প্রকাশ: শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ২:১৫ পিএম | প্রিন্ট সংস্করণ
যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা ও ফ্লোরিডার উপকূলে ব্যাপক বন্যা দেখা দিয়েছে।প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় স্যালির তান্ডবে উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ‘ঐতিহাসিক ও সর্বনাশা’ বন্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে দেশটির ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার।মেক্সিকো উপসাগরের আলাবামা উপকূল দিয়ে স্থানীয় সময় গত বুধবার ভোরে ঝড়টি স্থলভাগে উঠে আসে। বিকালের দিকে এটি দুর্বল হয়ে একটি ক্রান্তীয় ঝড়ে পরিণত হয়। তবে স্যালির তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ।বিভিন্ন স্থানে বহু গাছপালা উপড়ে পড়েছে। প্রকান্ড ওক গাছ উপড়ে পড়ে অনেক জায়গায় বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেছে। ফ্লোরিডার পেন্সাকোলা ও সংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পাঁচ লক্ষাধিক ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আলাবামার অরেঞ্জ সৈকতে পানির সঙ্গে একটি মরদেহ ভেসে আসার কথা নিশ্চিত করেছে পুলিশ। পুলিশ কর্মকর্তা ট্রেন্ট জনসন জানিয়েছেন, দৃশ্যত এটি হারিকেনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। তবে সুনির্দিষ্টভাবে এটি প্রমাণের মতো কোনও উপাদান পাওয়া যায়নি।জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসিন্দাদের ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আলাবামার গভর্নর কে আইভি। ফ্লোরিডার পেন্সাকোলা পুলিশের পক্ষ থেকেও স্থানীয় বাসিন্দাদের একই রকমের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।স্থানীয় বাসিন্দা ৩৮ বছরের গ্রান্ট সল্টজ বলেন, বহু বছর পর এমন বাতাস পরিলক্ষিত হয়েছে
জলে ভাসছে গাল্ফ কোস্ট : হারিকেন স্যালি যুক্তরাষ্ট্রের গাল্ফ কোস্ট দিয়ে স্থলে উঠে আসার পর দুর্বল হয়ে একটি ক্রান্তীয় ঝড়ে পরিণত হলেও এর প্রভাবে আলাবামা-ফ্লোরিডা উপকূলে ব্যাপক বন্যা হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার একে ‘ঐতিহাসিক ও সর্বনাশা’ বন্যা হিসেবে বর্ণনা করেছে।বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, হারিকেন স্যালি গাছপালা উপড়ে ফেলেছে, রাস্তাগুলো ডুবিয়ে দিয়েছে এবং ঝড়ে কারণে কয়েক লাখ বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে।স্থানীয় সময় বুধবার ভোররাতের দিকে মেক্সিকো উপসাগরের আলাবামা উপকূল দিয়ে স্যালি ২ মাত্রার হারিকেন হিসেবে স্থলে উঠে আসে। এসময় বাতাসের একটানা বেগ কমে ঘণ্টায় ১১৩ কিলোমিটারে নেমে আসে।এই ঝড়ে আলাবামায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ সেন্টিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ায় গাল্ফ কোস্টের বেশ কিছু অংশ তলিয়ে গেছে, ঝড় কমে যাওয়ার পর আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফ্লারিডার পেন্সাকোলার উপকূলীয় এলাকাগুলো দেড় মিটার পানির নিচে তলিয়ে গেছে। রাস্তা ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ঝড়ের কারণে বিশাল বিশাল ওক গাছ উপড়ে পড়ে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেছে।
আলবামা ও ফ্লোরিডা উপকূলের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, ধীর গতিতে এগোতে থাকা ঝড়ের কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতিতে তারা বেকায়দায় পড়ে গেছেন।পেন্সাকোলার হলিডে ইন হোটেলে কর্মরত জর্ডান মিউজ (৩৫) জানিয়েছেন, সকাল ৮টার দিকে বন্যার পানি সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠেছিল। হোটেলে বিদ্যুৎ ও পানি ছিল না। ‘পরিস্থিতি এতবযঙ্কর হয়ে উঠবে সেটি আমাদের ম্যানেজার ধারনা করতে পারেননি। প্রচুর বৃষ্টিপাত আর প্রচন্ড ঝড়ের কারনে জীবনযাত্রা থমকে গেছে। মিউজ আরও জানিয়েছেন,হোটেলে যা কিছু পেয়েছে লোকজন তাড়াহুড়া করে সব কিনে নিয়ে গেছে।পেন্সাকোলা বে ব্রিজ যা ‘থ্রি মাইল ব্রিজ’ নামেও পরিচিত, এর ‘বড় একটি অংশ’ ভেসে গেছে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিসান্টিস।