বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু আজ   ফিল্ম সিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধুর’ নাম   সিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া গ্রেপ্তার   অনন্য অসাধারণ শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব   নরসিংদীতে ‘থার্টি ফার্স্ট’ উপলক্ষে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে কোপালো সন্ত্রাসীরা   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
অবশেষে পাওয়া গেল পেঁয়াজের সিন্ডিকেটের সন্ধান, যে ৪ জেলা বিশেষ নজরদারিতে!
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৬:৪১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

কদিন আগে হঠাৎ করে ঘোষণা ছাড়াই পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এতে বিপাকে পড়ে যায় বাংলাদেশ। হঠাৎ করে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দেশে পেঁয়াজের বাজার অস্থির হয়ে ওঠে।দেড় থেকে দুই গুণ পর্যন্ত পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পায়। মূল্য বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের সংকটকে দায়ী করেন। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশে অন্তত ছয় লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। অথচ অসাধু ব্যবসায়ীরা ভারতের রপ্তানি বন্ধ করাকে পুঁজি করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করার মধ্য দিয়ে দাম বাড়িয়েছে। তাই এসব সিন্ডিকেটকে খুঁজে বের করতে দেশের চার জেলাকে বিশেষ নজরদারিতে রেখেছে সরকার।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘ভারতের দাম বাড়ানোর কথা শুনেই চলতি মাসের শুরুতেই দেশের বাজারে পেঁয়াজারে দম কিছুটা বেড়ে যায়। গত বছরও সেপ্টেম্বর মাসেই দাম বাড়ে। তাই এবার শুরু থেকেই পেঁয়াজের দাম বাড়া নিয়ে তৎপর ছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কয়েকটি টিম দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পেঁয়াজ মজুতের সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে যায়। এসব টিম সরেজমিন পরিদর্শন ও গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পারে পাবনা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জ- এ চার জেলায় অন্তত ছয় লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুত রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন, আমদানি এবং চাহিদার তথ্য অনুযায়ীও বর্তমানে দেশে ছয় লাখ মেট্রিক টনের বেশি পেঁয়াজ মজুত থাকার কথা। কিন্তু এসব জেলার ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভারতের রপ্তানি বন্ধকে পুঁজি করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজার অস্থিতিশীল করেছে। এসব অসৎ ব্যবসায়ী গত বছরও একই কাজ করেছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু এবার আগে থেকেই প্রস্তুতি নেয়ায় মজুতের ঘাঁটি চার জেলার তথ্য পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে এসব জেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টিম জেলাগুলোর জেলা প্রশাসক ও স্থানীয়দের সঙ্গে বৈঠক করবে। যাতে করে কোনোভাবেই ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ মজুত রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে।
 
এদিকে ইতোমধ্যে পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ট্রাকে করে মাত্র ৩০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করছে টিসিবি। পাশাপাশি ৩৬ টাকা কেজিতে অনলাইনের মাধ্যমেও পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে সরকারি এ সংস্থা। এছাড়া ভারত ও এর বিকল্প দেশ হিসেবে তুরস্ক, চীন, মিয়ানমারসহ অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি বাড়াতে পেঁয়াজ আমদানির ওপর আরোপিত ৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করেছে সরকার।

দাম বৃদ্ধির পর দুদিন পর সংবাদ আসে নিষেধাজ্ঞার আগে রপ্তানির অনুমতি পাওয়া ২৫ হাজার টন পেঁয়াজ বাংলাদেশকে দেয়ার অনুমতি দিয়েছে ভারত। এতে শনিবার ও রোববার দেশি ও আমদানি করা উভয় ধরনের পেঁয়াজের দাম আরো কমে যায়।
তবে রোববার থেকেই সংবাদ আসতে শুরু করে ভারত থেকে আসা পেঁয়াজের বেশিরভাগই নষ্ট। এরপর রাত পার না হতেই সোমবার পাইকারি বাজারে আবার দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। অবশ্য আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।

খুচরা বাজার খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, গত দুদিনের মতো সোমবারও দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। আর আমদানি করা ভারতের পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৭০ টাকা।

পেঁয়াজের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, কোনো ধরনের পূর্বাভাস না দিয়েই ভারত হঠাৎ করে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় দেশের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। তবে আতঙ্কিত হয়ে সাধারণ মানুষ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পেঁয়াজ কিনতে থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিচ্ছেন। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ পেঁয়াজের মজুত রয়েছে। এই মজুত দিয়ে আগামী আড়াই থেকে তিন মাস চোখ বুজে চলা যাবে। বিকল্প বাজার থেকেও পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। তাই ক্রেতাদের তিনি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পেঁয়াজ না কেনার পরামর্শ দেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে বছরে প্রায় ২৫ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। চলতি বছর এর বেশি উৎপাদন হয়েছে। তবে সংগ্রহ এবং সংরক্ষণে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ নষ্ট হয়। ফলে প্রকৃত উৎপাদন ১৯ লাখ টনের বেশি। বাকিটা আমদানি করা হয়। এর মধ্যে ভারত থেকে আসে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, দেশে পেঁয়াজের বাজার অস্থির করে তোলার পেছনে কাজ করেছে একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। যারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে রাতারাতি অস্বাভাবিকভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে। অকারণে পেঁয়াজের অস্বাভাবিক এমন মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলেছে। সরকারকে বিব্রত করেছে। গত বছরও এই চক্রটি এমন কাজ করেছিল। যার কারণে গত বছর প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৩০০ টাকায় উঠেছিল।

জানা গেছে, এসব সুযোগসন্ধানী সিন্ডিকেটের সদস্যকে খুঁজে বের করতে এবার যৌথভাবে মাঠে নামছে সরকারের চারটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। চারটি গোয়েন্দা সংস্থা যৌথভাবে এ কাজটি করবে। বাজার মনিটরিংয়ে এরা নিয়মিত কাজ করলেও এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। বাড়তি কিছু দায়িত্ব দিয়ে তাদের মাঠে নামানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী সিন্ডিকেটের সদস্যদের সম্পর্কে ইতোমধ্যেই তাদের হাতে বিভিন্ন তথ্য এসেছে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করতে তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এবং বাজারে আরও ব্যাপকভাবে খোঁজ নিচ্ছে। তাদের সংগ্রহ করা সেসব তথ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে পৌঁছেছে। সংশ্লিষ্ট মহল এসব তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানা গেছে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
https://www.dailyvorerpata.com/ad/BHousing_Investment_Press_6colX6in20200324140555 (1).jpg
https://www.dailyvorerpata.com/ad/last (2).gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/431205536-ezgif.com-optimize.gif
https://www.dailyvorerpata.com/ad/agrani.gif
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]