প্রকাশ: শনিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২০, ৮:৫৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা কলেজ। ১৮৪১ সালে ১৮ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ঢাকা কলেজ মেধা ও রাজনীতিতে ক্রমবর্ধমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষর রেখে চলেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পর্ব পাকিস্তানের ঢাকাতে অবস্থিত ঢাকা কলেজের ছাত্র, শিক্ষক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে গড়া বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অধিকাংশ নেতাকর্মীরা ঢাকা কলেজের ছাত্র ছিল। এবং ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা স্বসঃফৃর্তভাবে মহান স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহন করে। তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান, বর্তমানে ( সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের দিন ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা স্ব শরীরে উপস্থিত থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিপক্ষে যুদ্ধে জড়িয়ে বাংলার স্বাধীনতার জন্য তাদের বুকের তাজা রক্ত উৎসর্গ করে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঢাকা কলেজ শাখা বরাবরই আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে পাশে থেকে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতে পিছুপা হয় না।
কিন্তু ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গত ৪ বছর ধরে অবহেলিত ৷ সর্বশেষ ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ৩ মাস মেয়াদি আহ্বায়ক কমিটি। ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর তিন মাসের জন্য নুর আলম ভূইয়া রাজুকে আহ্বায়ক করে একটি আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। বর্তমানে সেই তিন মাস মেয়াদি আহ্বায়ক কমিটিতেই চলছে ঢাকা কলেজ ইউনিট ছাত্রলীগের রাজনীতি। এর মাঝে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি কেন্দ্রীয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ৷ ছাত্রলীগের দুঃসময়ের কান্ডারী বলে বিবেচিত ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের মত গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়া এবং সিনিয়র অনেক নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান না পাওয়ায় রাজনীতির জীবনে হতাশা নেমে এসেছে বলে অনেক সিনিয়র নেতার অভিযোগ।
ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শুভ্রদেব হালদার বাপ্পি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করছি। এবং ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছি। বাপ্পি আরও বলেন, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের দীর্ঘদিন কমিটি না থাকাতে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়েছে। তাই আমরা প্রত্যাশা করি, জননেত্রী শেখ হাসিনার ছাত্রলীগের সোনালি আবিষ্কার জয়-লেখক শ্রীঘই ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করবেন। এবং আমাদের কলেজে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে দেশ ও জাতির সেবায় কাজ করার সুযোগ প্রদান করবেন।
এদিকে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ নেতা ও দক্ষিণায়ন হলের আবাসিক ছাত্র এম.সাইফুর রহমান ( এম.এস) বলেন, আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিটি আন্দোলন ও সংগ্রামের গর্বিত সারথি ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ। শিক্ষার সাথে সমাজের গভীর সেতুবন্ধন,শিক্ষার সাথে সমাজকে যুক্তকরনের লক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক আমাদের পরম প্রিয় আপা দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতিটি নির্দেশনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাথে থেকে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছে। ২০১৪ সালে বিএনপি জামাত যখন পেট্রোল বোমা মেরে দেশের মধ্যে ব্যাপক নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছিলো তখনও রাজপথের অতন্দ্র প্রহরী হয়ে মাঠে ছিলো ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ। ,২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন যখন বিএনপি জামাতের নেতাকর্মীরা ভিন্নদিকে মোড় দিতে বদ্ধপরিকর ভাবে আন্দোলন করেছিল তখন আমরা ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদেরকে কঠোরভাবে মোকাবিলা করে তাদের সরকার হাঠানো সকল পরিকল্পনা ম্লান করে দেই। এবং দীর্ঘদিন ক্যামপাসে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকাতে ছাত্রলীগের চেইন অব কমান্ড নষ্ট হচ্ছে।কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটির বেলায় কেন্দ্র থেকে বরাবরই কেন যেন এক উদাসীনতা। তিনি আরো বলেন, নতুন নেতৃত্ব সর্বদা সংগঠনের গতিশীলতাকে বেগবান করে।আমরা আশা করছি শীঘ্রই জয় ভাই- লেখক দাদা আমাদের কমিটির ব্যাপারটি বিবেচনায় রাখবেন।
ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটির ব্যাপারে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, করোনা ভাইরাসের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললে তখন সম্মেলন করে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটির সিন্ধান্ত নেওয়া হবে। এখন আপাতত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে তাই জন্য নতুন কমিটির ব্যাপারে কিছু করা যাচ্ছে না।
ভোরের পাতা/এএম