সুজিত রায় নন্দী বলেন, ১৯৭৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সর্বসম্মত অনুমোদনক্রমে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে। এর কয়েক দিন পর ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ২৯তম অধিবেশনে প্রথমবারের মতো বক্তৃতা করেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই ভাষণটি ছিল সমগ্র বিশ্বের অধিকারহারা শোষিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ভাষণ। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠার একটি বলিষ্ঠ উচ্চারণ ও সাহসী পদক্ষেপ। এটা ছিল তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রার প্রতিফলন। তার ভাষণ আমাদের গর্বিত করেছে। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সুদৃঢ় অবস্থান নিয়ে বিশ্বের নন্দিত নেতায় পরিণত হয়েছিলেন সেটাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল বঙ্গবন্ধুর জন্য। তিনি পৃথিবীর সকল শোষিত মানুষের নেতা ছিলেন। আব্রাহাম লিংকনের নাম বাদ দিয়ে যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের, মাও সেতুংয়ের নাম বাদ দিয়ে চীন, লেলিনের নাম বাদ দিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন, হো চি মিনের নাম বাদ দিয়ে ভিয়েতনাম, ফিদেল কাস্ত্রোর নাম বাদ দিয়ে কিউবা, সুকর্ণর নাম বাদ দিয়ে ইন্দোনেশিয়া, মহাত্না গান্ধীর নাম বাদ দিয়ে ভারতের কথা যেমন চিন্তা করা যায় না; তেমনি বঙ্গবন্ধুর নাম বাদ দিয়ে বাংলাদেশের কথা চিন্তা করা যায় না। বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু এক ও অভিন্ন। বঙ্গবন্ধুর মতোই শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসেন। ইংরেজ সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টকে বঙ্গবন্ধুকে জবাব দিয়েছিলেন, ‘আমার দুর্বলতাও হচ্ছে বাঙালিকে অতিরিক্ত ভালোবাসা।’ সাগর মহাসাগরের গভীরতা মাপা যাবে, কিন্তু বাঙালিকে বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা পরিমাপ করা সম্ভব নয়। দেখুন এই করোনার সময় কৃষকের ধান কেটে দিয়েছে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সরকারের পাশাপাশি দলের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ত্রাণ দেয়া হচ্ছে। এমনকি মেডিকেল কলেজগুলো থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়ে সুরক্ষা সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা বাঁচলেই বাংলাদেশ বাঁচবে, স্বপ্নের সোনার বাংলা হবে। জাতির পিতার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বিভিন্ন অধিবেশনে মাতৃভাষা বাংলায় ভাষণ দিয়ে আসছেন। এবারও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনে ভার্চুয়াল অংশগ্রহণে বাংলায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।