প্রকাশ: শুক্রবার, ৯ অক্টোবর, ২০২০, ১০:৩৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে রাষ্ট্রীয় মদদে শুধু নৌকায় ভোট দেয়ার জন্য সংখ্যালঘু, মুসলিম, বৃদ্ধা, শিশুদেরও ধর্ষণ করেছিল, কখনোই তারা এ ধর্ষণের বিচার করেনি। এমনকি মামলাও করতে দেয়নি। এখন তারা ধর্ষণ ইস্যুতে রাজনীতি করছে। এই জঘন্য ও নিকৃষ্টতম অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার যখন উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তখন তারা প্রশংসা না করে, উল্টো সমালোচনা করছে। সামাজিকভাবে এবং পারিবারিকভাবে সন্তানদের ভালো মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে হবে, তাহলেই ধর্ষণ কমে আসবে মনে করেন আলোচকরা। দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১২২ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা।
শুক্রবার (০৯ অক্টোবর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সাবেক আইনমন্ত্রী এ্যাড. আবদুল মতিন খসরু, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মহিলা ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক, সংসদ সদস্য এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ্যাড. মেহের আফরোজ চুমকি, সাবেক সংসদ সদস্য এবং সাবেক ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এ্যাড. নূরজাহান বেগম মুক্তা। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
এ্যাড. আবদুল মতিন খসরু বলেন, কিছুদিন ধরে আমাদের দেশে ধর্ষণের যেন মহামারি লেগে রয়েছে। এর কারণে সারা বিশ্বের কাছে আমাদের মাথা কিছুটা নিচু হয়ে যাচ্ছে। যারা ধর্ষিত হচ্ছে, তারা তো আমাদেরই মা-বোন। এটা বন্ধের জন্য আমাদের অবস্থা বুঝে কিছু কাজ করতে হবে। আমাদের পরিবার, স্কুল-কলেজের সিলেবাস, আমাদের পরিবেশ এটা যাতে ধর্ষণের সহায়ক না হয় সেটা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। দেশের অনেক জায়গায় ধর্ষণ হয় কিন্তু মামলা হয়না। যারা পরিবারের সদস্যদের দ্বারা ধর্ষণ হচ্ছে তারা অনেকেই এটা লুকিয়ে রাখে লোক সমাজের ভয়ে। ধর্ষিতার পিতা-মাতারা অনেক সময় এই সম্মানের ভয়ে মামলা করেনা। কারণ মামলা করতে গেলে সে আরেকবার ধর্ষণ পরিস্থিতির মত অবস্থার শিকার হয়। কারণ আমরা উকিলরা যেভাবে তাদের জেরা করি সেগুলো বলার মত ভাষা না। আমি আইনজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি যে, ধর্ষিতারা কোর্টে এসে আরেকবার ধর্ষণের মত অবস্থার শিকার হয়; এই রকম একটা ভাব চলে আসছে অনেক দিন ধরেই। তাই আমাদের চিন্তা করা উচিৎ আমাদের ঘরেও মা-বোন আছে। আবার মামলার দীর্ঘতার জন্য অনেক পিতা-মাতারা মামলা করতে চায় না। আমাদের দেশে মাত্র দুটি ডিএনএ ল্যাবরেটরি আছে। এইসব ল্যাবরেটরিতে যেসব পরীক্ষা পড়ে রয়েছে তা নিস্পন্ন করতে আরও দুই-তিন বছর সময় লেগে যাবে। তাই দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে ডিএনএ ল্যাবরেটরি স্থাপন করতে হবে। আমাদের নারীরা দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক। তাদের ইজ্জত যদি আমরা জাতিগতভাবে রক্ষা না করতে পারি তাহলে আমরা কিভাবে সভ্য জাতি হিসেবে গড়ে উঠবো। এরপর মামলা দ্রুত নিষ্পন্নের জন্য প্রচুর বিচারক নিয়োগ দিতে হবে। পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে দেশে ধর্ষণের মাত্রা অনেক বেড়ে গিয়েছে। সেদিকেও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।