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ড. ওয়ালি-উর রহমান, আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক খান। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত বলেন, সত্যিকার অর্থে যে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এই বিশ্বাসটা কিছু সমালোচক বা আমরা বাদে সারা বিশ্ব কিন্তু একমত হয়েছে। সারা পৃথিবী। বাংলাদেশ এই মহামারীর মধ্যেও কিন্তু উন্নয়নের অব্যাহত রেখেছে। আজকে ইন্ডিয়াতে সাথে সাথে আমাদের যে সমস্ত মিডিয়াতে আমাদের উন্নয়ন নিয়ে লেখালেখি হচ্ছে তা সত্যিই অবিশ্বাস্য। এর সবকিছুর ক্রেডিট দেওয়া যায় একমাত্র শেখ হাসিনাকেই। কারণ বিগত ১২ বছর ধরে তার হাতেই রয়েছে দেশ। শেখ হাসিনার ক্ষমতায় আমরা এগ্রিকালচারে একটা বিপ্লব ঘটিয়েছে। বাংলাদেশে যখন দেশে সাত কোটি মানুষ ছিল তখন মানুষ তিন বেলা খেতে পারতো না। আমি ৭০, ৭১ ও তার পরবর্তীকালের সময়ের কথা বলছি। কিন্তু এখন সেই জনসংখ্যার তিন গুনের বেশী হওয়া সর্তেও এখন কিন্তু একজন মানুষও না খেয়ে মারা যাচ্ছেনা। আমাদের দেশে দেশীয় সম্পদ, গার্মেন্টস রপ্তানি ও মানব সম্পদের কারণে যে রেমিটেন্স আসছে সেটার কারণে আমাদের দেশ আজ টিকে আছে। আমাদের দেশের অর্থনীতি যেভাবে চলছে একজন সাধারণ জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি বলতে পারি আল্লাহর রহমতে প্রশংসনীয় কাজ হচ্ছে বাংলাদেশে। দেশে আজ কিছু ঘটনা ঘটছে যে ঘটনাগুলি সত্যিই আমাদেরকে ব্যথিত করে দুঃখিত করে এবং আমরা সত্যিকার অর্থে মর্মাহত এই সামাজিক অনাচার গুলোর বিরুদ্ধে। কিন্তু আমি সত্যিকার অর্থেই অবাক হয়েছি যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘটনা ঘটার মাত্র ৯৬ঘণ্টার মধ্যে অরডিয়েন্স জারি করে তা রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত স্বাক্ষর করে তিন দিনের মাথায় তা বাস্তবায়ন করে। এটা মাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেই সম্ভব হয়েছে। সারা দেশের মানুষ এটাকে সাধুবাদ জানিয়েছে। আমি মনে করিনা শুধু মাত্র আইন করেই এই ধরনের অপকর্ম কমানো সম্ভব কিন্তু আইন করেই এই ধরনের অপকর্ম দমন করা সহজ এবং এর সাথে সাথে আমাদের মানসিকতাও পরিবর্তন করতে হবে।
ড. ওয়ালি-উর রহমান বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে হেনরি কিসিঞ্জারের মত আরও অনেকেই ভবিষ্যৎবানী করেছিলেন যে বাংলাদেশ একটি দুর্ভিক্ষের দেশ, সাইক্লোনের দেশ, এদেশে কখনোই উন্নয়ন সম্ভবনা। আমার সাথে তার সাক্ষাতের সময় তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম স্বাধীনতার সময় তোমরা আমাদের বিরোধিতা করেছো, স্বাধীনতার পরো তোমারা আমাদেরকে তলা বিহীন ঝুড়ির দেশ বলছো। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস তার জন্য যে, সে হেনরি কিসিঞ্জারই প্যারিসে উউনেস্কের আয়োজিত শান্তি পুরষ্কার অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তখন তিনিই সেই শান্তি পুরষ্কার নিজ হাতে তুলে দেন। তখন শেখ হাসিনা হেনরি কিসিঞ্জারকে তার সেই কথা কেন বললো তা জানতে চাইলে হেনরি কিসিঞ্জার উত্তরে বলেন, দেখো আমাকে পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থা তখন বলেছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মাত্র ৭টা আসন পাবে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যেসব নেতারা দলের হাল ধরেছিলেন এবং বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্ন রয়েছে বাংলাদেশের মানুষের জন্য এটাকে আমাদের বাঁচাতে হবে। এটা সত্য যে মিলিটারিরা অন্যায়ভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল, স্বৈরাচার এরশাদ ক্ষমতা নিয়েছিল; সেখানে জিডিপি গ্রোথ হয়েছে ২.১%, ১.৫%। কিন্তু যখনি আমাদের গণতান্ত্রিক ক্ষমতার আওতাধীন আসলাম বিশেষ করে যখন আমরা প্রথম শেখ হাসিনার নেতৃতে আসলাম তখন আমাদের জিডিপি গ্রোথ ২% থেকে হয়ে গেল ৬.২%। এইযে শুরুটা করলেন তিনি এটা আজও চলে যাচ্ছে বহমান গতিতে। এইযে এসব আমি যখন তাকে এইসব তথ্য তুলে ধরলাম হেনরি কিসিঞ্জারের কাছে তখন তিনি বললেন, আমি স্বীকার করি তোমরা জাতি হিসেবে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে এবং এর পিছনে তোমাদের প্রধানমন্ত্রীর একটা গুন রয়েছে। আমার তখনকার কথাটি ছিল গোয়েন্দা সংস্থা কিছু ভুল তথ্যের সংমিশ্রণ। আজকে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার হাতে রয়েছে দেশ এবং আমরা চায় তিনি তার এই শক্তিশালী হাত দিয়ে দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাক।
রফিক খান বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি আজকের উপস্থাপন মোঃ নাসির উদ্দিন সাহেব আজকে উপস্থিত অতিথি সবাইকে আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশী প্রবাসী ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আজকে দেশে চার লেন মহাসড়ক, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, এলএনজি টার্মিনাল, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, পরিকল্পিত বহুমুখী বৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলাসহ উন্নয়নের বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে দেশজুড়ে। পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরুর পর থেকেই একের পর এক মেগা প্রকল্প নিয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে দেশ। আজকে দেশে বিদ্দুতখাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সামাজিক উন্নয়ন থেকে শুরু করে অর্থনৈতিকভাবেও ভারতকেও পেছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ যা আজকের অনেক মিডিয়াই উঠে এসেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। উন্নতি হয়েছে রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন অবকাঠামোর। রপ্তানি ক্ষেত্রেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। আজকে বিশ্ব বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে আছে। যা একমাত্র সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার অবদানে। আজকে বিশ্বের অনেক দেশেই তার কাছে পরামর্শ চাচ্ছে তাদের নিজের দেশে কিভাবে এমন উন্নয়ন সম্ভব করা যায়। অন্যদিকে মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে আইনি লড়াইয়ে বিশাল সমুদ্রসীমা লাভ করেছে বাংলাদেশ। এসব নিয়ে মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে নতুন এক বাংলাদেশ। ভূমি উন্নয়ন, সীমানাপ্রাচীর, সংযোগ সড়ক, পানি ও বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনসহ বেড়িবাঁধের কাজ শেষ হলেই ডিসেম্বরে আহ্বান করা হবে শিল্প প্লট বরাদ্দের আবেদন। আজকে শিল্প ও বাণিজ্য বলুন, কৃষিতে কৃতিত্ব বলুন, নারীর ক্ষমতায়নে বলুন, শিক্ষাখাত, স্বাস্থ্যসেবায় সব দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আছে বলেই আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে কর্মসংস্থানের জন্য যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তা অত্যন্ত ইতিবাচক ও প্রশংসনীয়। একে যুগান্তকারী পদক্ষেপ বললেও ভুল হবে না। আমরা অর্থনৈতিক দিক থেকেও এগিয়ে গেছি। আমাদের জিডিপি গ্রোথ বেড়ে গেছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বেড়েছে, পোশাকশিল্পে আমরা রপ্তানি করছি। পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে তুলনা করলেও আমরা অনেক এগিয়ে গেছি। বিশেষ করে জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। শিক্ষার মানে প্রভূত অগ্রগতি ঘটেছে।