ড. কাজী এরতেজা হাসান
পৃথিবীতে বহু রাজনৈতিক হত্যাকা- ঘটেছে। এমনকি আমাদের প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানে পারবারিকভাবেও বিভিন্ন সদস্যদের নানা সময়ে হত্যা করা হয়েছে। ভারতে মহাত্মা গান্ধী, ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধীকে হত্যা করা হয়েছে। পাকিস্তানে বেনজীর ভুট্টোকেও হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু কোথাও একই পরিবারের সব সদস্যকে একসঙ্গে হত্যা করার নজির নেই। যে কোনো হত্যাকা-ের বিচারের দায়িত্ব রাষ্ট্র নিলেও বাংলাদেশে জাতির পিতার হত্যার বিচারই আটকে দেওয়া হয়েছিল, যা বিশ্ব ইতিহাসেই বিরল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের পর খুনিদের রক্ষায় একটি অধ্যাদেশ জারি করেন ‘স্বঘোষিত’ রাষ্ট্রপতি খোন্দকার মোশতাক আহমেদ। পরে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা নিয়ে সংবিধান সংশোধন করে খুনিদের রক্ষার পথটি স্থায়ী করার প্রয়াস চালিয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর ওই ইনডেমনিটি অ্যাক্ট বা দায়মুক্তি অধ্যাদেশ বাতিল করলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের বিচারের পথ খোলে। এরপর বিচার প্রক্রিয়া শেষে আদালতের চূড়ান্ত রায় অনুযায়ী ছয় খুনির মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়েছে। তবে মৃত্যুদ- মাথায় নিয়ে পাঁচজন এখনও রয়েছেন পলাতক।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ক্ষমতায় বসে সামরিক আইন জারি করেন বঙ্গবন্ধু সরকারেরই মন্ত্রী খন্দকার মোশতাক, তার পেছনে ছিল সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। তার দেড় মাসের মধ্যে ২৬ সেপ্টেম্বর ‘দায়মুক্তি অধ্যাদেশ’ জারি হয়। ‘দি বাংলাদেশ গেজেট, পাবলিসড বাই অথরিটি’ লেখা অধ্যাদেশটিতে স্বাক্ষর করেছিলেন খন্দকার মোশতাক ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এইচ রহমান।
দুই অংশের অধ্যাদেশটির প্রথম অংশে বলা হয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে বলবৎ আইনের পরিপন্থি যাই কিছুই ঘটুক না কেন, এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টসহ কোনো আদালতে মামলা, অভিযোগ দায়ের বা কোনো আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া যাবে না। আর দ্বিতীয় অংশে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি উল্লিখিত ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে যাদের প্রত্যায়ন করবেন তাদের দায়মুক্তি দেওয়া হল। অর্থাৎ তাদের বিরুদ্ধে কোনো আদালতে মামলা, অভিযোগ দায়ের বা কোনো আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া যাবে না। এই অধ্যাদেশ জারির পেছনে তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের হাত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে; যিনি তার ঠিক আগেই সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে সময়ে সামরিক অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল নিজেই রাষ্ট্রপতির পদে আসিন হয়ে জিয়া ওই অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করেন। ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে জিয়ার গড়া দল বিএনপি দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জয়ী হয়। এরপর ওই বছরের ৯ এপ্রিল বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী পাস হয়। ওই সংশোধনীতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত দায়মুক্তি অধ্যাদেশসহ চার বছরে সামরিক আইনের আওতায় সব অধ্যাদেশ, ঘোষণাকে আইনি বৈধতা দেওয়া হয়।
সংসদে উত্থাপিত আইনটির নাম ছিল ‘সংবিধান (পঞ্চম সংশোধনী) আইন, ১৯৭৯’। পঞ্চম সংশোধনীতে বলা হয়, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হইতে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল তারিখের (উভয় দিনসহ) মধ্যে প্রণীত সকল ফরমান, ফরমান আদেশ, সামরিক আইন প্রবিধান, সামরিক আইন আদেশ, ও অন্যান্য আইন, উক্ত মেয়াদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রণীত আদেশ, কৃত কাজকর্ম, গৃহীত ব্যবস্থা বা কার্যধারাসমূহ, অথবা প্রণীত, কৃত, বা গৃহীত বলিয়া বিবেচিত আদেশ, কাজকর্ম, ব্যবস্থা বা কার্যধারাসমূহ এতদ্বারা অনুমোদিত ও সমর্থিত হইল এবং ওই সকল আদেশ, কাজকর্ম, ব্যবস্থা বা কার্যধারাসমূহ বৈধভাবে প্রণীত, কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া ঘোষিত হইল এবং তৎসম্পর্কে কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা কর্তৃপক্ষের নিকট কোনো কারণেই কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।’ এই সংশোধনীর মাধ্যমে দায়মুক্তি অধ্যাদেশকে বৈধতা দেওয়ায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত অপরাধীরা পাকাপোক্তভাবে দায়মুক্তি পেয়ে যায়। ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল সামরিক আইন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ফলে ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর অঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাকের জারি করা ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশটি কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। ফলে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধা ছিল না।
একটি কথা বলে রাখা ভালো বর্তমানে নিজেদের ‘প্রধান বিরোধী দল’ হিসেবে পরিচয় দেওয়া বিএনপি ও তাদের কর্মী-সমর্থক-অনুসারীরা কোনও সুযোগ পেলেই প্রায় বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে বলে সভা সেমিনার, টক শোসহ নানান জায়গায় বক্তব্য দেন। আমার মনে হয়, এসব কথা বলার আগে ভেবে দেখতে হবে, এই কথাটি বলার নৈতিক অধিকার বিএনপি’র রয়েছে কিনা। বিএনপি কর্মী-সমর্থক-অনুসারীদের একটি মৌখিক সুযোগ অবশ্য আছে যে, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মোশতাক। এখানে তাদের দোষ কোথায়? উত্তর হচ্ছে, খন্দকার মোশতাক যখন যেই সময়ে অঘোষিত সরকারপ্রধান হিসেবে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেন, ঠিক ওই সময়ে সেনাপ্রধান ছিলেন বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাত্র ৯ দিনের মাথায় ১৯৭৫ সালের ২৪ আগস্ট সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন জিয়াউর রহমান। আর আর খন্দকার মোশতাক সরকার ছিল সম্পূর্ণভাবে সেনাসমর্থিত একটি ‘পুতুল সরকার’। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে হত্যাকারীদের বিচার ও জবাবদিহিতা থেকে রক্ষা করার জন্য সেনাসমর্থিত সরকারের প্রধান হিসেবে খন্দকার মোশতাক ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে। জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধান থাকার সময় ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ‘অঘোষিত’ বা ‘স্বঘোষিত’ রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি জারি করেন। সুতরাং এর দায় এড়াতে পারেন না বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান।
সেদিন ‘দ্য বাংলাদেশ গেজেট, পাবলিশড বাই অথিউরিটি’তে লেখা অধ্যাদেশটিতে খন্দকার মোশতাকের স্বাক্ষর করেছিলেন। মোশতাকের স্বাক্ষরের পর অধ্যাদেশে তৎকালীন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এইচ রহমানের স্বাক্ষরও সংযুক্ত ছিল। পরবর্তী সময়ে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতা নিয়ন্ত্রকারী হিসেবে আবির্ভূত হন। ওই সময় বিচারপতি আবু সা’দাত মোহাম্মদ সায়েম রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি সায়েম জেনারেল জিয়াউর রহমানের কাছে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল সায়েম রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান এবং জিয়া রাষ্ট্রপতি হন। ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সামরিক আইনের অধীনে দেশে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে জিয়াউর রহমানের দল নবগঠিত বিএনপি দুই-তৃতীয়াংশ আসনে বিজয়ী হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশসহ চার বছরে সামরিক আইনের আওতায় সব অধ্যাদেশ, ঘোষণাকে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে আইনি বৈধতা দেওয়া হয়। সংশোধনী পাস হয় ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল। সংসদে উত্থাপিত আইনটির নাম ছিল ‘সংবিধান (পঞ্চম সংশোধনী) আইন, ১৯৭৯’। এই সংশোধনীর মাধ্যমে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে বৈধতা দেওয়ায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত অপরাধীরা দায়মুক্তি পেয়ে যায়।
অর্থাৎ খন্দকার মোশতাকের জারি করা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বৈধতা দেওয়া না হলে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল সামরিক আইন প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গেই ১৫ আগস্টের খুনিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেত। জিয়াউর রহমানই ব্যবস্থা নিতে পারতো। কিন্তু জিয়াউর রহমান ব্যবস্থা নেওয়াতো দূরে থাক, ভবিষ্যতে কেউ যেন ব্যবস্থা না নিতে পারে তার পাকাপাকিভাবে সে ব্যবস্থাও করে দেন। ওই সময়ে একটি প্রচার ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, যেহেতু এই ইনডেমনিটি আইন সংবিধানের অংশ হয়ে গেছে তাই এই আইন আর পরিবর্তন হবে না। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পরও বিচারপতি আবদুস সাত্তার, এরশাদ এবং ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এলেও ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি বাতিল বা রহিত করেননি কিংবা উদ্যোগও নেননি।
জেনে রাখার জন্য বলা, মোশতাক আর জিয়াউর রহমান সেই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বা বহাল রেখেই বসে থাকেনি। সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারী খুনিদের নানাভাবে পুরস্কৃতও করেছিল। এমনকি খুনিদের যোগ্যতা না থাকার পরও নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে ভিন্ন ভিন্ন কূটনৈতিক পদে।
১. লে. কর্নেল শরিফুল হককে (ডালিম) চীনে প্রথম সচিব।
২. লে. কর্নেল আজিজ পাশাকে আর্জেন্টিনায় প্রথম সচিব।
৩. মেজর এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদকে আলজেরিয়ায় প্রথম সচিব।
৪. মেজর বজলুল হুদাকে পাকিস্তানে দ্বিতীয় সচিব।
৫. মেজর শাহরিয়ার রশিদকে ইন্দোনেশিয়ায় দ্বিতীয় সচিব।
৬. মেজর রাশেদ চৌধুরীকে সৌদি আরবে দ্বিতীয় সচিব।
৭. মেজর নূর চৌধুরীকে ইরানে দ্বিতীয় সচিব।
৮. মেজর শরিফুল হোসেনকে কুয়েতে দ্বিতীয় সচিব।
৯. কর্নেল কিসমত হাশেমকে আবুধাবিতে তৃতীয় সচিব।
১০. লে. খায়রুজ্জামানকে মিসরে তৃতীয় সচিব।
১১. লে. নাজমুল হোসেনকে কানাডায় তৃতীয় সচিব।
১২. লে. আবদুল মাজেদকে সেনেগালে তৃতীয় সচিব।
১৯৯৬ সালের ১২ জুন নানান চড়াই উৎরাই পার করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার আইনি বাধা অপসারণের প্রক্রিয়া হিসেবে সংবিধান বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ রহিতকরণ বিল’ ১৯৯৬ সালে সপ্তম সংসদে উত্থাপন করা হয়। ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর আইনটি সংসদে পাস হয়। ১৪ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর এটি পরিপূর্ণভাবে আইনে পরিণত হয়। ফলে মোশতাকের জারি করা এবং মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের সময় বৈধতা পাওয়া ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি বিলুপ্ত বলে গণ্য হয়। এভাবেই ওই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বিলুপ্ত করার পরই শুরু হয় বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার কাজ। ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর ‘দি ইনডেমনিটি রিপিল অ্যাক্ট-১৯৯৬’ সংসদে পাস হওয়ার পর সৈয়দ ফারুক রহমান ও সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন, পরে তারা দু’জনই খুনের দায়ে ফাঁসিতে ঝোলেন।
এই ইতিহাসটি নতুন করে বলা প্রয়োজন। কারণ, ইনডেমনিটি আইন বিলুপ্তকরণে শেখ হাসিনার সরকার ছাড়া কেউই পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে এর দায় ১৯৭৫-১৯৯৬ পর্যন্ত যারা যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের সকলের। আজকের এই দিন বাংলাদেশের জন্য আরেকটি কালো দিন। কারণ এই দিনেই একটি দেশের জাতির পিতার খুনিদের রক্ষা করার জন্য আইন জারি করা হয়। পরিশেষে এই কথাটিই বলতে চাই, ইনডেমনিটি :মোশতাকের অভিশপ্ত অধ্যাদেশ, জিয়ার কলঙ্কিত আইন। আজকের এই বাংলাদেশে এখনো পাকিস্তানের অনেক প্রেতাত্মারা এখনো বাংলাদেশে সক্রিয় রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস বইয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা করা হয়েছিল। স্বপ্রণোদিত হয়ে মহামান্য হাইকোর্টে রিট আবেদন করি। নানা হুমকি উপেক্ষা করেও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শিক সন্তান হিসাবে লড়াই চালিয়ে গেছি। অবশেষে বাজারকৃত ২০০০ বইয়ের মধ্যে ১৯৫৪টি বই ধ্বংস করা হয়েছে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে। এমন অনেক ষড়যন্ত্রকারী মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে আছে যারা এখনো এই স্বাধীন বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারেনি। তারা এই দেশের আলো বাতাসে বেড়ে উঠেও এদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এমনকি সরকারের আশেপাশেও এমন কিছু ষড়যন্ত্রকারী সক্রিয় রয়েছে। তারা সময় পেলেই দেশে-বিদেশে নানা কথা বলছে। এছাড়া বিদেশে বসে জিয়াউর রহমানের কুলাঙ্গার সন্তান তারেক রহমানের নির্দেশে দেশ বিরোধী নানা ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিষয়েও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুক্রবার বলেছেন, বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র যারা করছেন, তাদের রুখে দিবে আওয়ামী লীগ। আমরাও এটাই চাই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে আমাদের সকলকে শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। তাহলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে উঠবে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
লেখক : সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক ভোরের পাতা, দ্য পিপলস টাইমপরিচালক, এফবিসিসিআই।
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ইরান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ