প্রকাশ: বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১০:৪৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
শেখ হাসিনা এখন একটি আদর্শের নাম। একাধারে তিনি মমতাময়ী মা, কঠোর প্রশাসক। বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের বিরুদ্ধে যায় এমন কোনো সিদ্ধান্ত কোনোদিন তিনি গ্রহণ করেননি। তার নেতৃত্বেই ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। তিনি এখন বিশ্বনেতায় পরিণত হয়েছেন। শেখ হাসিনা শুধু যে তার রক্তের কারণে নয়, বরং তিনি তার কাজের মাধ্যমেও বিশ্বের মানুষের মননে হাজারো বছর অমর হয়ে থাকবেন। বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপে এর ১১৩ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এবং সাবেক ডেপুটি স্পিকার অধ্যাপক আলী আশরাফ, সংসদ সদস্য এবং সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
অধ্যাপক আলী আশরাফ বলেন, শেখ হাসিনার জীবন যদি আমরা আলোচনা করতে যাই তাহলে দেখতে পাবো, এটা এমন একটা ইতিহাস যা মানুষকে প্রতিমুহূর্তে আলোকিত করে তুলবে। তার জন্মের পর থেকেই শৈশব-কৈশোরের মধ্যে দিয়ে তিনি অনেক রুঢ় অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন। তিনি তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার পুরো পরিবার সহ ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের কালো রাত্রে হারিয়ে ফেলেন। শৈশবে শেখ হাসিনা দেখেছিলেন দেশের স্বার্থে কথা বলতে গিয়ে তার পিতাকে বার বার কারাবরণ করতে হয়েছিল। অনেক কষ্টের মধ্য দিয়েই তাকে সময় কাটাতে হয়েছে। শৈশব কাল থেকেই কষ্ট করে সময় পার করতে হয়েছে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। ইডেন কলেজে পড়া অবস্থায় ভোটে নির্বাচিত হয়ে ভিপি হয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় প্রতিটি রাজনৈতিক লড়াই সংগ্রামে তিনি অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণ করে শিক্ষাখাতে, বিদ্যুতখাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। এদেশে এখন খাদ্য ঘাটতি নেই। দেশে অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। দারিদ্রতার হার ২০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। বছরের শুরুতে নতুন বই তুলে দেয়া, সরকারি প্রাথমিক সব বিদ্যালয় পাকা করা হয়েছে। অভিজ্ঞতার দ্বিতীয় বিকল্প বলতে পৃথিবীতে আর কিছুই নেই। দেশের সর্ববৃহৎ ও প্রাচীন একটি দলের সর্বোচ্চ নেতা হলেন আমাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা। শৈশব থেকে শুরু করে কৈশোর থেকে যৌবন পর্যন্ত আজ বাস্তব জীবনে তিনি অনেক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। এই অভিজ্ঞতা তাকে শিখিয়েছে কিভাবে মানুষের কল্যাণে নিজেকে বিসর্জন করা যায় যা তিনি তার পিতার কাছ থেকে শিখেছেন। এই করোনার মধ্যেও ইউরোপ আমেরিকার মতো দেশ যেখানে ব্যর্থ হয়েছে সেখানে তিনি সফল হয়েছেন। এই সময় অনেকে আতঙ্কিত হয়েছে। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়চিত্তে সবকিছু মোকাবিলা করে আসছেন যা পৃথিবীর অনেক দেশের কাছেই আজ বিস্ময় হয়ে দাঁড়িয়েছে তার এই মোকাবিলার গুণাগুণগুলি। ১৯৮১ সালে ১৭ মে তিনি যখন ঢাকায় ফিরেন, তখন ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে লাখো মানুষের ঢল নেমেছিল। এরপর তিনি চান্দিনাতে গিয়েছিলেন নির্বাচনী সভায়। তিনি কুমিল্লার সবগুলো উপজেলাতে ঘুরেছেন। কখনো পায়ে হেঁটে, কখনো নৌকায় চড়ে যেতেন। কখনো তাকে ক্লান্ত হতে দেখিনি। দিনরাত পরিশ্রম করে তিনি আওয়ামী লীগকে তৃণমূল থেকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। আওয়ামী লীগের মধ্যে ভাঙন যারা ধরিয়েছিল, তাদেরকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আমরা তার পাশে সারাক্ষণ থেকেছি। তখন আমার একটা ছোট্ট গাড়ি ছিল। কি করুণ অবস্থা ছিল। লাখো জনতার মিছিলের মধ্য দিয়ে তাকে যখন নিয়ে আসছিলাম তখন মানুষ খালের মধ্যে বুক পর্যন্ত পানি নিয়ে দাড়িয়ে থেকে এক পলকের জন্য শেখের কন্যা কে দেখতে ভিড় জমে গিয়েছিল। তখন নাসিম সাহেব বলেছিলেন, এতো মানুষ এখানে, এদের কি চাওয়া? তখন শেখ হাসিনা একটু তাদের দিকে তাকিয়ে বলেছিলেন, ইনশাল্লাহ এদের মুখে আমরা হাসি ফুঁটাতে পারবো। ঐ জায়গাটা এখন পাকা রাস্তা। সেখান দিয়ে গেলেই আমার সেই পুরনো স্মৃতি মনে পরে যায়, চোখ দিয়ে পানি এসে পড়ে।