প্রকাশ: সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১০:৩৩ পিএম আপডেট: ২৯.০৯.২০২০ ১২:৪৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের কাছে এখন অনুপ্রেরণার নাম। তিনি এখন উন্নয়নের ফিনিক্স পাখি। বিশ্বনেতায় তিনি পরিচিতি পেয়েছেন এবং বাংলাদেশকে গর্বিত করেছেন। নারীর ক্ষমতায়ন থেকে শুরু করে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল করতে গিয়ে কোনো দিন কারো কাছে মাথানত করেননি। শেখ হাসিনার হাতেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাংলাদেশের গণতন্ত্র সবচে নিরাপদ। সেই গণতন্ত্রের মানস কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার আজ ৭৪তম জন্মবার্ষিকী। যিনি পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট একমাত্র বোন ছাড়া পরিবারের আত্মীয়-স্বজন সবাইকে হারিয়ে বুকভরা ব্যথা নিয়ে অসীম সাহসে গণমানুষের মুক্তির দূত হিসেবে শোকার্ত বাংলাদেশের ব্যথাতুর মানচিত্রের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে গণসংযোগ করে বেড়াচ্ছিলেন। সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ভোরের পাতা সংলাপে এমনটাই দাবি করেছেন বক্তারা। ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজনের ১১১তম পর্বে আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডের বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সংসদ সদস্য এবং সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী লে. কর্ণেল (অব.) ফারুক খান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) আব্দুর রশিদ, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামস্-উল ইসলাম, জার্মান দূতাবাসের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনারারি কনস্যুলেট ইঞ্জিনিয়ার হাসনাত মিয়া। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশিদ বলেন, আমি আজকের দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার যে দক্ষতা তা আমাদের মুগ্ধ করে। আমি কিছুটা অবাকও হই। শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রেখে মানুষ এখন শান্তিতে ঘুমাতে পারে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই। এমনকি সেদিন পাকিস্তান থেকে আনা আর্জেস গ্রেনেড ব্যবহার করেছিল আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতৃত্বকে হত্যা করার জন্য। তখন খুনিদের পালিয়ে যেতে সহয়তা করার জন্য পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছিল। সেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা গ্রেনেড থেকে বেঁচে গেলও তার গাড়িতে গুলি চালানো হয়েছিল। কিন্তু মানবঢাল তৈরি করে নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনাকে বাঁচিয়েছিলেন।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ পরিপূর্ণভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে ৯৫ হাজার পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে। এ ঘটনায় পাকিস্তান যে লজ্জা পেয়েছিল, সেই আক্রোশ থেকেই সেটার প্রতিশোধ নিতে পশ্চিমা শক্তি যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি, তারাই এ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। এখনো পাকিস্তান ভাব ধারার মতাদর্শের লোক বাংলাদেশে বাস করছে। তারা এখনো পাকিস্তানের সাথে কনফেডারেশন করার স্বপ্ন দেখে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরই পাকিস্তান স্বীকৃতি দিল। এমনকি পাকিস্তান বিভিন্ন দেশকে অনুরোধ করেছিল স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য। আপনারা যদি দেখেন, আত্মস্বীকৃত খুনিরা এই হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের পিছনে কারা জড়িত তাদের নাম বলেছে। কিন্তু এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের মুখোশ উন্মোচন হয়নি। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। কর্নেল হামিদের লেখা বইটিতে খুনিদের সাথে জেনারেল জিয়াউর রহমানের সখ্যতার বিষয়টা তুলে ধরেছেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শুধু জাতির পিতাই ছিলেন না, তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিও ছিলেন। তার নিরাপত্তা ঘাটতি ছিল সত্যি। তেমনি হত্যাকাণ্ডের পর বিভিন্ন বাহিনীর নির্লিপ্ত কেন ছিল সেটা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। বাংলাদেশকে ঘিরে এখনো আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। এই ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য আমাদের যথেষ্ঠ কৌশলী হতে হবে। সময় এসেছে, কমিশন গঠন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যের কুশীলবদের মুখোশ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করার। তিনি বৈরী পরিবেশকে অনুকূলে আনতে পারেন। তার দীর্ঘায়ু কামনা করছি।