প্রকাশ: শনিবার, ১ আগস্ট, ২০২০, ১১:২৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
একদিকে করোনাভাইরাস, আরেকদিকে দেশের বড় একটি অংশ বন্যার পানির নিচে। এ রকম একটি বিষণ্ণ পরিবেশেই যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করেছে মুসলিম সম্প্রদায়।
করোনভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে সারাদেশে ঈদের নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। বায়তুল মোকাররমে সকাল ৭টায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। পর্যায়ক্রমে মোট পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় মসজিদে। মুসল্লিদের মুখে মুকে মাস্ক ছিল। বসেছিলেন শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে। কোলাকুলির দৃশ্যও দেখা যায়নি। প্রত্যেকটি জামাতেই দক্ষিণ গেট দিয়ে মুসল্লিদের সারি ধরে আর্চওয়ে দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
উদ্ভূত করোনা পরিস্থিতির কারণে ঈদুল ফিতরের মতো এবারও জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ঈদের নামাজ আদায় করেছেন বঙ্গভবনে। সেখানেও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ আদায় করা হয়।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি তার পরিবারের সদস্য এবং কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে ঈদের নামাজ আদায় করেন। ওই ঈদ জামাতে ইমামতি করেন বঙ্গভবন জামে মসজিদের পেশ ইমাম মুফতী মাওলানা সাইফুল কবীর।
বায়তুল মোকাররমে প্রথম জামাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ধর্ম সচিব মো. নূরুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. ইমদাদুল হক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ, ডিএসসিসি সচিব আকরামুজ্জামান নামাজ আদায় করেন।
গত ১৪ জুলাই ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশনায় ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে ঈদের নামাজের জামাত কাছের মসজিদে আদায় করার জন্য অনুরোধ করা হয়। করোনার সংক্রমণ রোধে অজু করার স্থানে সাবান অথবা হ্যান্ডস্যানিটাইজার রাখার বাধ্যবাধকতার পাশাপাশি মসজিদের প্রবেশপথে সাবান অথবা হ্যান্ডস্যানিটাইজার রাখার নির্দেশ ছিল। মসজিদে প্রবেশের সময় মাস্ক ব্যবহারও বাধ্যতামূলক ছিল।
এদিকে, ঈদের জামাত শেষে মহান আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় পশু কোরবানি করেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। প্রায় চার হাজার বছর আগে আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি লাভের জন্য হজরত ইব্রাহিম (আ.) প্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের কুদরতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়। হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে বিশ্বব্যাপী মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহপাকের অনুগ্রহ লাভের আশায় পশু কোরবানি করে থাকে।