অধ্যাপক আলী আশরাফ বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমতে আমাদের নেত্রী, জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা, জননেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য বেঁচে আছেন। এই মাসে আমাদের নেত্রী জন্মেছিলেন বলে এই মাসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মাস। আমি বক্তব্যের শুরুতেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারের সকল শহীদ এবং কারাগারে শহীদ জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। তাদের হত্যা করা হয়েছিল, বাংলাদেশের স্বাধীনতা হত্যা করার জন্যই। আজ থেকে ৭৪ বছর আগে বাংলার এক নিভৃত গাঁয়ে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জন্ম হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি মালেক উদ্দিন উকিলের নেতৃত্বে প্রথম টুঙ্গিপাড়ায় গিয়েছিলাম। দেখছি, কতটা অজোঁপাড়া গ্রাম ছিল এটা। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। বঙ্গবন্ধু তার জীবনের বেশির ভাগ সময়ে কারাগারেই থেকেছেন। পুরোনো ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। অনেক কষ্টের মধ্য দিয়েই তাকে সময় কাটাতে হয়েছে। শৈশব কাল থেকেই কষ্ট করে সময় পার করতে হয়েছে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। ইডেন কলেজে পড়া অবস্থায় ভোটে নির্বাচিত হয়ে ভিপি হয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় প্রতিটি রাজনৈতিক লড়াই সংগ্রামে তিনি অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর লন্ডনে প্রতিবাদ জানিয়ে একটা সভা হয়েছিল। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানেই আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখি। সেখানে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ৩০ জন সংসদ সদস্য। আমি সেখানে দীর্ঘ বক্তব্য দিয়েছিলাম। বিট্রিশরা বলেছিল, এই বক্তব্য দেয়ার পর দেশে গেলে আপনার ঝুঁকি আছে। সেদিন রাতে শেখ রেহানার বাসায় গিয়ে মালেক উকিলসহ সবাই মিলে শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি হতে বলেছিলাম। ১৯৮১ সালে ১৭ মে তিনি যখন ঢাকায় ফিরেন, তখন ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে লাখো মানুষের ঢল নেমেছিল। এরপর তিনি চান্দিনাতে গিয়েছিলেন নির্বাচনী সভায়। তিনি কুমিল্লার সবগুলো উপজেলাতে ঘুরেছেন। কখনো পায়ে হেঁটে, কখনো নৌকায় চড়ে যেতেন। কখনো তাকে ক্লান্ত হতে দেখিনি। দিনরাত পরিশ্রম করে তিনি আওয়ামী লীগকে তৃণমূল থেকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। আওয়ামী লীগের মধ্যে ভাঙন যারা ধরিয়েছিল, তাদেরকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আমরা তার পাশে সারাক্ষণ থেকেছি। তখন আমার একটা ছোট্ট গাড়ি ছিল। কি করুণ অবস্থা ছিল। কিন্তু কখনো তাকে কখনো দমে যেতে দেখিনি। আমাদের তৃণমূলের সাথে এমনকি ইউনিয়ন ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদের সাথেও যোগাযোগ রাখেন। ১৯৯১ সালে নির্বাচনে সূক্ষ্ন কারচুপির মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে হারিয়ে দিয়েছিল। এছাড়া ১৯৮৬ সালেও আমাদের ক্ষমতায় আসতে দেয়নি এরশাদ। বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্নেল রশিদকে সংসদে আনার জন্য পৃষ্ঠপোষকতা করেছে খালেদা জিয়ার বিএনপি। কোটি কোটি টাকা খরচ করেও পরে আমার বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছিল। কিন্তু দেখুন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণ করে শিক্ষাখাতে, বিদ্যুতখাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। এদেশে এখন খাদ্য ঘাটতি নেই। দেশে অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। দারিদ্রতার হার ২০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। বছরের শুরুতে নতুন বই তুলে দেয়া, সরকারি প্রাথমিক সব বিদ্যালয় পাকা করা হয়েছে। এরপর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, চট্টগ্রামের জনসভায় গুলিসহ বারবার হত্যার চেষ্টা করেছিল শেখ হাসিনাকে। হাওয়া ভবন বানিয়ে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছিল বাংলাদেশকে।