প্রকাশ: শুক্রবার, ৯ অক্টোবর, ২০২০, ১০:৩৫ পিএম আপডেট: ০৯.১০.২০২০ ১০:৫২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে রাষ্ট্রীয় মদদে শুধু নৌকায় ভোট দেয়ার জন্য সংখ্যালঘু, মুসলিম, বৃদ্ধা, শিশুদেরও ধর্ষণ করেছিল, কখনোই তারা এ ধর্ষণের বিচার করেনি। এমনকি মামলাও করতে দেয়নি। এখন তারা ধর্ষণ ইস্যুতে রাজনীতি করছে। এই জঘন্য ও নিকৃষ্টতম অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার যখন উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তখন তারা প্রশংসা না করে, উল্টো সমালোচনা করছে। সামাজিকভাবে এবং পারিবারিকভাবে সন্তানদের ভালো মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে হবে, তাহলেই ধর্ষণ কমে আসবে মনে করেন আলোচকরা। দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১২২ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা।
শুক্রবার (০৯ অক্টোবর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সাবেক আইনমন্ত্রী এ্যাড. আবদুল মতিন খসরু, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মহিলা ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক, সংসদ সদস্য এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ্যাড. মেহের আফরোজ চুমকি, সাবেক সংসদ সদস্য এবং সাবেক ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এ্যাড. নূরজাহান বেগম মুক্তা। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
নূরজাহান বেগম মুক্তা, আমরা এমন একটা সময়ে বাস করছি যখন করোনা নামক একটা বৈশ্বিক মহামারী চলছে। যেকোনো মহামারীতে সবচে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নারী ও শিশুরা। আজকের দিনে ধর্ষণের যে ঘটনাগুলো ঘটছে সেগুলো অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। তবে একই সঙ্গে আমি বিষয়টিকে রহস্যময়ও মনে হয়। আমি ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকেই বলতে চাই, ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে পেট্রোল বোমা, অগ্নি সন্ত্রাস চলেছে, এরপর দেখেছি বিদেশী কূটনীতিকদের হত্যা করতে, বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নি উৎসব চলেছে। এসব ঘটনার পিছনে কোনো ঘটনা রয়েছে কিনা সেটাও আমাদের তদন্ত করে দেখতে হবে। আজকের দিনে সামাজিক অপরাধ ধর্ষণ আগেও ছিল, কিন্তু এখন আমরা সেগুলো বেশি বেশি জানতে পারছি। কারণ এখন প্রচারমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সব কিছুই প্রকাশিত হয়। ২০০১ সালে পূর্ণিমা, নফুজা, রহিমাদের ধর্ষণ করা হয়েছিল শুধুমাত্র নৌকায় ভোট দেয়ার জন্য। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন পরিসংখ্যানের ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ছাত্রদলের সীমান্ত, মিতুলরা ধর্ষণ করেছিল। দিনাজপুরের ইয়াসমিনকে ধর্ষণের পর হত্যার পর তার লাশের ওপর পা দিয়ে তখনকার প্রধানমন্ত্রী চীনে গিয়েছিল বিশ্ব নারী সম্মেলনে যোগ দিতে। বিএনপি কখনোই এসব ধর্ষণ হত্যার বিচার করেনি। বরং বর্তমান সরকার বিচার করার জন্য উদ্যোগ নেয়ার পর প্রশংসা না করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে। বিএনপি যখন ধর্ষণের বিচার চেয়ে কথা বলে তখন লজ্জা লাগে। এক সময় এসিড নিক্ষেপের কারণে শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলে অনেকাংশেই কমে এসেছে। এক্ষেত্রে ধর্ষণ অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার পক্ষে আমি। কেননা, এই অপরাধী জেল থেকে কোনোভাবে আইনের ফাঁকফোকরের কারণে বের হতে পারলে সে আবারো একই অপরাধ করবে। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলে তার সামনে এই সুযোগ আর থাকবে না। একই সাথে আইনের কিছু ধারায় পরিবর্তন করতে হবে। একই সাথে নারী চিকিৎসক দিয়ে মেডিকেল চেক আপ করতে হবে। আইনে এখন অর্থদণ্ডের কথা উল্লেখ আছে। বিষয়টাকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি। এমনকি ক্ষতিপূরণের অর্থ যেন ভিকটিম নিজে পায় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।