আসন্ন ঢাকা-১৮ আসনে উপনির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীদের কর্মী ও সমর্থকরা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উত্তরায় বাসার সামনে বিক্ষোভ করছে। এসময় বিক্ষুব্ধ কর্মী ও সমর্থকরা বিএনপি মহাসচিবের বাসায় ইটপাটকেল ও ডিম ছুড়ে মারেন।
বিক্ষোভ থেকে তারা ‘জাহাঙ্গীরের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে, জুতা মারো তালে তালে জাহাঙ্গীরের দুই গালে, জাহাঙ্গীরের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’সহ বিভিন্ন স্লোগানে আশপাশের এলাকা মুখরিত করে তুলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান এই তথ্যটি নিশ্চিত করে বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাসায় সামনে মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীদের কর্মী ও সমর্থকরা বিক্ষোভ করছেন। আর তারা মহাসচিবের বাসায় ঢিলও মেরেছেন। কিন্তু তারা কাদের কর্মী তা আমি জানি না।
এরআগে গত ১২ সেপ্টেম্বর দলের চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে চার শূন্য আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে দলটির মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকার নিয়েছে বিএনপি। এসময় ঢাকা-১৮ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা যখন সাক্ষাৎকারে তখন তাদের সমর্থকরা সংঘর্ষ ও মারামারিতে লিপ্ত হয়। এই আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন এবং কফিল উদ্দিনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন এবং একজন কর্মীর মাথা ফেটে গেছে।
এদিকে বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-১৮ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী এম কফিল উদ্দিন আহম্মদ এবং বাহাউদ্দিন সাদির কর্মী ও সমর্থকরা মির্জা ফখরুলের বাসায় সামনে বিক্ষোভ করছেন।
তবে এই বিষয়টি অস্বীকার করে বাহাউদ্দিন সাদি বলেন, যারা বিচার (১২ সেপ্টেম্বরের ঘটনা) পায়নি তারা বিক্ষোভ করতে পারেন। আর এর সঙ্গে আমার কোন সম্পৃক্তা নেই।
জানতে চাইলে এম কফিল উদ্দিন আহম্মদ বলেন, বিএনপি মহাসচিব আমার খুবই প্রিয় নেতা। আর উনার সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। আর কারা এটা করছেন সেটা আমি জানি না। এছাড়া আজ সকালে আমি অফিসে চলে এসেছি। এখনও অফিসে আছি।
অন্যদিকে গতকাল ঢাকা-১৮ এবং সিরাজগঞ্জ-১ আসনে উপনির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। ঢাকা-১৮ আসনে এসএম জাহাঙ্গীর ও সিরাজগঞ্জ -১ আসনে সেলিম রেজাকে মনোনয়ন দিয়েছে দলটি। শুক্রবার এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থী ঘোষণা দেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসনে বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের চিঠি পেয়েছিলেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর আলম ও বিএনপি ব্যবসায়ী নেতা বাহাউদ্দিন সাদী। যদিও পরে আসনটি শরীকদেরকে ছেড়ে দেয় বিএনপি। ওই নির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন ভোট করেন। কিন্তু এবার ঢাকা-১৮ আসনে দলীয় প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি।
এবার উপনির্বাচনে এই আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন: শতিয়াক আজিজ উলফাত, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এম কফিল উদ্দিন আহম্মদ, বাহাউদ্দিন সাদি, আক্তার হোসেন, আব্বাস উদ্দিন, ইসমাঈল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান ও মোস্তফা জামান।
এছাড়া সিরাজগঞ্জ-১ আসনে টি এম তাহজিবুল ইসলাম, নাজমুল হাসান তালুকদার, রবিউল হাসান ও সেলিম রেজা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তবে গতবারের প্রার্থী কণ্ঠশিল্পী কনক চাঁপা এবার মনোনয়ন চাইলেও সাক্ষাৎকার দেননি।
প্রসঙ্গত, ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনে তফসীল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এই দুই আসনে উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ নভেম্বর। আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে সিরাজগঞ্জ-১ এবং সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে ঢাকা-১৮ আসন শূন্য হয়।
ভোরের পাতা/এএম