নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের পুরনো সংঘাত গত ২৭ সেপ্টেম্বর (রবিবার) থেকে নতুন করে আবার শুরু হয়েছে। গত কয়েক দিনের সংঘাতে ৩ শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। শুরু থেকে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানানো হলে দুই পক্ষই তা প্রত্যাখ্যান করে আসছিল।
শুক্রবার (৯ অক্টোবর) রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, রুশ প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে দুই পক্ষ মস্কোতে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় সম্মত হয়েছে। সেই আলোচনা শেষে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোর ৬টার কিছু সময় আগে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে যুদ্ধবিরতির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পর এখন আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান পরবর্তী ‘ফলপ্রসূ’ আলোচনা শুরু করবে।
বৃহস্পতিবার রাতে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে সময় তিনি প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে দুই দেশের নেতাকে সীমিত পরিসরে অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর আহ্বান জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এর মধ্য দিয়ে সীমিত সময়ের জন্য হলেও লড়াই বন্ধ থাকবে এবং দুই পক্ষ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করে নিতে পারবে। তাছাড়া ওই সময়ের মধ্যে বন্দিবিনিময়ও হতে পারে।
বিবিসি জানিয়েছে, রাশিয়ার মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি আজ শনিবার দুপুর ২টা থেকে কার্যকর হবে বলে জানা গেছে। যুদ্ধবিরতি চলাকালে বন্দি বিনিময় ও মরদেহ উদ্ধারের কাজ চলবে।
নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলটি জাতিগত আর্মেনিয়ার নিয়ন্ত্রাধীন। তবে আন্তর্জাতিকভাবে অঞ্চলটি আজারবাইজানের অংশ বলে স্বীকৃত। গত কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহতম সাম্প্রতিক সংঘাতের জন্য পরস্পরকে দায়ী করে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। দুটি দেশই সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ছিল। আর্মেনিয়ায় রাশিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে এবং দুটি দেশই আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোট কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশনের সদস্য। তবে, আজারবাইজানের সঙ্গেও রাশিয়ার সখ্য রয়েছে। এ কারণেই নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলের সংঘাত থামাতে দেশ দুটির মধ্যে মধ্যস্থতা করেছে রাশিয়া।