প্রকাশ: বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৭:৫৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
অদ্ভূত দেখতে এক প্রাণীর কিছু ছবি, যার মুখটা মানুষের মতো, গায়ে আরমাডিলোর মতো বর্ম, আঙুলগুলো ব্যাঙের মতো। সেই সঙ্গে কিছু মানুষের ছবি, যারা কোনো কিছুর আঘাতে রক্তাক্ত। সঙ্গে লেখা বর্ণনায় দাবি করা হচ্ছে, বিরল ওই প্রাণীর হামলায় আহত হচ্ছেন অনেকেই।
আনন্দবাজার পত্রিকায় বলা হয়েছে, ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোর কোথাও বলা হচ্ছে, ভারতের পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে ওই প্রাণীটিকে দেখা গিয়েছে।
কেউ কেউ আবার লিখেছেন, রাজস্থান ও গুজরাটে এই জীবটির দেখা মিলেছে। অস্ত্র নিয়ে চাষ করতে যাওয়ারও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এক জায়গায় বলা হয়েছে এই প্রাণীটির নাম ‘কুইয়া বাঘ’।
ভারতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে হিন্দি ও বাংলায় লেখা এমন বেশ কিছু পোস্ট। শুধু হিন্দিতে লেখা পোস্টে বলা হয়েছে, এই ঘটনা গুজরাট ও রাজস্থানের, বাংলায় লেখা পোস্টে দাবি করা হয়েছে এই ঘটনা পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড় ও সংলগ্ন জঙ্গলের।
বিধাননগর গভর্নমেন্ট কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক অরূপ দত্তগুপ্ত বলেছেন, জীবজগতে এমন কোনো প্রাণীর অস্বিত্বই নেই। সরীসৃপদের সামনে-পিছনে চার পায়েই পাঁচটা করে আঙুল থাকে। আর স্যালামান্ডার জাতীয় উভচর প্রাণীদের সামনের পায়ে চারটে এবং পিছনের পায়ে পাঁচটা আঙুল থাকে। ছবিতে থাকা প্রাণীটির চেহারার বৈশিষ্ট্য এর কোনোটির সঙ্গেই মেলে না। আবার প্রাণীটির গায়ের উপরের অংশে কিছু স্তন্যপায়ী বা সরীসৃপের মতো বর্ম থাকলেও শরীরের নীচের দিকে কোনো আঁশ নেই। চোখ দুটো সরীসৃপ বা স্যালামান্ডারের মতো মুখের দু’পাশে নয়।
অধ্যাপক দত্তগুপ্তের মতে, ছবিতে থাকা প্রাণীটি আসলে সুকুমার রায়ের বকচ্ছপ বা হাঁসজারুর মতো, কল্পনা-জাত।
বাস্তবেই এমন কোনো প্রাণী পৃথিবীতে নেই। গুগল ইমেজ সার্চে ওই প্রাণীটির ছবি দিয়ে বেশ কিছু পুরনো ওয়েবসাইট লিঙ্কের সন্ধান মেলে।
দেখা যায়, ২০১৮ সালের অক্টোবরেও অদ্ভূত দেখতে প্রাণীটির এই ছবিগুলো ভাইরাল হয়েছিলো। তখন একাধিক জায়গায় এটিকে ‘বুশি বেবি’ বলে দাবি করা হয়।
ছবিগুলো প্রথম আপলোড হয় লাইরা মাগানুকো বলে এক ইটালীয় ভাস্করের ফেসবুক প্রোফাইলে, ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর। শিল্পী হাইপার রিয়েলিটি নিয়ে কাজ করেন, সিলিকোনের তৈরি এমনই সব ভাস্কর্যে নিজের কল্পনাকে ফুটিয়ে তোলেন।