ড. বীরেন শিকদার বলেন, আমি আমার বক্তব্যের প্রথমেই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যে মহামানবের অবদানে আজ আমারা লাল সবুজের পতাকা নিয়ে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করা দাড়িয়ে আছি, স্মরণ করছি তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের। আরও স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতাকে। এছাড়া ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত আইভি রহমান সহ ২৩ জনকেও গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি। আজকের আলোচ্য বিষয় ৭৪এ জননেত্রী। এই সেপ্টেম্বর মাসে আমাদের অত্যন্ত প্রিয় মুখ, আমাদের শ্রদ্ধাভাজন এবং আমাদের প্রিয় নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা জন্ম গ্রহণ করেছিলেন টুঙ্গিপাড়ায়। আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে, ভোরের পাতা আজ অত্যন্ত জনপ্রিয়ভাবে দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে এবং দর্শক নন্দিত হয়েছে। এই অনুষ্ঠানটি দেশে-বিদেশে প্রচুর দর্শকশ্রোতা এই অনুষ্ঠানটি উপভোগ করে থাকেন। এই জন্য আমি ভোরের পাতা কর্তৃপক্ষের কাছে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বাঙালি জাতি হিসেবে আমরা অত্যন্ত সৌভাগ্যবান যে আমরা জাতি হিসেবে এক মহামানব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পেয়েছিলাম যার জন্য আমরা বর্তমানে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছি। আমাদের জন্য খুবই দুর্ভাগ্য যে, সে ৭৫ সালে ১৫ই আগস্টে একটা দুঃখজনক ঘটনায় তাকে আমরা হারিয়েছিলাম। এদেশের কিছু কুচক্রীরা, কিছু বিপদ্গামি সেনা সদস্য এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কারণে আমরা সেদিন এই মহা মানবকে হারিয়েছিলাম। সেদিন সৌভাগ্যক্রমে আমাদের জাতির জনকের কন্যা, আমাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা সহ তার ছোট বোন শেখ রেহানা কাকতালীয় ভাবে বেচে যান। এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার মাত্র ২১দিন আগে তিনি তার স্বামীর সঙ্গে এবং শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে জার্মানিতে গিয়েছিলেন। সেদিন তিনি বিদেশে থাকায় আজ বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে সেই স্বাধীনতার চেতনাকে বুকে ধারণ করে বাংলাদেশকে উন্নয়নের সারীতে ধরে রাখতে পেরেছেন। স্বাধীনতার মূল মন্ত্রে আমরা যে উদ্দেশ্যে দেশকে স্বাধীন করেছিলাম, দেশকে সেই ধারাবাহিকতায় ধরে রাখতে পেরেছেন আমাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা। এই যে আমরা আজ ভোরের পাতার যে সংলাপ করছি, মুক্তভাবে কথা বলতে পারছি এটা কোনভাবেই সম্ভব হতো না, আজকের এই বাংলাদেশ কিন্তু এই অভয়বে থাকতে পারতো না যদি সেদিন শেখ হাসিনা বেচে না থাকতেন। এই বাংলাদেশ অবশ্যই দ্বিতীয় পাকিস্তানে পরিণীত হত কারণ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যে কাজ গুলো শুরু করেছিলেন সেই কাজ গুলো যদি পূর্ণাঙ্গ ভাবে সফল হতো তাহলে আজকের এই বাংলাদেশকে আমরা পেতাম না। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সেদিন বুকে সাহস নিয়ে ১৯৮১ সালে আমাদের দল আওয়ামী লীগের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। আমি অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, তিনি সেদিন বুকে সাহস নিয়ে দলকে সুসংগঠিত করেছিলেন, এটি বঙ্গবন্ধুর কন্যা বলেই সম্ভব হয়েছিল তখন। আমি এখানে উপস্থিত অতিথি সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলতে চায়, একটি মানুষ যে তার পরিবারের সব সদস্যকে হারিয়েছেন; একটি মাত্র বোন ছাড়া আর কেউ জীবিত নেই সেই পরিবারে। এই অবস্থায় দাড়িয়ে, কার এমন মানসিক বল থাকতে পারে যে, সে সেই দেশে আবার ফিরে এসে সেই দলের নেতৃত্ব দিবে? যে দলের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে, এই দেশের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে পুরো পরিবার শাহাদাৎ বরণ করেছিলেন। একমাত্র বঙ্গবন্ধুর কন্যা বলেই, বঙ্গবন্ধুর রক্ত শেখ হাসিনার দেহে প্রবাহমান আছে বলেই তিনি তার পিতার উদ্দেশ্যকে সফল করতেই সৎ সাহস নিয়ে সেদিন দেশে ফিরে এসে এই দলের হাল ধরেছিলেন, যার ফল বর্তমানে আমরা পাচ্ছি।