প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২০, ১:৩৩ এএম | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদকএকাত্তরের যে দিনটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, সেই ৭ মার্চকে ‘ঐতিহাসিক দিবস’ হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপন সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা পরিপত্রের ‘ক’ ক্রমিকে ৭ মার্চকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবও অনুমোদন পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল বুধবার মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে সচিবালয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এ দিনটি (৭ মার্চ) ঐতিহাসিক দিন সবাই জানেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃঢ় বলিষ্ঠ নেতৃত্বের নির্দেশনা ও জাতীয় জাগরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেওয়া ভাষণে।’ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে, সেই ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭ কোটি বাঙালিকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ঘোষণা দেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম- এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
তার ওই ভাষণের ১৮ দিন পর পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালি নিধনে নামলে বঙ্গবন্ধুর ডাকে শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। নয় মাসের সেই সশস্ত্র সংগ্রামের পর আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পরাজিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই আত্মসমর্পণের দলিলে সই করে। বিভিন্ন দেশের ৭৭টি ঐতিহাসিক নথি ও প্রামাণ্য দলিলের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ‘ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ হিসেবে ‘মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ যুক্ত করেছে ইউনেস্কো। সে প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এটার আন্তর্জাতিক গুরুত্বও আছে। ইউনেস্কো এই ভাষণটিকে ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সেই বিবেচনায় জাতীয় জাগরণ ও স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম প্রেরণার উৎস হিসেবে দিবসটি উদযাপন করা খুবই প্রাসঙ্গিক।’
সে কারণে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় প্রস্তাব আকারে বিষয়টি মন্ত্রিপরিষদে এনেছে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সঠিকভাবে উপস্থাপন ও তাৎপর্য তুলে ধরার মধ্যেই এ দিবসটি পালনের যৌক্তিকতা। দিবসটি উদযাপনের মাধ্যমে দেশের জনগণের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপূর্ণ বিকাশ লালন-পালন ও যথাযথ চর্চা করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ‘সকল শিক্ষার্থী ও মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে পরিপূর্ণ সংস্থাপন করার প্রয়াস বাস্তবায়ন করা সহজ হবে। সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দফতর, সংস্থা এই দিবস তাদের নিজস্ব কর্মসূচির মাধ্যমে উদযাপন ও বাস্তবায়ন করবে।’ তবে ওই দিন কোনো ছুটি থাকবে না বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।