প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২০, ১০:২৩ এএম | অনলাইন সংস্করণ
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে গুলি চালিয়ে ৫১ জনকে হত্যা করার দায়ে ব্রেন্টন টারান্টকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ক্রাইস্টচার্চ সর্বোচ্চ আদালত। তাকে সন্ত্রাসী, অমানবিক এবং গণহত্যাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। খবর নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের।
অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ব্রেন্টনের বিরুদ্ধে ৫১ জনকে হত্যা, ৪০ জনকে হত্যাচেষ্টা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে। গত সোমবার চার দিনব্যাপী সাজার শুনানি শুরু হয়।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কোনোভাবেই জেল থেকে মুক্ত হতে পারবেন না তিনি। এছাড়া কোনো ধরনের প্যারোলে জামিন দেয়া হবে না তাকে।
নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কাউকে এমন কঠোর সাজা দেয়া হলো।
রায়ের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো-
- কোনোভাবেই জেল থেকে বের হতে পারবেন না ব্রেন্টন।
- এমন রায়ের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ জানাননি তিনি।
- যদিও এর আগে ব্রেন্টন দাবি করেছিলেন তিনি বর্ণবাদী নন।
- ব্রেন্টন বলেছিলেন, তার রাজনৈতিক ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি ততটা বাস্তব ছিল না। তিনি নিজেকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন মনে করতেন এবং সমাজের ক্ষতি করতে চেয়েছিলেন।
- মসজিদে হামলা যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছিল তা তিনি স্বীকার করেছেন।
২০১৯ সালের ১৫ মার্চ ওই হামলা চালানোর সময় মাথার হেলমেটে ক্যামেরা লাগিয়ে ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করেছিলেন ব্রেন্টন। প্রথমে আল নুর মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের ওপর গুলি শুরু করেন তিনি। তারপর এই মসজিদ থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে লিনউড মসজিদের উদ্দেশে গাড়ি চালান। সেখানেও মুসল্লিদের ওপর অতর্কিতে গুলি করেন ব্রেন্টন।
এই হামলা বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। হামলার পর দ্রুত অস্ত্র আইনে পরিবর্তন আনে নিউজিল্যান্ড। দেশটির সরকার দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রশংসিত হয়।
এর আগে পুলিশকে ব্রেন্টন জানিয়েছিলেন, হামলার দিন আরও মানুষকে হত্যা করার ইচ্ছা ছিল ট্যারেন্টের। ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদ পুড়িয়ে দেওয়ার ইচ্ছাও ছিল তার। এছাড়া ক্রাইস্টচার্চে হামলার আগে আরও একটি মসজিদে হামলার পরিকল্পনা করেছিল এই সন্ত্রাসী।
ব্রেন্টন ট্যারান্ট-এর সাজা ঘোষণার সময় হামলায় বেঁচে যাওয়া এবং ভুক্তভোগীদের স্বজনরা আদালতে তার সামনেই উপস্থিত ছিলেন। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ নিউজিল্যান্ডে মৃত্যুদণ্ডের বিধান না থাকায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।