প্রকাশ: শনিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২০, ৯:৩৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. কাউসার জয়ী হয়েছেন। তাঁর জয়ে হাসি ফুটেছে ফরিদপুর-৪ আসনের তরুণ ও জনপ্রিয় সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর মুখে।
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী কে এম ওবায়দুল বারী দীপু খানের চেয়ে কাউসার ১১ হাজার ১০৬ ভোট বেশি পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৬১২ ভোট। ২২টি কেন্দ্রের মধ্যে ২১ কেন্দ্রের ফলাফল পাওয়া গেছে। বাকি একটি কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত রয়েছে।
শনিবার (১০ অক্টোবর) চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদে এই উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোট শুরু হয় সকাল নয়টায়। শেষ হয় বিকাল চারটায়।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহকে ছেড়ে ফরিদপুর-৪ আসনের তরুণ ও জনপ্রিয় সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর হাতে স্বর্ণের নৌকা তুলে দিয়ে যোগ দেন মো. কাউসার। সেই থেকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে জয়ী করতে নিক্সনের অনুসারী নেতাকর্মীরা রাতদিন মাঠে থেকেছেন। ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে ভোট ছেয়েছেন চরভদ্রাসন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কাউসারের জন্য।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং দক্ষ নেতৃত্বের কারণে ফরিদপুর-৪ আসনে বিপুল জনপ্রিয় সাংসদ নিক্সন চৌধুরী। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে দুবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন তিনি। তার কাছে দুবারই পরাজিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী সাবেক সাংসদ কাজী জাফরউল্যাহ। জনগণ অন্তপ্রাণ নিক্সন চৌধুরী ভোটের আগে মানুষকে যে প্রতিশ্রুত দিয়েছেন তা পূরণ করেছেন। সদলাপী এবং সুখে-দুঃখে মানুষের পাশে থেকে ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন তিনি। নিক্সন চৌধুরী যেদিকে থাকেন সাধারণ মানুষের সমর্থনও সেদিকে ঝোকে। তার জনপ্রিয়তা কাউসারের বিজয়ী হওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে। আবার রাজনীতির মাঠে শত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কাউসারকে বিজয়ী করে আনার পেছনে নিক্সন চৌধুরীর অসামান্য ভূমিকাও অনস্বীকার্য। তাই নৌকার জয়ে চওড়া হাসি ফুটেছে তরুণ এই সাংসদের মুখে।
এদিকে নিক্সন চৌধুরীর সঙ্গে যোগদানের কদিন পরেই হয়রানির মুখোমুখি হতে হয়েছিল কাউসারকে। কোনো দৃশ্যমান কারণ ছাড়াই কাউসারকে উপজেলার সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রে চিঠি পাঠায় জেলা আওয়ামী লীগ। সেই সঙ্গে, উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থী পরিবর্তনের সুপারিশ করেন। কিন্তু বিপরীতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ তদন্ত করে দেখতে পায় যে, কাউসারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার কোনোটাই সত্য নয়। পরে গত ৭ অক্টোবর দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে জানানো হয়, উপজেলা কমিটির কোনো নেতাকে বহিষ্কারের ক্ষমতা তাদের নেই। তারা কাউসারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছেন তারও কোনো সত্যতা মেলেনি। কাউসারই যে উপনির্বাচনে নৌকার চূড়ান্ত প্রার্থী, এ কথাও জানিয়ে দেয়া হয় চিঠিতে। এছাড়া সবাইকে এক হয়ে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়।
এরপর গত বৃহস্পতিবার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা চরভদ্রাসনে কাউসারের পক্ষে নির্বাচনী সভা করেন। সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা সবাইকে ভেদাভেদ ভুলে নৌকাকে বিজয়ী করতে কাজ করার আহ্বান জানান।
গত বছর ২৩ অক্টোবর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মুসার মৃত্যুর কারণে উপজেলা চেয়ারম্যান পদটি শূন্য হয়ে যায়। গত ২৯ মার্চ এ উপনির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। করোনার কারণে তা পিছিয়ে ১০ অক্টোবর ভোট গ্রহণের দিন ঠিক করা হয়।