#বাংলাদেশের প্রত্যেকটি উন্নয়নে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ছোঁয়া রয়েছে: নজরুল ইসলাম বাবু।
#শেখ হাসিনার দূরদর্শিতায় কোনও দুর্যোগেই বাংলাদেশ মুখ থুবড়ে পড়েনি: নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন।
#বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার সব সূচকে ঈর্ষণীয় সাফল্য এনে দিয়েছেন শেখ হাসিনা: শাহাব উদ্দিন মোহাম্মদ।
প্রকাশ: বুধবার, ৭ অক্টোবর, ২০২০, ১০:৩২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
অমিত সম্ভাবনার দেশ বাংলাদেশ। ইদানীং দেশ ছাড়িয়ে বহির্বিশ্বেও প্রায়শই এ কথা শোনা যায়। যে আমেরিকার এক সময়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার এই দেশকে 'তলাবিহীন ঝুড়ি' বলে চরম অবজ্ঞা করেছিলেন। মহান আল্লাহর ইচ্ছায় সেই আমেরিকারই পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন এ দেশের উত্থান প্রশ্নে বাংলাদেশের পক্ষে বাজি ধরেন। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার সব সূচকে ঈর্ষণীয় সাফল্য এনে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১২০ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। বুধবার (০৭ অক্টোবর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু, সংসদ সদস্য এবং লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, জার্মান আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য শাহাব উদ্দিন মোহাম্মদ। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, বাংলাদেশের বিনির্মাণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা অসীম। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন এই দেশকে নিয়ে। সে স্বপ্নের ধারাবাহিকতায় মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। সেই মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ ইজ্জত হারা মা বোনদের আত্মত্যাগে এই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল। সেই মহান পিতার প্রত্যাশিত বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্ব জয় করেছে। আমরা জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছি এই উন্নত বিশ্বের বুকে। আর এর পিছনের যার অবদান রয়েছে তিনি হলেন সেই মহান নেতার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। নিম্ন আয়ের দেশগুলোকে অনেক আগেই ছাড়িয়ে যাওয়া বাংলাদেশ অর্থনীতি ও আর্থসামাজিক বেশির ভাগ সূচকেই ছাড়িয়ে গেছে দক্ষিণ এশিয়াকে। বাংলাদেশ আজ নিজস্ব স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি দেশ। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছাড়িয়েছে বহুগুণে। কমেছে অতিদরিদ্রতার হার। রপ্তানিতেও উচ্চতার শিখর স্পর্শ করতে চলেছে বাংলাদেশ। মানবসম্পদ রপ্তানিও বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি কমছে। অর্থনীতির সূচকগুলো এখন অনেক দেশের তুলনায় ওপরে অবস্থান করছে। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের মতো প্রতিষ্ঠানও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেছে। আইএমএফের মতে, প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহরণ। বিশ্বব্যাংক মনে করে, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকে একই সঙ্গে উন্নয়ন ঘটানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রীতিমতো বিস্ময়। সরকারও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের তালিকায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। একসময় আমরা অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের জন্য স্লোগান দিতাম আজ সেই বাংলাদেশ খাদ্যখাত বলেন, বস্ত্রখাত বলেন, স্বাস্থ্যখাত; সব খানেই শেখ হাসিনার উন্নয়নের ছোঁয়া লেগে আছে। মানবসম্পদ, মাথাপিছু আয় ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা- এই প্রধান তিনটিসহ অর্থনীতির সব সূচকে আমরা এগিয়ে আছি। এদিকে গত ১২ বছরের এক হিসেবে দেখা গেছে, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় আকাশচুম্বী সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ভবিষ্যৎ নির্ভর করে বর্তমানের ওপর এবং বর্তমান নির্ভর করে নেতৃত্বের ওপর। আর সফল নেতৃত্বের সবগুণাবলী আছে আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে।
নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন বলেন, ভোরের পাতার বিগত কয়েক পর্বে আমি আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলাম আজকেও আপনারা আমাকে সম্ভাবনার বাংলাদেশ বিষয়ে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ করেছেন তার জন্য ভোরের পাতা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি আমার বক্তব্যের শুরুতে স্মরণ করতে চাচ্ছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যিনি ছিলেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি, যিনি তার যৌবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলি পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি আঁকারে যাপন করেছিলেন। এই বাংলাদেশ গত দশ বছরে আমরা যা দেখলাম, এই বাংলাদেশ ছিল খাদ্য ঘাটতির দেশ, একসময় হেনরি কিসিঞ্জারের কাছে এই দেশ ছিল 'তলাবিহীন ঝুড়ি'র দেশ, এই বাংলাদেশ ছিল সারা বিশ্বে অতি দরিদ্রের মডেলের দেশ, এই বাংলাদেশ ছিল দুর্নীতিতে ৫ বারের চ্যাম্পিয়নের দেশ। সেই বাংলাদেশ আজকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে, খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে পরিণীত থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে অতুলনীয় সাফল্য এনেদিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকে এই জুমে আমরা ভার্চুয়ালি আলোচনা করছি এর ব্যবস্থাও করে ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তি করে দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের নারীরা হিমালয় পর্বতে উঠছে, সাতটি মহাদেশের সাতটি শৃঙ্গে উঠছে। বাংলাদেশের কিশোরীরা ফুটবল খেলায় চ্যাম্পিয়ন হচ্ছে, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনী জাতিসংঘের অধীনে শান্তিরক্ষায় প্রাধান্য ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বেশি না হলেও, একবার অথবা কয়েকবার বিভিন্ন ক্রিকেট পরাশক্তিকে পরাজিত করেছে। সম্ভাবনা আছে বলেই বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে পেরেছে। সম্ভাবনা আছে বলেই ভারত এবং চীনের সমর্থন ছাড়াও এই সমস্যাকে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপন করছে। এইগুলি সবই সম্ভব হয়েছে একমাত্র আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনার আত্মবিশ্বাসের কারণে। যেকোনো বিষয়ে এতো দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার মত পারদর্শিতা আমি পৃথিবীতে অন্য কোন নেতার মধ্যে দেখেতে পারিনি যেমনটা দেখতে পেরেছি আমাদের নেত্রীর মধ্যে। বিশ্ব নেতাদের মধ্যে আজ সফল নেতাদের অবস্থানে রয়েছেন আমাদের নেত্রী তার এইসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য। এই করোনা সংকট কালে পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশের রাষ্ট্রনেতারা যখন ব্যর্থ হয়েছে, তখন বাংলাদেশে সফলতার সাথে এই সংকট মোকাবিলা করে যাচ্ছেন তিনি। আজ দেশে শুধু করোনা পরিস্থিতি নয়, দেশের বিগত কয়েকটি দুর্যোগেই তিনি দৃঢ়তা ও দ্রুততার সাথে মোকাবেলা দিয়ে এসেছেন, আসছেন এবং সামনেও করে যাবেন বলে আমি মনে করি।
শাহাব উদ্দিন মোহাম্মদ বলেন, আজকের এই দিনে আমি আমার বক্তব্যের শুরুতে স্মরণ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যে মহামানবের অবদানে আজ আমারা লাল সবুজের পতাকা নিয়ে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছি, গভীর শ্রদ্ধা সাথে স্মরণ করছি ১৫ই আগস্টের সেই কালো রাতে তার পরিবারের যেসব সদস্যরা শাহাদাৎ বরণ করেছিলেন। গভীর শ্রদ্ধা সাথে স্মরণ করছি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার যুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ ইজ্জত হারা মা বোনদের। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে আমরা জানি যে বাংলাদেশ সব সময় ছিল একটি সম্ভাবনার বাংলাদেশ। জাতির জনকের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘ সংগ্রাম করে এই দেশটাকে স্বাধীন রাষ্ট্রের তালিকায় এনে দিয়েছিলেন। তিনি তার আত্মজীবনীতে লিখেছিলেন, জাপানের মাটি থেকে আমাদের মাটি উর্বর। আজকে আমাদের জননেত্রীর ভিসন সেটাই তো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশ এখন অনেক সুপরিচিত হয়েছে সারা বিশ্বে। কর্মদক্ষতা, ব্যবসা বাণিজ্য সব দিক থেকে আমরা কোনভাবেই পিছিয়ে নেই যার একমাত্র অবদান হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা। আজকে বাংলাদেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে। দেশ এখন অনেক পণ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে বিদেশেও রফতানি করছে। ব্যবসা সম্প্রসারণ ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নসহ সার্বিক সহযোগিতা দিতে প্রধানমন্ত্রীও সচেষ্ট রয়েছেন। আজ গ্রামে গ্রামে পৌঁছে গেছে ইন্টারনেট, কম্পিউটার, স্মার্ট ফোন। ইন্টারনেট জগতে বাংলাদেশ চতুর্থ জেনারেশনে (৪জি) প্রবেশ করেছে। আগামী বছর বাংলাদেশে ৫-জি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে দ্রুত এগিয়ে নিতে কৃষি, শিল্প উৎপাদনের পাশাপাশি অবকাঠামো, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ওপরও তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন।