প্রকাশ: বুধবার, ২৬ আগস্ট, ২০২০, ৯:৪১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
গাজীপুরের কালীগঞ্জে সাবেক এক চেয়ারম্যান পুত্র জামিল ওয়াহেদ মুহিদ মানবিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। তিনি উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের প্রয়াত চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেনের ছেলে। মুহিদ ওই ইউনিয়নের বড়গাও (উত্তর পাড়া) গ্রামের বুরুজ মিয়ার শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলে জয়নাল আবেদীনকে (৩১) স্বাভাবিক জীবন যাবনের জন্য একটি হুইল চেয়ার উপহার দিলেন। পাশাপাশি কর্ম অক্ষম জয়নালের একমাত্র কন্যা সন্তানের লেখাপড়ার দায়িত্বও নিলেন তিনি।
জানা গেছে, শারীরিক প্রতিবন্ধী জয়নাল আবেদীন স্থানীয়ভাবে লিচুর ব্যবসা করতেন। কিন্তু বছর খানেক আগে গাছ থেকে পড়ে তার কোমড়ের হাড় ভেঙ্গে যায়। নিজের যা সহায় সম্ভল ছিল তা দিয়ে চিকিৎসা করালেও স্বাভাবিক চলাফেরার ক্ষমতা হারান। পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম মানুষ হওয়ায় পুরো পরিবারই এখন অন্ধকারে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে যেখানে পরিবার চলা কষ্টসাধ্য ব্যাপার, সেখানে একটি হুইল চেয়ার কেনার স্বপ্ন ছিল তার কাছে আকাশ কুসুম ভাবনা। কিন্তু অবশেষে ত্রাতা হয়ে এলেন সাবেক চেয়ারম্যান পুত্র, বাংলাদেশ ইয়াং মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের (বাইমা) সভাপতি জামিল ওয়াহেদ মুহিদ।
জয়নাল আবেদীন বলেন, একটি হুইল চেয়ারের জন্য কষ্ট করেছি দীর্ঘদিন। যিনি সহযোগিতায় এগিয়ে আসলেন তাকে আমার দরিদ্র পরিবারের পক্ষ থেকে অনেক অনেক দোয়া। ৭দিন পর হুইল চেয়ার পাব এই কথা শুনে ভয়ে ছিলাম আসলে হুইল চেয়ারটি পাব কিনা? কিন্তু পরে বুঝলাম চেয়ারম্যান পুত্র জামিল ওয়াহেদ মুহিদ সত্যি এক মানবিক মানুষ। তাছাড়া তিনি আমার সন্তানের লেখাপড়ার দায়িত্বও নিয়েছেন তিনি।
জামিল ওয়াহেদ মুহিদ বলেন, সম্প্রতি মোক্তারপুর ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ড আ’লীগ আয়োজিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে সাওরাইদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দোয়া মাহফিল ও গণভোজ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাই। আসার পথে অনুষ্ঠানস্থলের কিছু দূরে একটি গাছের নিচে জয়নালকে বসে থাকতে দেখি। আগ্রহ নিয়ে ছুটে যাই তার কাছে। পরে জয়নালের মুখে বিস্তারিত শুনি। স্থানীয়দের অনুরোধ ছিল তাকে একটা হুইল চেয়ার দেয়ার। আমি ৭ দিনের মধ্যে একটি হুইল চেয়ার দেওয়ার প্রতিশ্রæতি দেই। পরে প্রতিশ্রæতি ৪ দিনের মধ্যে জয়নালের জন্য হুইল চেয়ার নিয়ে যাই এবং সেটি তার হাতে তুলে দেই। হুইল চেয়ারটি পাওয়ার পর জয়নালের মাঝে অন্যরকম প্রতিচ্ছবি লক্ষ্য করেছি। যা সত্যি যে কোন মানুষকে তৃপ্ত করে। জয়নালের গল্প শুনে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়া তার ৭ বছরের কন্যা শিশুটিরও লেখাপড়ার দায়িত্ব নেই। এছাড়া তৎক্ষনিকভাবে জয়নালকে কিছু আর্থিক সহযোগীতা করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা কত টাকা, কত পয়সা অযথা কাজে নষ্ট করি। সেই নষ্ট করা টাকা-পয়সার কিছু সঞ্চয় যদি অসহায় মানুষের কাজে লাগাই তাহলে অল্পতেই ওই মানুষগুলোর মুখে হাসি দেখা সম্ভব।