#বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তেই কাজ করছেন শেখ হাসিনা: ড. বীরেন শিকদার।
#ব্রিটিশ পার্লামেন্টেও এখন বঙ্গবন্ধু-শেখ হাসিনার প্রশংসা হয়: সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক।
#সকল হামলা থেকে শেখ হাসিনা বেঁচে গেছেন, এদেশের উন্নয়নের জন্য: গিয়াস উদ্দিন রুবেল বাট।
শেখ হাসিনা এখন একটি আদর্শের নাম। একাধারে তিনি মমতাময়ী মা, কঠোর প্রশাসক। বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের বিরুদ্ধে যায় এমন কোনো সিদ্ধান্ত কোনোদিন তিনি গ্রহণ করেননি। তিনি মাতৃস্নেহে বাংলাদেশের গরীব-দুঃখী মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তার হাতেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র সবচে নিরাপদ। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতির মেয়ে হয়ে, এমনকি চারবারের প্রধানমন্ত্রী হয়ে খুব সহজ সরল জীবন যাপনে অভ্যস্ত। তার মধ্যে কোনো অহমিকা নেই।
সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপে এসব কথা বলেন আলোচকরা। আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় সংসদ সদস্য এবং সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ এর (যুব ও ক্রীড়া উপকমিটি) সাবেক সদস্য এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন রুবেল বাট। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
ড. বীরেন শিকদার বলেন, আমি আমার বক্তব্যের প্রথমেই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যে মহামানবের অবদানে আজ আমারা লাল সবুজের পতাকা নিয়ে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করা দাড়িয়ে আছি, স্মরণ করছি তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের। আরও স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতাকে। এছাড়া ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত আইভি রহমান সহ ২৩ জনকেও গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি। আজকের আলোচ্য বিষয় ৭৪এ জননেত্রী। এই সেপ্টেম্বর মাসে আমাদের অত্যন্ত প্রিয় মুখ, আমাদের শ্রদ্ধাভাজন এবং আমাদের প্রিয় নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা জন্ম গ্রহণ করেছিলেন টুঙ্গিপাড়ায়। আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে, ভোরের পাতা আজ অত্যন্ত জনপ্রিয়ভাবে দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে এবং দর্শক নন্দিত হয়েছে। এই অনুষ্ঠানটি দেশে-বিদেশে প্রচুর দর্শকশ্রোতা এই অনুষ্ঠানটি উপভোগ করে থাকেন। এই জন্য আমি ভোরের পাতা কর্তৃপক্ষের কাছে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বাঙালি জাতি হিসেবে আমরা অত্যন্ত সৌভাগ্যবান যে আমরা জাতি হিসেবে এক মহামানব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পেয়েছিলাম যার জন্য আমরা বর্তমানে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছি। আমাদের জন্য খুবই দুর্ভাগ্য যে, সে ৭৫ সালে ১৫ই আগস্টে একটা দুঃখজনক ঘটনায় তাকে আমরা হারিয়েছিলাম। এদেশের কিছু কুচক্রীরা, কিছু বিপদ্গামি সেনা সদস্য এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কারণে আমরা সেদিন এই মহা মানবকে হারিয়েছিলাম। সেদিন সৌভাগ্যক্রমে আমাদের জাতির জনকের কন্যা, আমাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা সহ তার ছোট বোন শেখ রেহানা কাকতালীয় ভাবে বেচে যান। এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার মাত্র ২১দিন আগে তিনি তার স্বামীর সঙ্গে এবং শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে জার্মানিতে গিয়েছিলেন। সেদিন তিনি বিদেশে থাকায় আজ বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে সেই স্বাধীনতার চেতনাকে বুকে ধারণ করে বাংলাদেশকে উন্নয়নের সারীতে ধরে রাখতে পেরেছেন। স্বাধীনতার মূল মন্ত্রে আমরা যে উদ্দেশ্যে দেশকে স্বাধীন করেছিলাম, দেশকে সেই ধারাবাহিকতায় ধরে রাখতে পেরেছেন আমাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা। এই যে আমরা আজ ভোরের পাতার যে সংলাপ করছি, মুক্তভাবে কথা বলতে পারছি এটা কোনভাবেই সম্ভব হতো না, আজকের এই বাংলাদেশ কিন্তু এই অভয়বে থাকতে পারতো না যদি সেদিন শেখ হাসিনা বেচে না থাকতেন। এই বাংলাদেশ অবশ্যই দ্বিতীয় পাকিস্তানে পরিণীত হত কারণ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যে কাজ গুলো শুরু করেছিলেন সেই কাজ গুলো যদি পূর্ণাঙ্গ ভাবে সফল হতো তাহলে আজকের এই বাংলাদেশকে আমরা পেতাম না। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সেদিন বুকে সাহস নিয়ে ১৯৮১ সালে আমাদের দল আওয়ামী লীগের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। আমি অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, তিনি সেদিন বুকে সাহস নিয়ে দলকে সুসংগঠিত করেছিলেন, এটি বঙ্গবন্ধুর কন্যা বলেই সম্ভব হয়েছিল তখন। আমি এখানে উপস্থিত অতিথি সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলতে চায়, একটি মানুষ যে তার পরিবারের সব সদস্যকে হারিয়েছেন; একটি মাত্র বোন ছাড়া আর কেউ জীবিত নেই সেই পরিবারে। এই অবস্থায় দাড়িয়ে, কার এমন মানসিক বল থাকতে পারে যে, সে সেই দেশে আবার ফিরে এসে সেই দলের নেতৃত্ব দিবে? যে দলের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে, এই দেশের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে পুরো পরিবার শাহাদাৎ বরণ করেছিলেন। একমাত্র বঙ্গবন্ধুর কন্যা বলেই, বঙ্গবন্ধুর রক্ত শেখ হাসিনার দেহে প্রবাহমান আছে বলেই তিনি তার পিতার উদ্দেশ্যকে সফল করতেই সৎ সাহস নিয়ে সেদিন দেশে ফিরে এসে এই দলের হাল ধরেছিলেন, যার ফল বর্তমানে আমরা পাচ্ছি।
সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বলেন, বিশ্বের সেরা ১০ জন রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে একজন হচ্ছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুবাইয়ের প্রভাবশালী পত্রিকা খালিজ টাইমস রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক আচরণের জন্য শেখ হাসিনাকে প্রাচ্যের তারকা হিসাবে আখ্যায়িত করেছে। তিনি একাধারে মানবতার জননী, দক্ষ প্রশাসক এবং করোনা সংকট মোকাবিলায় বিশ্বের অন্যতম সফল রাষ্ট্রনায়ক। বিশ্বের বড় বড় দেশের অনেক রাষ্ট্রপ্রধানরা যেখানে করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছেন, সেখানে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারুণভাবে সফল হয়েছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। সেদিন সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা। এ কারণেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, ডিজিটাল বাংলাদেশ, প্রবৃদ্ধি অর্জনসহ মাথাপিছু আয় ২০৬৪ ডলার হয়েছে, শুধু মাত্র শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণেই। তিনি বিশ্বব্যাংক এবং প্রভাবশালী দেশকে পাত্তা না দিয়েই পদ্মা সেতু গড়ে তুলছেন। এমনকি পদ্মা সেতুর কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। তিনি ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন। এমনকি বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানা বলেছিলেন, আমরা যদি ১৮ কোটি মানুষ খেয়ে থাকতে পারি, তাহলে ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীরাও খেতে পারবে। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যার মানবিকতা কতটা উঁচু স্তরের, তা এ থেকেই বুঝা যায়। আজকে লন্ডনের প্রভাবশালী পত্রিকা গার্ডিয়ান এবং বিট্রিশ এমপিরা এখন বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের প্রশংসা করছে। এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। করোনার কারণে আমরা বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষের বিভিন্ন অনুষ্ঠান করতে পারি নাই। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তীতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নানা আয়োজন করবো। আমরা দেশের উন্নয়নের কথা বলি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল জিয়াউর রহমান, এখন লন্ডনে বসে তারেক রহমান নানা ষড়যন্ত্র করছে। আমরা সেই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করছি।
গিয়াস উদ্দিন রুবেল বাট বলে, আমি আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অগ্রিম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। বিশ্বের বুকে তিনি এখন বাংলাদেশের উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছেন। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতির মেয়ে হয়েও খুবই সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যস্ত। ২০১৫ সালে তিনি চ্যাম্পিয়ন অব দ্যা আর্থ পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। এছাড়া ৪৮ টি আন্তর্জাতিক পুরষ্কার পেয়ে দেশকে গর্বিত করেছেন। আপনারা দেখুন, আমি যখন ছাত্রলীগ করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি। তখন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন লিয়াকত শিকদার ভাই এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন নজরুল ইসলাম বাবু ভাই। তাদের নির্দেশে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গিয়েছিলাম। সেখানে কি ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল তা আপনারা দেখেছেন। আমি সেদিন ওখানে ছিলাম। গ্রেনেড হামলার পর আমাদের ওপর পুলিশের পেটোয়া বাহিনী যেভাবে নির্যাতন করেছিল, তা সত্যিই বেদনার। বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বারবার হামলা চালানো হয়েছে। আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি বারবার বেঁচে গেছেন এই দেশের মাটি ও মানুষের উন্নয়নের জন্য।