বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই করোনা সংকটেও বাংলাদেশের একজন মানুষ না খেয়ে মারা যায়নি। এই সংকটেও বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। আর এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দিন-রাত পরিশ্রমের কারণেই।
প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ৭৪ বছরে বিশ্বের সফল নেত্রী হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন। উনি যে বঙ্গবন্ধুর কন্যা তা অক্ষরে অক্ষরে বুঝিয়ে দিয়েছেন। বিশ্বের শিক্তশালী পত্রিকাগুলো তাকে মানবতার মা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রবীন্দ্র সরোবরে জাতির পিতা কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মোৎসব উপলক্ষে গৌরব’৭১আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘প্রজন্মের প্রার্থনা, শতায়ু হোক শেখ হাসিনা’স্লোগানে আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানটি জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন গৌরব'৭১ এর সভাপতি এসএম মনিরুল ইসলাম মনির। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এমএম শাহীনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এমরান কবির চৌধুরী, আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, দৈনিক সময়ের আলো'র নির্বাহী সম্পাদক শাহনেওয়াজ দুলাল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন ও ঢাকা কর অঞ্চলের কর কমিশনার আসাদুজ্জামান।
আয়োজকদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, চাটুকারিতার মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। আলোচনা-সমালোচনার মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন সম্ভব।
তিনি বলেন, যে দেশটি আগে দূর্বিক্ষের দেশ হিসেবে পরিচিত ছিলো, তা আজ বিশ্বের দরবারে রোল মডেল। আর এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই।
আইনের শাসন সম্পর্কে বলতে গিয়ে সাবেক এই বিচারপতি বলেন, আইনের শাসনের প্রতি শেখ হাসিনা অনেক শ্রদ্ধাশীল। এদেশে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করেছিলেন, সেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দূর করেছেন। দুর্নীতি করার কারণে নিজ দলের নেতাকর্মীদেরও বিচারের আওতায় এনেছেন।
আয়োজকদের প্রংশসা করে তিনি বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানে এসে আমি মুগ্ধ হয়েছি। আমি ভাবতেও পারিনি বঙ্গবন্ধুর পরিবার ও শেখ হাসিনার এ ধরনের ছবি সংগ্রহ করা আছে। এটা অসাধারণ একটি প্রদক্ষেপ। এজন্য আমি আয়োজকদের সাধুবাদ জানাই।
অনুষ্ঠানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এমরান কবির চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বই পড়লে পাষণ্ড হৃদয়ও গলে যায়। তাই নতুন প্রজন্ম উনার বই পড়া উচিৎ।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কখনো আরাম-আয়েশ করছেন না। তিনি কঠোর পরিশ্রমী। তবে প্রধানমন্ত্রী যাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন; তিনি যদি সঠিকভাবে ওই দায়িত্ব পালন করেন, তা হলে দেশে অনেক দূর এগিয়ে যাবে। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে নিয়োগ বাণিজ্য, ট্রেন্ডার বাণিজ্য হত না। নেত্রীর মত পরিশ্রম করলে চেয়ারে লোভ থাকতো না। তাই উনি বিশ্বাস করে যাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, সঠিকভাবে পালন করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর বলেন, উনি যদি ১৯৭৫ সালের ১২ মার্চ পশ্চিম জার্মানিতে না যেতেন, তা হলে আজকের ইতিহাস অন্যরক হত। তবে সেখান থেকে ফিরে এসে দেশের মানুষের জন্য কাজ শুরু করেন। জিয়া, এরশাদের স্বৈর শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন তিনি। শুধু তাই নয়, প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা এদেশের রাজনীতিকে ডিজিটাল প্লাটফর্মে নিয়ে গেছেন।
দৈনিক সময়ের আলো'র নির্বাহী সম্পাদক শাহনেওয়াজ দুলাল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ৭৪তম জন্মদিনে ৭৪টি ছবি নিয়ে গৌরব ৭১ আজ ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছে। এটা নিশ্চয় প্রশংসার দাবিদার।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে যেসব ছবি প্রদর্শন করা হয়েছে, প্রতিটি ছবির তাৎপর্য রয়েছে। প্রতিটি ছবি কথা বলছে। প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ দেশ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে অনুষ্ঠান শুরুর আগেই হঠাৎ করে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। তিনি একা নয়, সাথে তার সহধর্মীনি আরিফা জেসমিন কনিকাও রবীন্দ্র সরোবরে হাজির হন। তাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে পুরো অনুষ্ঠান স্থল। শুধু তাই নয়, দীর্ঘ সময় নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। পরবর্তীতে আলোচনা সভায় বক্তব্যও রাখেন তারা।